দাঁতের স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। মুখের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে দেহের গুরুত্বপূর্ণ সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
যেসব রোগ হতে পারে
আলঝেইমার
মুখের রোগের সঙ্গে আলঝেইমার বা স্মৃতিভ্রমের সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। মুখের নানা ধরনের জীবাণুর অস্তিত্ব আলঝেইমার রোগীর রক্তেও পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন মাড়ির প্রদাহ থাকলে জ্ঞান ও চেতনা কমে যেতে পারে।
শ্বাসকষ্ট
মাড়ি আক্রমণকারী জীবাণুগুলো ফুসফুসের মধ্যেও পাওয়া গেছে, যা ফুসফুসে ধীরে ধীরে প্রদাহের সৃষ্টি করে এবং শ্বাসে সমস্যা করে।
হৃদরোগ
মাড়িতে দন্তমল জমে। এ থেকে সৃষ্ট মাড়ির রোগ থেকে যে প্রদাহ ও সংক্রমণ হয়, তা রক্তের মাধ্যমে হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে যেতে পারে।
হজমের সমস্যা
দাঁতের সমস্যায় হজমশক্তি ব্যাহত হতে পারে। কেননা খাদ্য পরিপাকের শুরুটা হয় মুখ থেকেই।
গর্ভকালীন জটিলতা
গর্ভাবস্থায় যাদের মাড়ির রোগ বা মাড়ির প্রদাহ থাকে, তাদের গর্ভের সন্তান কম ওজনের অথবা নির্ধারিত সময়ের আগেই জন্ম নিতে পারে এবং নানা জটিলতা হতে পারে।
প্রতিরোধ ও প্রতিকার
দাঁতের সমস্যা থেকে জটিল সব রোগ সৃষ্টি হতে পারে। তাই শৈশব থেকেই দাঁতের যত্নের প্রতি সচেতন হতে হবে। সঠিক নিয়মে দাঁতের যত্ন নিতে হবে। অবশ্যই রাতে খাবার পর ভালোভাবে ব্রাশ করতে হবে।
বাজার থেকে টুথপেস্ট কেনার সময় অবশ্যই ব্যালেন্সড ফ্লোরাইড এবং ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ কিনা দেখে নিতে হবে। বয়সভেদে বাজারে তিন ধরনের টুথপেস্ট রয়েছে।
০ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রয়োজন জিরো ফ্লোরাইড, ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রয়োজন ৫০০ থেকে ৬০০ পিপিএম ফ্লোরাইডসম্পন্ন টুথপেস্ট এবং বড়দের জন্য প্রয়োজন ১০০০ পিপিএম ফ্লোরাইডসম্পন্ন টুথপেস্ট। বিশেষ সচেতনতার জন্য ডেন্টাল ফ্লস ও মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতি ছয় মাস পর পর অথবা বছরে দুবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক : অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী
দন্ত বিশেষজ্ঞ, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (অনারারি), বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ, একুশে পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক।