বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। আগামী ৪ ডিসেম্বর থেকে দেশটিতে শুরু হচ্ছে এই ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম। তবে এক্ষেত্রে মার্কিন জায়ান্ট ফাইজারের চেয়ে কিছুটা পিছিয়েই পড়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে ইতোমধ্যেই ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পেয়েছে ফাইজার-মডার্না উভয়ের ভ্যাকসিনই। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুমোদন পেতে পারে জনসন অ্যান্ড জনসনেরটিসহ আরও দু’টি ভ্যাকসিন। একারণে এখনই প্রশ্ন উঠছে, কোন ভ্যাকসিন সবচেয়ে সহজলভ্য, দাম কম কার, পরিবহন সহজ কোনটির?
দাম কোনটার কেমন?
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের দাম এখনও নির্দিষ্ট করে বলা না হলেও বিভিন্ন সূত্রের খবর, এটি অন্যদের তুলনায় সস্তাই হতে যাচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে অ্যাস্ট্রাজেনেকার চুক্তিতে প্রতি ডোজের দাম ধরা হয়েছে ২ দশমিক ৪৭ ইউরো (২ দশমিক ২৩ পাউন্ড) বা ৩.০৩ মার্কিন ডলার। যুক্তরাজ্য সরকার এখনও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের দামের বিষয়ে কিছু বলেনি। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, এই ভ্যাকসিনের জন্য ব্রিটিশ সরকার ইইউ’র সমান অর্থই পরিশোধ করবে।
এছাড়া, অক্সফোর্ডের গবেষকদের তৈরি ভ্যাকসিনের ভারতীয় উৎপাদক সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে গত ৫ নভেম্বর চুক্তি করেছে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চুক্তি অনুযায়ী, বাংলাদেশকে অক্সফোর্ডের তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এর জন্য পরিবহনব্যয়সহ প্রতি ডোজের দাম ধরা হয়েছে পাঁচ ডলার। ভ্যাকসিনের আনুষঙ্গিক উপকরণের জন্য ব্যয় আরও ১ দশমিক ২৫ ডলার। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে এর প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনে খরচ পড়বে ৬ ডলার ২৫ সেন্ট।
এই তুলনায় ফাইজারের ভ্যাকসিনের দাম অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিনের প্রতি ডোজ বিক্রি হচ্ছে ২৯ দশমিক ৪৭ ডলারে।
মডার্নার ভ্যাকসিনের দাম এখনও নিশ্চিত না হলেও সেটা ১৫ থেকে ৩০ ডলারের মধ্যেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পরিবহন ব্যবস্থা
এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি ফাইজার ও মডার্নার ভাকসিন দু’টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রায় ৯৫ শতাংশ কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তবে এগুলো পরিবহনে ঝামেলা অনেক।
মডার্নার ভ্যাকসিন মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয়, অর্থাৎ এটি সাধারণ ফ্রিজারে সংরক্ষণ সম্ভব। তবে ফাইজারের ভ্যাকসিন রাখতে হবে মাইনাস ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়, যার ব্যবস্থা করা বেশ কঠিন।
এদিক থেকে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ছয় মাস পর্যন্ত ভালো থাকবে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন। অর্থাৎ, এটি পরিবহনে খুব একটা ঝঞ্ঝাট পোহাতে হবে না।
সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, সিএনএন