Urinary Incontinence/প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতার কারন ও প্রতিকার

0
891
Urinary Incontinence
Spread the love

মূত্রথলী বা প্রস্রাবের উপর নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ার ফলে অনিচ্ছাকৃত প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার সমস্যাকে ইউরিনারি ইনকনটিনেন্স/ প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা বলা হয়। এটি সব বয়সীদেরই হতে পারে, তবে মূলত বয়স্কদের এবং প্রসব পরবর্তীকালে মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। তবে বয়স, অন্যান্য রোগ ও কখনও কখন বড় কোন সার্জারির পর এটি বেশি দেখতে পাওয়া যায়৷

Urinary Incontinence (প্রস্রাবে অসংযমতা) বা প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা লক্ষণঃ

এই সমস্যাটি প্রধান কয়েকটি লক্ষণ হলো-

★ ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া
★ বিছানায় প্রস্রাব হয়ে যাওয়া
★ তলপেটে চাপের অনুভূতি
★ জোরে হাসি বা কাশির সময় প্রস্রাব বেরিয়ে
আসা
★ ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হওয়া
★ সম্পূর্ণভাবে প্রস্রাব না হওয়ার অনুভূতি
★ প্রস্রাবের সময় ব্যথা
★ প্রস্রাব গোলাপী, লাল বা অস্বাভাবিক
★ প্রস্রাবে দুর্গন্ধ
★ পেটেব্যথা বা কোমরে ব্যথা
★ নামাজরত অবস্থায় ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব পড়া
★ কোন চাপের মধ্যে থাকলে হঠাৎ করে প্রস্রাব
বের হয়ে যাওয়া। এটা ঘটে সাধারণত-
* কোন কিছু নিচু থেকে তুলতে গেলে,
* শারিরীক ব্যায়াম করার সময়ে
* হাসলে
* হাঁচি দিলে
* কাশি দিলে

Urinary Incontinence বা প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা কারণগুলি কী কীঃ

★ মূত্রথলির আস্তরণের প্রদাহ
★ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন, হরমোনের পরিবর্তন, ইউরিনারী ট্র‍্যাক্ট ইনফেকশন(UTI)
★ অধিক বয়সে গর্ভধারণ করলে
★ সময়ের পূর্বে যোনি প্রসব হলে
★ স্ট্রোক করার ফলে
★ প্রস্টেট জড়িত থাকলে বা বিবর্ধিত প্রোস্টেট থাকলে
★ কিডনি বা মূত্রথলিতে পাথর হলে
★ কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে
★ টিউমার থাকলে যেটি মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টি করে
★ নিয়মিত মদ্যপান করলে
★ মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হলে
★ দীর্ঘদিন উত্তেজনা প্রশমনের ওষুধ নিলে
★ দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ গ্রহণ করলে
★ পেশী শিথিল করার ওষুধ নিলে
★ ভারী বস্তু বহন করলে
★ মাল্টিপল সক্লেরোসিস জাতীয় স্নায়ুরোগের ক্ষেত্রে
★ অস্ত্রোপচার বা আঘাতের ফলে মূত্রথলি নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুগুলির ক্ষতি হলে
★ ডিপ্রেশন বা উদ্বেগ (এংজাইটি) থাকলে
★ দুর্বল ব্লাডারের কারনে
★ মূত্রাশয় ক্যান্সার / পাথর হলে
★ স্নায়বিক রোগ থাকলে
★ ডায়াবেটিস থাকলে
★ তীব্র মূত্রনালীর সংক্রমন হলে
★ মাত্রাতিরিক্ত ওজন থাকলে
★ পারিবারিক ইতিহাস থাকলে

চিকিৎসা না করলে প্রস্রাব ধারন না রাখতে পারার এই রোগটির ফলে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে তা হলোঃ

★ মানসিক সমস্যা বা বিষণ্নতা
★ উদ্বেগ
★ ঘুম ব্যাঘাত
★ যৌন সমস্যা
★ লাল লাল ফুসকুড়ি
★ ঘা
★ মূত্রনালীর সংক্রমণ ত্বকের সমস্যা
★ দৈনন্দিন কাজকর্মে পরিবর্তন
★ কর্ম জীবনে পরিবর্তন
★ ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব

প্রস্রাবে ধারনে অক্ষমতা রোগের চিকিৎসাঃ

১. আপনার লক্ষণ যদি উপরে উল্লিখিতগুলোর মত হয় তাহলে একজন ইউরোলজিস্ট, এর পরামর্শ ও চিকিৎসা গ্রহন করুন

২. ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাঃ একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করুন। যেমনঃ
– পেলেভিক ফ্লোর পেশী এবং প্রস্রাব স্ফটিক শক্তিশালী করা

– ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেটরের মাধ্যমে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশি শক্তিশালী করে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এ সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব।

– কেগেল এক্সারসাইজ যা এই সমস্যায় সাহায্য করতে পারে।
– গর্ভাবস্থায় সময় পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করা।

সেল্ফ/ নিজস্ব কিছু ব্যায়ামঃ

পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজঃ

— প্রথমে একটি চেয়ারে বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রেখে একটু সামনের দিকে ঝুঁকুন। এবার প্রস্রাব ধরে রাখার জন্য দরকারি মাংসপেশিগুলো সংকুচিত করুন। এই অবস্থায় ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকুন। এবার সংকুচিত মাংসপেশি ছেড়ে দিন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৩ বার করুন।

— একটি শক্ত বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার দুই হাঁটুর ফাঁকে একটি ফুটবল বা বালিশ রেখে এতে চাপ দিন এবং ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন আর ছাড়ুন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৪ বার করুন।

ব্রিজিং: সোজা চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার কোমর ওপরের দিকে ওঠান, ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছাড়ুন। এটিও দিনে ৪ বেলা এবং প্রতিবার ১০ থেকে ১৫ বার করুন।

— ব্লাডার ট্রেনিংঃ প্রস্রাবের বেগ শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর প্রস্রাব করার অভ্যাস করা।

— ডাবল ভোয়েডিংঃ প্রস্রাব করার পরও কিছু সময় বসে থেকে অপেক্ষা করে আবার প্রস্রাবের চেষ্টা করা। এ ছাড়া প্রস্রাবের বেগ না এলেও ২ থেকে ৪ ঘণ্টা পরপর প্রস্রাবের চেষ্টা করা।

প্রতিরোধঃ

★ স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন
★ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
★ ধূমপান ত্যাগ করুন
★ সুস্থ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
★ আঁশযুক্ত খাবার বেশি খান
★ সমস্যা কমাতে নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন
★ নিয়মিত ব্যায়াম করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে