বিশ্ব মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণজনিত কারণে দেশে মাতৃস্বাস্থ্যসেবার সব সূচকেই নিম্নমুখী। নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য মানসম্মত গর্ভকালীন সেবা (প্রসবপূর্ব), নিরাপদ প্রসব ব্যবস্থা, প্রসব পরবর্তী সেবা এবং পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ও সেবা প্রয়োজন হলেও করোনা সংক্রমণজনিত ঝুঁকির কারণে এ চিকিৎসা সুবিধাপ্রাপ্ত গর্ভবতী মায়ের সংখ্যা কমেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা তথ্য পদ্ধতির (এইচএমআইএস) জেলা স্বাস্থ্য তথ্য সফটওয়্যার-২ (ডিএইচআইএস২) এর ২০১৯, ২০২০ ও ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের (প্রথম কোয়ার্টার) প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেছিলেন এক লাখ ২২ হাজার ৪৩৮ জন। ২০২০ সালে এ সংখ্যা কমে হয় এক লাখ ১৮ হাজার ৫২৩ এবং ২০২১ সালে তা আরও কমে এক লাখ ১৫ হাজার ৯৬৩ জনে দাঁড়ায়।
২০১৯ সালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবকারী মায়ের সংখ্যা ছিল এক লাখ ১১ হাজার ৯২ জন। ২০২০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৮ হাজার ১৩৩ জন এবং ২০২১ সালে তা আরও কমে ৮৯ হাজার ৪১০ জনে দাঁড়ায়।
২০১৯ সালে একবার প্রসবপূর্ব চেকআপ সেবাগ্রহীতা গর্ভবতী মায়ের সংখ্যা ছিল চার লাখ ৩৩ হাজার ৯৪৬ জন। ২০২০ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় তিন লাখ ৭২ হাজার ১৫৯ জন এবং ২০২১ সালে তা আরও কমে তিন লাখ ১৪ হাজার ৩৩৭ জনে দাঁড়ায়।
২০১৯ সালে চারবার প্রসবপূর্ব চেকআপ সেবাগ্রহীতার সংখ্যা ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৯৫৭ জন।। ২০২০ সালে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় এক লাখ ৫৫ হাজার ৮০৬ জন এবং ২০২১ সালে তা কমে এক লাখ ১৮ হাজার ১৫৭ জনে দাঁড়ায়।
২০১৯ সালে একবার প্রসব পরবর্তী চেকআপ সেবাগ্রহীতার সংখ্যা ছিল দুই লাখ ২৮ হাজার ৩৭১ জন। ২০২০ সালে এ সংখ্যা কমে হয় এক লাখ ৯১ হাজার ৬২১ জন এবং ২০২১ সালে তা কমে এক লাখ ৮২ হাজার ১৯৪ জনে দাঁড়ায়।
ইউনিসেফের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিভিন্ন সেবাগ্রহণের ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে সন্তানসম্ভবা মায়েদের প্রথম প্রসবপূর্ব সেবা ২৫ শতাংশ, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থবার প্রসবপূর্ব সেবাগ্রহণের হার যথাক্রমে ১৩ শতাংশ, ৯ শতাংশ ও ৫ শতাংশ কমেছে। নরমাল ডেলিভারি ১৩ শতাংশ ও সিজারিয়ান ডেলিভারি ২৬ শতাংশ কমেছে।