বমি ভাব বা বমি হওয়া, খাওয়ায় অরুচি, মাথা ঘোরা, শারীরিক পরিবর্তন আসা ইত্যাদি লক্ষণ যা স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় পাওয়া যায়। মিসেস ফেরদৌসীর (ছদ্ম নাম) এ লক্ষণগুলো সবই আছে। তিনি এখন সাড়ে তিন মাসের গর্ভবতী। এ সমস্যা ছাড়াও আরও যে সমস্যা দেখা দিয়েছে তা হলো তিনি ঠিকমতো দাঁত মাজতে পারছেন না। টুথপেস্টের গন্ধ নাকের কাছে গেলেই বেশি বমি হয়। ফলে তার মাড়ি ফুলে গেছে, সামান্য খোঁচা লাগলেই রক্তপাত হচ্ছে। গর্ভাবস্থায় মাড়ির এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় গর্ভকালীন মাড়ির প্রদাহ।
লক্ষণসমূহ : এ রোগে মাড়ি দেখতে উজ্জ্বল লাল বা নীলচে লাল দেখায়। দু’দাঁতের মাঝে যে মাড়ি দেখা যায় সেটা অনেকেরই ফুলে যায় এবং টিউমারের মতো দেখায়। এর আকার তখন গোলাকার দেখায়। সমগ্র মাড়ি রসালো ফোলা, গোলাকারম মসৃণ চকচকে এবং ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। দু’দাঁতের মাঝের মাড়ি এতটাই ফুলে যায়, যা টিউমারের মতো দেখায়। একে গর্ভকালীন টিউমারও বলা হয়। এটি দেখতে লাল, গোলাকার, মসৃণ চকচকে হয়ে থাকে।
কারণ : গর্ভাবস্থায় মাড়িতে এ ধরনের সমস্যা হরমোনের নিঃসরণের (অধিমাত্রায় ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন নিঃসরণ হয়) জন্য হয়ে থাকে। এছাড়াও রোগী যখন তার মুখ ঠিকমতো পরিষ্কার করতে পারেন না তখন ব্যাকটেরিয়াল প্লাক জমা হয়ে মাড়িতে প্রদাহ সৃষ্টি করে।
চিকিৎসা : মুখের অভ্যন্তরীণ পরিচ্ছন্নতাই এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে, যদিও এখানে হরমোনের প্রভাব রয়েছে। এ অবস্থায় রোগীকে অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের চিকিৎসা নিতে হবে। সম্ভব হলে স্কেলিং পলিশিং করতে হবে। যে সব জায়গায় বেশি প্রদাহ রয়েছে সেখানে কিউরেট করতে হবে। টিউমারের মতো বাড়তি অংশ থাকল তা সার্জারির মাধ্যমে অপসারণ করতে হবে। দাঁতে প্লাক জমা রোধ করতে হবে।
লেখক :
ডা. নাহিদ ফারজানা
চেয়ারম্যান, নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।