শীত শুরু হতে না হতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়েছে। গত কয়েকদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের পরিবারসহ বিভিন্ন বিভাগের অর্ধশতাধিক এরই মধ্যে কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে শিক্ষক ও কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বসবাসরতদের অসাবধানতা, মাস্ক ছাড়া চলাচল ও লোকসমাগমকে দায়ী করেছেন বিশ্লেষকরা।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের পরিবারের দুই সদস্যের কভিড শনাক্ত হয়েছে। এ ছ্ড়াাও উপাচার্যের দফতরের এক কর্মকর্তা তার পরিবারসহ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরিবহন ম্যানেজার, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার, আইন উপদেষ্টার অফিসের ডেপুটি রেজিস্ট্রারও কভিড আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল গতকাল দুপুরে নিজের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে কভিড পজিটিভ হওয়ার কথা জানিয়েছেন। এর বাইরে যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দুজন শিক্ষকও আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও করোনা আক্রান্ত হয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দুই শিক্ষক দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন। কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনে অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের সাতজনের কভিড শনাক্ত হয়। এ প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় মাস্ক ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ করে প্রশাসন। এমনকি সন্ধ্যা ৬টার পর ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের সমাগমও নিষেধ করে তারা। তবে এসবের কোনোটিই তেমন ফলপ্রসূ হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসে এখনো মাস্ক ছাড়া লোকজন ঘোরাফেরা করছে এবং সন্ধ্যার পরও অনেককে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. সারওয়ার জাহান মুক্তাফী জানান, এই এলাকার বাসিন্দাদের অসাবধানতা, মাস্ক ছাড়া চলাফেরা ও যানবাহনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করাই সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এসব বিষয়ে করণীয় জানিয়ে বিভিন্ন দফতরে চিঠিও পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। এসব বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, আক্রান্তের পরিবার থেকে না জানালে নির্দিষ্ট করে কোনো সংখ্যা বলা সম্ভব নয়। তবে ক্যাম্পাসে করোনার একটা প্রকোপ আছে। প্রশাসনিক ভবন ও এর বাইরেও আছে। বিশ^বিদ্যালয়ের নেওয়া পদক্ষেপের কার্যকারিতার ব্যাপারে তিনি বলেন, যেহেতু এটা একটা উন্মুক্ত ক্যাম্পাস, তাই সবার সহযোগিতায় এগুলো কার্যকর করতে হবে। প্রবেশমুখগুলো যেহেতু খোলা রাখছি, তাই সবাইকে অপ্রয়োজনে ক্যাম্পাসে আসতে নিষেধ করছি। প্রশাসনিক ভাবে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ কার্যকর করছি। পরিবহনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলছি। রোস্টার ভিত্তিতেও কাজ করতে বলা হয়েছে।