ডায়াবেটিক রোগীদের রোজা রাখার ঝুঁকি আছে কি না, এর ওপর ভিত্তি করে ডায়বেটিক রোগীদের তিন ভাগে ভাগ করা হয়—উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও কম ঝুঁকিপূর্ণ।
উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ডায়বেটিক রোগীদের রোজা রাখতে নিরুৎসাহ করা হয়। তাঁদের রোজা না রাখাটাই ভালো হবে—
♦ যাঁদের গত তিন মাসের মধ্যে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা ডায়াবেটিস কমে যাওয়ার ইতিহাস আছে।
♦ যাঁদের গত তিন মাসে ডায়াবেটিস খুব বেড়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ইতিহাস আছে।
♦ যাঁরা হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে বুঝতে পারেন না।
♦ যেসব গর্ভবতী নারী ইনসুলিন নিচ্ছেন।
♦ ডায়ালিসিস করছেন এমন কিডনি রোগী।
♦ টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগী যাঁরা দিনে তিনবার বা তার অধিক ইনসুলিন নিচ্ছেন।
♦ যাঁরা মারাত্মকভাবে অসুস্থ যেমন : ডায়রিয়া, জ্বর, হার্টের সমস্যা বা লিভারের সমস্যা আছে।
♦ যাঁদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত।
এ ধরনের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের যেসব সমস্যা হতে পারে—
♦ হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা ডায়াবেটিস বেশি কমে যাওয়া।
♦ ডায়াবেটিস বেশি বেড়ে গিয়ে শরীরের এসিড উৎপন্ন হওয়া বা ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস।
♦ পাানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন।
♦ স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া।
করণীয়
বাসায় গ্লুুকোমিটার মেশিন দিয়ে ইফতারের আগে এবং ইফতারের দুই ঘণ্টা পরে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করবেন। ব্লাড সুগার বেশি কমে গেলে বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে ভাঙতে হবে রোজা। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাড়াতাড়ি চিনির পানি, মধু বা যেকোনো মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাইয়ে দিতে হবে। অজ্ঞান হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ইফতারের পর অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য অনেকের ব্লাড সুগার অনেক বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করে হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। ডায়াবেটিক রোগীরা অবশ্যই রোজা রাখার আগে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. মো. মাজহারুল হক তানিম
কনসালট্যান্ট
ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন বিশেষজ্ঞ
ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা