চলমান করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন গৃহবন্দি হয়ে মানুষ এখন নাজেহাল। তাই একটু সুযোগ পেলেই তারা বাড়ির বাইরে যেতে চাইছেন।
এই অবস্থায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আর বৃষ্টি হলে ভেজার প্রবণতা শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার মধ্যেই রয়েছে। আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখলেই মানুষের মনে আনন্দের তরঙ্গ বয়ে যায়। তরে করোনা মহামারির মধ্যে এই ইয়াসের বৃষ্টিতে না ভিজতেই পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তারা বলছেন, কোনোভাবেই ইয়াসের বৃষ্টিতে ভেজা যাবে না। আবেগকে সংযত করতে হবে। তা না হলে বড় রকমের বিপদ ঘটে যেতে পারে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মোট সাত ধরনের ভাইরাসের কারণে আমাদের সর্দি-জ্বর হয়ে থাকে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, ঝড়-বৃষ্টির সময় যদি একান্তই বাড়ি থেকে বের হতে হয়, ছাতা নিয়ে বেরোন। আর তা না করতে পারলে বৃষ্টি না থামা পর্যন্ত বাইরে বার হবেন না। যদি মাঝ রাস্তায় বৃষ্টি নামে তাহলে কোনো ছাউনির নিচে গিয়ে আশ্রয় নিন। কোনোভাবেই করোনা আবহে বৃষ্টিতে ভিজবেন না।
কেন বৃষ্টি ভিজতে ভেজা যাবে না, এমন প্রশ্নে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, ‘বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর হতে পারে। এখন করোনা সংক্রমণ চলছে। কাজেই আকাশে বৃষ্টি দেখলেই মনটা যেন নেচে না ওঠে। ভুলেও বৃষ্টিতে আচমকা ভিজতে যাবেন না। মনে রাখবেন এখনো করোনা সংক্রমণ পুরোদমে চলছে। এখনো হাসপাতালে বেড পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো ভ্যাকসিনের ঘাটতি রয়েছে। তাই মনের আনন্দ নিরসনের জন্য বৃষ্টি ভিজে নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনতে যাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন সামান্য জ্বর আপনার জীবনে বড় রকমের ঝুঁকি ডেকে নিয়ে আসতে পারে। এই বৃষ্টি ভিজে যে জ্বর হয় সেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস কিংবা এন্টেরো ভাইরাস থেকে হয়।’
চিকিৎসকরা শিশুদেরও এই বৃষ্টি ভেজা থেকে বিরত থাকতে বলছেন। শিশু চিকিৎসক নির্মাল্য চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘সাধারণ বৃষ্টিতে ভিজে শিশুদের যে জ্বর আসে তাতে শিশুদের ফুসফুসের উপরিভাগে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে মিউকাস মেমব্রেনটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এই শক্তিশালী মিউকাস মেমব্রেন অনেক জীবাণু থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সক্ষম। কিন্তু মিউকাস মেমব্রেন দুর্বল হয়ে গেলে বাইরের জীবাণুকে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করা আটকাতে পারে না। এই সুযোগে আঘাত হানতেই পারে করোনা।’