কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজমে জন্ম থেকেই শিশুর থাইরয়েড গ্রন্থি কাজ করতে পারে না। যদি এর চিকিৎসা না করা হয় তবে শিশুর মেধা বিকাশ, উচ্চতা ও নিউরোলজিক্যাল বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। সারা বিশ্বে প্রতি তিন হাজার শিশুর মধ্যে একজন থাইরয়েড সমস্যা নিয়ে জন্মায়। শিশুর ব্রেনের গঠন, মেধা বিকাশ এবং বেড়ে ওঠায় থাইরয়েড হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জন্মের পরপরই কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই এই রোগ নির্ণয় করা যায় এবং স্বাভাবিক মেধা বিকাশ ও বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করা যায়।
কী কী লক্ষণ প্রকাশ পাবে
জন্মের পরপরই লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে অথবা কিছু মাস পার হওয়ার পর প্রকাশ পেতে পারে—
* পায়খানা কষা হওয়া
* মুখ ফোলা ফোলা ভাব
* কান্নার স্বর ভারী হওয়া
* জন্ডিস
* জিহ্বা বড় হয়ে যাওয়া
* নাভির পাশে ফোলা (হার্নিয়া)
* খাবারদাবার কম খাওয়া
* খেলাধুলা কম করা
* শিশুর উচ্চতা কম হওয়া
কারণ
* জন্মগতভাবে থাইরয়েড গ্রন্থির অনুপস্থিতি
* থাইরয়েড গ্রন্থি স্বাভাবিক স্থানে না থেকে অন্য জায়গায় থাকা
* থাইরয়েড গ্রন্থির বিকাশ না হওয়া
* গর্ভাবস্থায় মায়ের আয়োডিনের অভাব
* মা থাইরয়েডের কোনো ওষুধ খেলে
* মায়ের অটোইমিউন থাইরয়েড রোগ থাকলে
রোগ নির্ণয়
জন্মের পর রক্তে থাইরয়েড হরমোনের পরীক্ষা করে এটি নির্ণয় করা যায়।
চিকিৎসা
থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি বাইরে থেকে থাইরয়েড হরমোন রিপ্লেসমেন্ট দিয়ে পূরণ করা যায়। লেভোথাইরক্সিন জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। এক থেকে তিন মাস পর পর ফলোআপ করে ওষুধের ডোজ ঠিক করা হয়।
রোগ নির্ণয়ের পর যথাযথভাবে চিকিৎসা নিলে শিশু অন্য শিশুদের মতোই স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠবে। তবে চিকিৎসা না করলে শিশুর বেড়ে ওঠা, উচ্চতা, মেধা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
হরমোন ও ডায়াবেটিক বিশেষজ্ঞ
ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মালিবাগ, ঢাকা।