শীতকালে হাঁপানি থেকে রক্ষা পেতে

0
149
Spread the love

হাঁপানি রোগীদের জন্য শীতল আবহাওয়া, সর্দি-কাশি-ফ্লু বা ঠান্ডাজ্বর প্রচন্ড কষ্ট আর বিপদের কারণ হতে পারে। প্রতি বছর শীতে শিশুদের ক্ষেত্রে প্রায় ৮৫ শতাংশ এবং বড়দের ৩৫ শতাংশ হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের তীব্রতা বেড়ে যায়। প্রধান কারণগুলো হলো : এই সময়ে ঠান্ডা, জ্বর, ঠান্ডা-শুষ্ক বাতাস যা শ্বাসতন্ত্র সংকুচিত করে, শীতে বেড়ে যাওয়া ধুলাবালু ও ধোঁয়ার পরিমাণ, কুয়াশা ও বদ্ধ গুমোট পরিবেশ ইত্যাদি। তাই হাঁপানি থেকে রক্ষা পেতে যা করণীয়-

শয়নকক্ষে খুব বেশি মালামাল রাখবেন না। *ঘরের সম্ভাব্য সব কিছু ঢেকে রাখবেন, যাতে ধুলাবালি কম উড়ে।* টিভি, মশারি স্ট্যান্ড, সিলিং, পাখার ওপর জমে থাকা ধুলোবালি সপ্তাহে একবার অন্য কাউকে দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। * শোকেস বা বুক সেলফে রাখা পুরনো খাতা, ফাইল, বইপত্র অন্য কাউকে দিয়ে ঝেড়ে নিন। *বাস, মোটর গাড়ি বা যানবাহনের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকবেন। * উগ্র সুগন্ধি ব্যবহার করবেন না। তীব্র দুর্গন্ধ, ঝাঁজালো গন্ধ থেকে দূরে থাকুন। *এই সময়ে বাসায় হাঁস-মুরগি, বিড়াল, পোষাপ্রাণী থাকলে এগুলোর সঙ্গে মেলামেশা করবেন না। *যাদের অ্যালার্জি আছে তারা এই সময় বাড়িতে ফুলের গাছ লাগাবেন না। *ঘাসের ওপর বসে থাকা পরিহার করুন। নিজে ঘাস বা গাছ কাটবেন না। *শীতে গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন এবং মাপলার ব্যবহার করবেন। *শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। জোরে শ্বাস টানুন, প্রায় ১৫ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখুন। দুই ঠোঁট শীষ দেওয়ার ভঙিতে আনুন এবং ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে শ্বাস ফেলুন প্রতিদিন সকাল ও বিকালে ১০ মিনিট করে মুক্ত পরিবেশে। * সর্বদা ভয় ও চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং কখনো হতাশাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়বেন না। * ছোট বাচ্চারা লোমশ পুতুল নিয়ে খেলা করবে না। * ঘর নিজে ঝাড়ু দেবেন না। ঘর ঝাড়ু দিতে হলে মাস্ক, তোয়ালে বা গামছা দিয়ে নাক বেঁধে নেবেন। *কাশি  শক্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাবেন। *ফ্রিজের ঠান্ডা পানি/পানীয় কম খাবেন। হালকা গরম পানি পান করবেন। *বিছানার চাদর বা বালিশের কভার পাঁচ দিন পর পর ধুয়ে ব্যবহার করবেন। *মশারি সপ্তাহে একবার ধুয়ে ব্যবহার করবেন। * যদি কোনো খাবারে সমস্যা হয়, যেমন- গরুর মাংস, ইলিশ মাছ, চিংড়ি, হাঁসের ডিম, বেগুন, কচু, পাকা কলা, আনারস, নারিকেল ইত্যাদি কম খাবেন / খাবেন না। *সর্বদা ধুলাবালি থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। *অ্যাজমা বা হাঁপানি কোনো কঠিন রোগ নয়, মনোযোগী হলেই এটি নিয়ন্ত্রণে রেখে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকা সম্ভব। *অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে *শীতকালে অ্যাজমা/হাঁপানি রোগীদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে। তাই এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে।

লেখক:

অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোস্তফা হোসেন

বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে