শিশু বলতে জন্মের পর থেকে চৌদ্দ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়েকে বোঝালেও বয়সভেদে এদেরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়...
► নিওনেট- জন্মের পর থেকে আটাশ দিন
► ইনফ্যান্ট- এক মাস থেকে বারো মাস বয়স
► প্রি-স্কুল চিলড্রেন- পাঁচ বছরের নিচে
► স্কুল গোয়িং চিলড্রেন- পাঁচ বছরের ওপরে
এদের মধ্যে পাঁচ বছরের শিশুদের পেটের ব্যথা বা এবডোমিনাল কলিক বেশি হয়। যেসব শিশু মায়ের বুকের দুধ খায় বা ফিডারে দুধ খায় তারা পেটের ব্যথায় আক্রান্ত হয় বেশি। সাধারণত দুধ চুষে খাওয়ার সময় প্রচুর বাতাস পেটে যায় যা পরবর্তীতে পেট ফাঁপার কারণ হয়। এসব শিশু পেট ব্যথায় কান্না শুরু করে। বাতাস বের না হওয়া পর্যন্ত এরা কাঁদতে থাকে। পরীক্ষা করলে এসব শিশুর পেট ব্যথার কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এ ধরনের পেট ব্যথাকে ফাংশনাল এবডোমিনাল কলিক বলে।
অন্যান্য কারণ
১. কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া ২. অতিরিক্ত খাওয়ানো ৩. ময়লাযুক্ত খাবার খাওয়ানো ৪. খাবার এলারজি ৫. ফুড পয়জনিং।
কিছু কিছু রোগের কারণেও পেট ব্যথা হয়ে থাকে। যেমন- এপেনডিসাইটিস, হারনিয়া, প্রশ্রাবের নালিতে ইনফেকশন, লিভারের রোগ, পাকস্থলির রোগ। যদি কোনো রোগ না হয়ে থাকে তাহলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ব্যথা দূর হয়ে যাবে।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন
১. যদি কোষ্ঠ্যকাঠিন্ন বা ডায়রিয়া তিন দিনের বেশি হয় ২. পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায় ৩. ঘন ঘন বমি হয় বা বমির সঙ্গে রক্ত যায় ৪. পেট ফুলে শক্ত হয়ে যায় ৫. শ্বাসকষ্ট হয়।
করণীয় কী
কিছু বিষয় মেনে চললে শিশুরা পেট ব্যথা থেকে মুক্ত থাকতে পারে। যেমন ১. দুধ চুষে খাওয়ার সময় নিপল যেন বারবার মুখ থেকে বেরিয়ে না যায়। ২. নিপল ভালোভাবে ধুয়ে তারপর শিশুর মুখে দিতে হবে ৩. টক, তেলেভাজা খাবার কম খাওতে হবে। ৩. চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে ৪. বাইরের খাবার কিনে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ৫. হাত ধুয়ে খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে। ৬. খাবার ঢাকা না থাকলে সেই খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। ৬. চা কফি খাওয়ানোর অভ্যাস থেকে বিরত থাকতে হবে।
লেখক :
ডা. আনিস আহমেদ
সহকারী অধ্যাপক, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, স্টেট কলেজ অব হেলথ সায়েন্সেস, ঢাকা।