থাইরয়েডের রোগীরা সুস্থ থাকতে যা খাবেন

0
202
Spread the love

গলার সামনে অবস্থিত প্রজাপতির মতো ছোট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্ল্যান্ড হলো থাইরয়েড। যা থেকে নিঃসৃত হয় ট্রাই আরোজে থাইরনিন এবং থাইরক্সিন হরমোন। এ হরমোনের কাজ শর্করা ও চর্বির বিপাক ক্রিয়াকে সাহায্য করা।

থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমে যাওয়াকে বলে হাইপোথাইরয়েডিজম। আর অতিরিক্ত হরমোন নিঃসৃত হওয়াকে বলে হাইপার থাইরয়েডিজম। বর্তমানে থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা বেড়েই চলেছে, বিশেষ করে নারীদের মধ্যে। থাইরয়েড জটিলতার কারণ হিসাবে অটোইমিউন বা দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ত্রুটিকে দায়ী করা হয়। কিছু কিছু খাবার থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। যেমন-আয়োডিন, ভিটামিন সি, জিঙ্ক, থায়ামিন, ভিটামিন বি২ রাইবোফ্লাভিন, নায়াসিন, ভিটামিন বি৬ বা পাইরডক্সিন এবং সেলেনিয়াম।

আয়োডিন পাওয়া যাবে-সামুদ্রিক মাছ, স্পিরিলুনা, দুধ, ডিম, চিংড়ি মাছ ও আয়োডিনযুক্ত লবণ থেকে। ভিটামিন সি পেতে হলে আমলকী, পেয়ারা, লেবু, কাঁচামরিচ, কমলা, আলু ইত্যাদি খেতে হবে। জিঙ্ক পাবেন গরুর মাংস, কলিজা, মুরগির মাংস, কুমড়ার বীজ, সরিষা ও ডিম থেকে।

ভিটামিন বি১, বা থায়ামিন পাওয়া যাবে ভুসিসহ আটার রুটি, লাল চাল, ওটস, চিনাবাদাম, ইত্যাদিতে। ভিটামিন বি২ বা রাইবোফ্লাভিন আছে দুধ, দই ও দুধজাত খাদ্যতে।
নায়াসিন লাল চাল, ডালিম, মুরগির মাংস, টুনামাছ ইত্যাদিতে আছে। ভিটামিন বি৬ বা পাইরডক্সিন আছে কলিজা, লাল আটা ও লাল চাল, ওটস, আখরোট, পাকাকলা, আম, মিষ্টি আলু থেকে।

মেলেনিয়াম পাওয়া যাবে মাশরুম, ডিম, রসুন, পেঁয়াজ, মাছ, মুরগির মাংস, টমেটো টুনামাছ, ব্রকলি, দুধ ও দুধজাত খাদ্য থেকে। কিছু কিছু খাবার থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে। যেমন-সয়াবিন, বাঁধাকপি, পালংশাক, ফুলকপি, মুলা, পান, সিগারেট, এলকোহল, অতিরিক্ত আঁশযুক্ত খাবার। এ খাবারগুলো ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

হাইপোথাইরয়েডের রোগীদের দ্রুত ওজন বাড়াতে থাকে। বুক ধড়ফড় করে, হঠাৎ হঠাৎ গরম লাগে, অস্থিরতা অনুভব হয়। এদিকে হাইপার থাইরয়েডের রোগীদের ওজন কমে যায়, রক্তের চাপ বাড়ে, ডায়রিয়া ও স্মরণশক্তি কমে যায়।

দুই ধরনের রোগীরই সুষম খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এদের প্রচুর শাকসবজি, ফলমূল খেতে হবে। মাছ-মাংস-ডিম-ননীবিহীন দুধ চাহিদামতো খেতে হবে। মেটাবলিক রেট বেড়ে যায় বলে চা-কফি-চিনি বাদ দিতে হবে। তবে গ্রিন টি পান করা যায়। নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম করা উচিত।

লেখক :  আখতারুন নাহার আলো  

চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে