করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা ক্রমান্বয়ে তীব্র হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। শুক্রবার দেশটিতে ৫৮ হাজার ৫০০ জন আক্রান্ত এবং ৯০০ জন মারা যায়, যা মধ্য আগস্টের পর সর্বোচ্চসংখ্যক সংক্রমণের দিন।
দেশটির ৯টি স্টেটে উদ্বেগজনকভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) উল্লেখ করেছে।
স্টেটগুলো হলো ইন্ডিয়ানা, মিজৌরি, মন্টানা, ওহাইয়ো, ওকলাহোমা, নিউ মেক্সিকো, নর্থ ডেকটা, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া এবং ওয়াইওমিং।
আলাস্কা, কলরাযো, আইডাহো, মিনেসোটা, সাউথ ডেকটা, ইউটাহ এবং উইসকনসিন স্টেটে লাগাতার সাত দিনব্যাপী সংক্রমণের হার বেড়েছে বলেও স্বাস্থ্য বিভাগীয় ফেডারেল প্রশাসন জানিয়েছে।
নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স এবং ব্রুকলীনের কয়েকটি এলাকায় সংক্রমণের হার প্রতিদিনই বাড়ছে গত ১০ দিন যাবত। এ কারণে ৩০০টি স্কুল খোলার একদিন পরই পুনরায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অত্যাবশ্যকীয় ব্যবসা-অফিস ছাড়া সবকিছু বন্ধ করা হয়েছে। রেস্টুরেন্টের ভেতরে ও বাইরে খাবারের অনুমতিও বাতিল করা হয়েছে। মসজিদ, মন্দির, চার্চ, সিনেগগে ১০ জনের বেশি লোকের সমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। এসব এলাকাসহ সমগ্র সিটিতেই সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।
টহল পুলিশকেও সারাক্ষণ মাস্ক পড়তে বিশেষ নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এসব নির্দেশ অমান্য করলেই মোটা জরিমানার শিকার হতে হবে বলে স্টেট গভর্নর অ্যান্ড্রু ক্যুমো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। গভর্নরের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে গিয়েছিলেন জুইশ সম্প্রদায়ের লোকজন।
শুক্রবার আদালত জুইশদের আবেদন নাকচ করে দিয়ে বলেছেন যে, করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থবিধি মেনে চলা জরুরি। তাই চার্চ-সিনেগগ অথবা ধর্মীয় চর্চাকেন্দ্রে লোক সমাগমের ওপর নির্দেশনাকে কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থী ভাবার অবকাশ থাকতে পারে না।
মানুষের জীবন বাঁচাতে যা জরুরি সেটি অনুসরণ করতেই হবে।
জানা গেছে, নতুন রোগীর সংখ্যা এখনও জুলাইয়ের শেষের দিনগুলোর চেয়ে অনেক কম। সে সময় সারা আমেরিকায় দৈনিক গড়ে ৬৬ হাজারের অধিক মানুষ সংক্রমিত হয়। দৈনিক মৃত্যুর গড় সংখ্যাও অনেক কম। চলতি মাসের ৯ দিনে মৃত্যুর হার গড়ে দৈনিক ৭০০ জন।
প্রসঙ্গত, করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হাসপাতালে ভর্তির পরই আমেরিকায় সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে। ট্রাম্প হাসপাতাল থেকে হোয়াইট হাউজে ফিরেই করোনাকে অবজ্ঞা করার মতো কথাবার্তা পুনরায় শুরু করেছেন। এমনকি শনিবার দুই হাজার আমেরিকান জড়ো করেছিলেন হোয়াইট হাউজের দক্ষিণ লনে। নির্বাচনে ভোট প্রার্থনার বক্তব্য দিয়েছেন। সে সময়ে কিছু মানুষ মাস্ক পরলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেননি একজনও। এর ফলে আবারও করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা। চিকিৎসকের পরামর্শ-উপদেশ অবজ্ঞা করে নির্বাচনী প্রচারণায় নামার ঘোষণাও দিয়েছেন ট্রাম্প।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন