কোভিড টো হলো কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাত-পায়ের আঙুল ফুলে যাওয়া, চুলকানি বা আক্রান্ত স্থান লাল হয়ে যাওয়াকে বুঝায়। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির এই উপসর্গগুলো কেন দেখা দেয় তার কারণ খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর শরীর যখন ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে তখন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এগুলো দেখা দেয়।
গবেষকরা বলছেন, এই ফোলা ভাব বা বিবর্ণতার সঙ্গে ইমিউন সিস্টেমের কোন অংশটুকু সংশ্লিষ্ট তা তারা শনাক্ত করেছেন।ব্রিটিশ জার্নাল অব ডারমাটোলজিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের এই তথ্য লক্ষণগুলো কমাতে চিকিৎসায় সহায়তা করতে পারে। খবর বিবিসি অনলাইনের।
কোভিড টো কি?
যেকোনো বয়সের করোনা রোগীর এটা হতে পারে। তবে শিশু ও তরুণরাই সাধারণত বেশি আক্রান্ত হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে এটা ব্যথাহীন থাকে।কিন্তু র্যা শগুলো ফোলার সঙ্গে খুব ব্যথা ও চুলকাতে পারে।
সোফিয়া নামের ১৩ বছর বয়সী স্কটল্যান্ডের এক শিশু জানায়, এই বছরের শুরুতে তার যখন কোভিড টো হয়েছিল তখন সে হাঁটতে বা জুতা পরতে পারতো না। গ্রীষ্মকালে দীর্ঘ পথ যেতে সে হুইল চেয়ার ব্যবহার করেছে।
আক্রান্ত স্কিন সাধারণত পায়ের আঙুল (কখনো কখনো হাতের আঙুলেও হয়) লাল বা বেগুনি হয়ে যায়।কারও কারও ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্কিন ফুলে গিয়ে খুব ব্যথা করে। পুজও হতে পারে। কারও ক্ষেত্রে এটা কয়েক মাসব্যাপী হয়, কারও ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ।সাধারণত এই রোগীদের ক্ষেত্রে করোনার পরিচিত লক্ষণ বা উপসর্গ যেমন কাঁশি, জ্বর, ডায়রিয়া বা ঘ্রাণ শক্তি হারানোর মতো ঘটনা ঘটে না।
কেন কোভিড টো হয়?
স্কিন ও রক্তের পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে সর্বশেষ গবেষণায় ইমিউন সিস্টেমের দুটি অংশ কোভিড টো তৈরিতে ভূমিকা রাখে বলে বলা হয়েছে। উভয়ই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে। একটি হলো অ্যান্টিভাইরাল প্রোটিন যাকে টাইপ-১ ইন্টারফেরন বলা হয়। আরেকটি হলো এক ধরনের অ্যান্টিবডি যা ভুল করে ভাইরাসের সঙ্গে আক্রান্তের নিজের সেল (কোষ) এবং টিস্যুকেও আক্রমণ করে বসে।
ফ্রান্সের ইউনিভার্সিটি অব প্যারিসের গবেষকরা বলেছেন, সেলের আস্তরণগুলো তখন ছোট ব্লাড ভেসেল আক্রান্ত স্থানে ছড়িয়ে দেয়। ফলে ওই স্থান লাল রং ধারণ করে।
২০২০ সালের বসন্তে কোভিড টোয়ে আক্রান্ত হয়েছে সন্দেহে ৫০ জনকে নিয়ে গবেষকরা গবেষণা করেন। সঙ্গে আরও ১৩ জন ছিল যাদের একই উপসর্গ ছিল তবে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। কারণ করোনা শুরু হওয়ার আগেই তাদের এগুলো হয়েছিল।গবেষকদের আশা, তাদের এই ফাইন্ডিং রোগীদের অবস্থা বুঝা ও চিকিৎসায় আরও বেশি সহায়তা করবে।