ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে পরীক্ষা করতে চাইলেন ফ্লেমিং। জীবাণু কালচারের আরেকটা প্লেট নিয়ে তাতে নাক ঝাড়লেন। অনুমান ঠিক। কিছুক্ষণের মধ্যে নতুন প্লেটের জীবাণুগুলোও ধ্বংস হলো। শুধু তাই নয়, ফ্লেমিং লক্ষ করলেন, চোখের পানি ও থুতুতেও জীবাণুনাশক উপাদান রয়েছে। তিনি শরীরের এই জবাণু প্রতিরোধী উপাদানের নাম দিলেন লাইসোজাইম। চিকিৎসাবিজ্ঞানে খুলে গেল নতুন দিগন্ত। কিছুদিনের মধ্যেই ফ্লেমিং বুঝতে পারলেন লাইসোজাইম সাধারণ জীবাণুগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর হলেও শক্তিশালী জীবাণুর বিরুদ্ধে একেবারেই অচল।
তারপর কেটে যায় আট বছর।
একদিন গবেষণাগারের জানালা খুলে রেখে জীবাণু কালচার নিয়ে কাজ করছিলেন ফ্লেমিং। হঠাৎ খোলা জানালা দিয়ে একটা দমকা বাতাস এসে এলোমেলো করে দিয়ে যায় জীবাণুর প্লেটগুলোকে। বাগান থেকে কিছু ঝরাপাতা এসে পড়ে প্লেটের ওপর। বেশ কিছুক্ষণ পর ফ্লেমিং দেখলেন অবাক কাণ্ড! জীবাণু কালচারের প্লেটে পরিবর্তন ঘটেছে। প্লেটগুলো নিয়ে পরীক্ষা করলেন। পরীক্ষা করলেন ঝরাপাতাগুলো নিয়েও। সেই পরীক্ষা থেকেই বেরিয়ে এলো দারুণ এক ফল! ঝরাপাতাগুলোর গায়ে এক ধরনের ছত্রাক জন্মায়। সেই ছত্রাকই আসলে জীবাণু ধ্বংস করে। উল্লাসে ফেটে পড়লেন ফ্লেমিং। তাঁর এত দিনের গবেষণা অবশেষে সফল হতে চলেছে। ওই ছত্রাকগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম পেনিসেলিয়াম নোটেটাম। তা থেকে যে জীবাণুনাশক তৈরি হয়েছিল তার নাম দেওয়া হয় পেনিসিলিন।