সংকট থেকে নিতে হবে শিক্ষা
করোনা সংক্রমণের উচ্চঝুঁকিতে থাকা ৩১ জেলার মধ্যে ১৫টিতেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) নেই। ১০ মাস আগে প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি জেলা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এত দিনেও জেলা পর্যায়ে আইসিইউ ইউনিট তৈরি করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে করোনায় আক্রান্ত ৯০ হাজারের বেশি রোগী বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা প্রধানত টেলিমেডিসিনের ওপর নির্ভরশীল। তবে এসব রোগী স্বাস্থ্য অধিদফতরের মাধ্যমে কতটা কার্যকর সেবা পাচ্ছেন তার সুনির্দিষ্ট হিসাব অধিদফতরের কাছে নেই। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে সবার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার দরকার নেই। যাদের রক্তে দ্রবীভূত অক্সিজেন কমে যায়, সংক্রমণে যাঁদের ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার দরকার হয়। দেশের হাসপাতালগুলোয় আইসিইউর সংকট বাড়ছে। এতে কভিড-ননকভিড সব রোগীই পড়েছেন বিপাকে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হওয়ার তিন দিন পার না হতেই অনেক রোগীর শারীরিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুস। শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে রোগী। প্রয়োজন হচ্ছে হাই ফ্লো অক্সিজেন ও আইসিইউর। কিন্তু শয্যা সংকটে মিলছে না চিকিৎসা। এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তালিকাভুক্ত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মোট ৩০৫টি আইসিইউ বেডে রোগী ভর্তি আছেন ২৮৮ জন এবং বেড ফাঁকা রয়েছে মাত্র ১৭টি। সারা দেশের অন্য হাসপাতালগুলোয় আইসিইউ বেড রয়েছে ৬০০, তাতে রোগী ভর্তি আছেন ৪৪৫ জন এবং বাকি বেড ফাঁকা রয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের বিরাজমান দুর্বলতার পাশাপাশি করোনাকালে কিছু ত্রুটি দৃশ্যমান হয়ে দেখা দেয়। এর মধ্যে আছে প্রস্তুতি, সমন্বয়, নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে দুর্নীতি, নিম্নমানের সেবা এবং সেবার ক্ষেত্রে বৈষম্য। এ মহামারী দেখিয়ে দিয়েছে সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের সক্ষমতার ঘাটতি আছে। নিজেদের স্বার্থেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সবাইকে হতে হবে সচেতন।