রক্তচাপের সমস্যা আর শুধু বয়স্কদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আজকাল কম বয়সীরাও এই সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এর পেছনে রয়েছে রাতজাগা, অনিয়মিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও নেশাজা্তীয় দ্রব্যের ব্যবহার। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে, সবসময় ওষুধ কাছে রাখা ও নিয়মিত রক্তচাপ মাপা জরুরি।
তবে যদি হঠাৎ রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং তখন ওষুধ না থাকে, তখন কিছু প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করে বিপদ সাময়িকভাবে সামলানো সম্ভব। হঠাৎ রক্তচাপ বেড়ে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে। তাই যদি বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা, বমিভাব, চোখের সামনে অন্ধকার দেখার মতো উপসর্গ দেখা দেয়, সঙ্গে হাত-পায়ের পেশিতে টান ধরে—তাহলে সতর্ক হওয়া জরুরি। চলুন, জেনে নিই ওষুধ ছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু কার্যকর উপায়।
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস
শান্তভাবে বসে গভীরভাবে শ্বাস নিন, কয়েক সেকেন্ড ধরে রেখে ধীরে ধীরে ছাড়ুন। এভাবে ১০–২০ সেকেন্ড ধরে ৩ সেট অনুশীলন করলে শরীরের প্যারাসিম্প্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হয়। ফলে অস্থিরতা ও উত্তেজনা কমে, হৃদস্পন্দনও নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা
মুখ, ঘাড় ও পায়ের পাতায় ঠাণ্ডা পানি দিলে শরীর ঠাণ্ডা হয় এবং রক্তচাপ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
অস্বস্তি লাগতে শুরু করলেই মাথা, ঘাড় ও পা ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন। এতে রক্তনালিতে চাপ কমবে এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
লেবু পানি
পটাশিয়ামসমৃদ্ধ লেবু পানি (চিনি ও লবণ ছাড়া) উচ্চ রক্তচাপে খুব উপকারী। এক গ্লাস পানিতে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে শরীরের পানি ও খনিজের ঘাটতি পূরণ হয়, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। লেবুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট দেহের শক্তি বাড়ায়।
ধীরে ধীরে পানি পান করুন
রক্তচাপ বেড়ে গেলে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে খান। এতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হবে। মাথা ঘোরা বা ঘাম হলে তৎক্ষণাৎ বসে পড়ে জল খান। তবে ভুলেও কোমল পানীয় বা সোডা খাবেন না।
তুলসী ও রসুন
রসুনে থাকা অ্যালিসিন রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে এবং জমাট বাঁধা রোধ করে। তুলসীপাতার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও প্রদাহনাশক গুণ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কয়েকটি তুলসীপাতা বা এক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
এই উপায়গুলো রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে গেলে তা সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। তবে নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়া এবং জীবনযাপন পরিবর্তন করা প্রয়োজন।