অস্টিওআর্থ্রাইটিস অব নি বা হাঁটুতে ব্যথা

0
159
Spread the love

‘অস্টিওআর্থ্রাইটিস’ অস্থিসন্ধির ক্ষয়জনিত রোগ। আমাদের অস্থিসন্ধি বা জয়েন্ট এক ধরনের নরম কাভার দ্বারা আবৃত থাকে, যাকে মেডিক্যাল ভাষায় কারটিলেজ বলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারের ফলে কারটিলেজগুলো ক্ষয় হতে থাকে, জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির মার্জিন অমসৃণ হয়ে যায়, জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির গ্যাপ কমে যায়, যার ফলে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধি নাড়াচাড়া করতে ব্যথা অনুভূত হয়।

‘অস্টিওআর্থ্রাইটিস’ বিভিন্ন জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধিতে হতে পারে, তার মধ্যে কবজি বা রিস্ট জয়েন্ট, হিপ জয়েন্ট, হাঁটু বা নি জয়েন্ট, সারভাইক্যাল স্পাইন, লাম্বার স্পাইন ইত্যাদি।

কেন হয়?

হাঁটুতে ‘অস্টিওআর্থ্রাইটিস’ বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন বয়সজনিত অস্থিসন্ধির ক্ষয়, আঘাতজনিত কারণ বা জয়েন্ট ইনজুরি, অধিক ওজন, মাংসপেশির দুর্বলতা, বংশগত, অস্থিসন্ধির অস্বাভাবিকতা, দুই অস্থির মধ্যখানের সাইনভিয়াল ফ্লুইড শুকিয়ে গেলে, যারা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে কাজ করেন, বেশি বেশি সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা বা অমসৃণ জায়গায় হাঁটাচলা করেন তারা সাধারণত এই সমস্যায় ভোগেন। ৫০-এর অধিক বয়সের মানুষের বেশি হয়। পুরুষের তুলনায় মহিলারা বেশি ভোগেন।

লক্ষণ

দীর্ঘমেয়াদি রোগ, এটি বয়স ও কাজের ওপর নির্ভর করে ধীরে ধীরে হতে থাকে। হাঁটুতে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া, হাঁটার সময় ব্যথা আবার বিশ্রামে কমা, বসা থেকে উঠতে ব্যথা পাওয়া, সিঁড়ি বা উঁচু-নিচুতে হাঁটাচলা করতে ব্যথা লাগা, নামাজের মতো বসতে না পারা, জয়েন্টের আকৃতি পরিবর্তন হয়ে বাঁকা হওয়া, জয়েন্টের মুভমেন্ট কমে যায়, হাঁটু ভাঁজ করার সময় ঘর্ষণের শব্দ হওয়া।

চিকিৎসা

অস্থিসন্ধির ক্ষয়জনিত রোগে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব না। কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যথা নিরাময় ও অস্থিসন্ধির মুভমেন্ট স্বাভাবিক রাখা যায়। তাতে রোগীর স্বাভাবিক জীবনযাপনে কষ্ট থাকে না।

কনজারভেটিভ : মেডিকেশন বা ওষুধ, এনএসআইডিএস, ডায়েটরি সাপ্লিমেন্ট যেমন গ্লুকোসামিন হাইড্রোক্লোরাইড, কন্ড্রোটিন, সালফেট, ক্যালসিয়াম, হ্যালুরনিক অ্যাসিড ইত্যাদি ।

ফিজিওথেরাপি : সবচেয়ে আধুনিক ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াবিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি। অস্টিওআর্থ্রাইটিস অব নি জয়েন্ট চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসক বিভিন্ন রকম মেথড ব্যবহার করে থাকেন, তার মধ্য উল্লেখযোগ্য ম্যানুপুলেশন থেরাপি, আলট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্ট-ওয়েভ ডায়াথারমি, ইন্টার ফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, লেজার থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ, স্ট্যাটিক সাইক্লিং ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থেকে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করা যায়।

লেখক:

 ডা. এম ইয়াছিন আলী

চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে