অতিরিক্ত ঘামে ত্বকে সমস্যা দেখা দিচ্ছে? জেনে নিন কী করবেন

0
710

চারিদিকে চলছে গ্রীষ্মের তাপদাহ। মাথার উপরে ফ্যান চললেও শরীর হচ্ছে ঘেমে নেয়ে একাকার। ঘাম হওয়াটা স্বাভাবিক। ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বরং ঘাম না হওয়াই অস্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত ঘামের কারণে ত্বকে ময়লা জমে  ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডসের সমস্যায় ভুগতে হয় অনেককেই। এ ছাড়া মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, স্থূলতা, শরীরে পুষ্টির অভাবসহ নানা কারণে শরীর অতিরিক্ত ঘামতে পারে। পাশাপাশি ডায়াবিটিস, জ্বর, হার্টের অসুখ, মেনোপজ়ের কারণেও শরীরে বেশি ঘাম হতে পারে। ঘামের ফলে ত্বকে যে অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দেখা দেয়, তা দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন।

• ফেসিয়াল স্ক্রাব: মুখে অতিরিক্ত ঘামের কারণে তৈলাক্ত ভাব দূর করতে চালের গুঁড়ার সঙ্গে টক দই ভাল করে মিশিয়ে নিন। এটা মুখে লাগিয়ে পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করুন। ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দু’বার ব্যবহার করুন।

• শসার রস: এ ধরনের সমস্যায় শসার রস ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে। শসা রস করে  তুলার সাহায্যে মুখে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। শসার রস মুখ ঠাণ্ডা রাখে।

• অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার: ঘাম নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার নিয়মিত খেলে ত্বকের পিএইচ লেভেলের ভারসাম্য বজায় থাকে। অতিরিক্ত ঘাম হওয়া স্থানগুলো পরিষ্কার করে নিন আগে। তুলার বলে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার নিয়ে ওই স্থানে লাগিয়ে সারা রাত রেখে দিন। এর সঙ্গেই এক গ্লাস পানিতে দুই টেবিল-চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ও সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে রোজ খালি পেটে খেলেও উপকার পাওয়া যায়।

• বেকিং সোডা: শরীরকে অতিরিক্ত ঘামের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি প্রাকৃতিক ভাবে শরীরের ঘাম শোষণ করে ও দুর্গন্ধ কমায়। এ ছাড়া শরীরের যে অংশ বেশি ঘামে, সেখানের পিএইচ লেভেলের মাত্রা কমাতেও বেকিং সোডা যাদুকরী ভূমিকা পালন করে। পরিমাণমতো পানির সঙ্গে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এর সাথে কয়েকফোঁটা তেল মিশিয়ে নিতে পারেন। এ বার মুখ, পিঠে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে কয়েকবার ব্যবহার করলেই ঘামের হাত থেকে মুক্তি মিলবে।

• পাতিলেবু: ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা যায় লেবু দিয়েও। সমপরিমাণ লেবুর রস ও বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি বেশি ঘাম হয় এমন জায়গায় লাগিয়ে রেখে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এক দিন অন্তর এ পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে উপকার পাবেন। এ ছাড়া লেবু প্রাকৃতিক সুগন্ধি হিসেবেও কাজ করে, যা ঘামের কারণে হওয়া দুর্গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। এক মগ পানিতে পরিমাণমতো পাতিলেবুর রস মিশিয়ে, তাতে তোয়ালে ভিজিয়ে সারা শরীর ভালো ভাবে চেপে চেপে মুছে নিন। ২০ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এ বার ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন।

• নারকেল তেল: এই তেলে আছে লরিক অ্যাসিড, যা দুর্গন্ধের জন্য দায়ী জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে। খানিকটা নারকেল তেল এবং শিয়া বাটার একসঙ্গে নিয়ে এক মিনিট গরম করুন। এর মধ্যে তিন টেবিল চামচ বেকিং সোডা, দুই টেবিল চামচ অ্যারারুট পাউডার ও কয়েক ফোঁটা সুগন্ধি তেল মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন:

• মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করতে হবে। কারণ মানসিক চাপ কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার অন্যতম কারণ।

• গরমে বেশি তেল-মশলাযুক্ত খাবার ঘামের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই এমন খাবার খেতে হবে যা শরীর ঠাণ্ডা রাখে।

তবে ঘাম খুব বেশি হলে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে