এনএস১ নেগেটিভ হলেও কি ডেঙ্গু হতে পারে?

0
169
abm abdullah
Spread the love

বেড়েই চলছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। দীর্ঘ হচ্ছে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিলও। দেশে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রোগী মৃত্যুতে পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ বছর ডেঙ্গুর গন্তব্য কোথায় গিয়ে থামবে, সেটিও স্পষ্ট করে বলতে পারছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু নিয়ে খুবই সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।

ডেঙ্গু রোগের সাধারণ লক্ষণ দেখা দিলে সময় ক্ষেপণ না করে দ্রুত টেস্ট করাতে হবে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, লক্ষণ দেখা দেওয়ার তিনদিনের মধ্যেই টেস্ট করাতে হবে। সাধারণত আমরা ডেঙ্গুর এনএস১ অ্যান্টিজেন নামের যে টেস্টটি করি সেটি লক্ষণ দেখা দেওয়ার তিনদিন পর করালে রোগীর সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যায় না। তাই তিনদিনের মধ্যেই টেস্ট করাতে হবে। এছাড়া টেস্টের ১০০ ভাগই পজেটিভ হয় না, সাধারণত ৮০ ভাগ মানুষের পজিটিভ আসে। তার মানে রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও ডেঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

দেখা যায়, ডেঙ্গু টেস্ট নেগেটিভ আসার পর অনেকে মনে করেন ডেঙ্গু হয়নি। সেক্ষেত্রে তারা বিষয়টিকে ততটা গুরুত্ব দেন না, হেলাফেলা করেন। পরে অবস্থা বেগতিক হলে সিরিয়াস হতে দেখা যায়, ততক্ষণে রোগী অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে চলে যতে পারেন। এক্ষেত্রে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে, রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরেও যাদের মধ্যে ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ থাকবে এবং প্লাটিলেট এক লাখের নিচে থাকবে- তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলেও পজিটিভ হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, রোগী বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেন না, পরে সংকটাপন্ন অবস্থা তৈরি হলে রোগীকে আইসিইউ-তে পর্যন্ত ভর্তি করা লাগতে পারে।

সবার জন্য একটাই পরামর্শ- যদি ডেঙ্গু টেস্ট নেগেটিভ আসে তারপরও ডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণ থাকে, প্লাটিলেটের পরিমাণ কম থাকে- তাকে ডেঙ্গু রোগী হিসেবে চিকিৎসা নিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে, প্রচুর লিকুইড খেতে হবে। তবে রোগীর দ্বারা যদি খাবার গ্রহণ অসম্ভব হয়, বারবার বমি হয়- সেক্ষেত্রে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। টেস্ট নেগেটিভ হওয়ার পরেও লক্ষণ থাকলে অযথা বসে না থেকে, সময় ক্ষেপণ না করে বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। এখন যেহেতু ডেঙ্গুর মৌসুম চলছে, তাই সাধারণ উপসর্গ দেখা দিলেই সতর্ক হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

বিশেষ করে ঢাকার বাইরের মানুষ ডেঙ্গু টেস্ট করতে চায় না। আবার জ্বরের তিনদিন পর টেস্ট করে নেগেটিভ রিপোর্ট পেয়ে মনে করে ডেঙ্গু হয়নি। অথচ ডেঙ্গুর উপসর্গ থাকতেও রোগী হেলাফেলা করে- তাদের সমস্যা আরও বেশি। এমনকি অন্তঃসত্ত্বা নারী, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী- যারা ক্যান্সার, কিডনি, ডায়াবেটিস, হার্ট ও প্রেসারের মতো অসুখে ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে আরও বেশি পরিমাণ সতর্ক থাকতে হবে। তাই জ্বর বা উপসর্গের তিনদিনের মধ্যে ডেঙ্গু টেস্ট বা এনএস১ করাতে হবে।

 

লেখকঃ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে