কলেরা ঠেকাতে পান করুন বিশুদ্ধ পানি

দেশে উদ্বেগজনকভাবে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কলেরা রোগটি ‘ভিব্রিও কলেরি’ নামের একটি ব্যাকটেরিয়াঘটিত অন্ত্রের সংক্রামক রোগ। এ রোগে চাল ধোয়া পানির মতো পাতলা পায়খানা হয়। পানিশূন্যতায় শারীরিক দুর্বলতা এবং চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় থাকলে শেষ পর্যন্ত পানিশূন্যতার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।

কারণ

দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে কলেরা ছড়ায়। পয়ঃপ্রণালীর সুষ্ঠু ব্যবস্থার অভাবে মল দিয়ে যদি খাওয়ার পানি দূষিত হয়, আর সেই পানি পান করলে কলেরা হয়। দুর্বল পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব কলেরাঝুঁকির কারণ।

উপসর্গ

♦ প্রচুর পরিমাণে পানির মতো পাতলা পায়খানা

♦ বমি বা বমির ভাব

♦ পেটে ব্যথা

♦ পানিশূন্যতা

♦ দুর্বলতা

♦ শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে গেলে পানিশূন্যতা থেকে শক পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।

করণীয়

কলেরার মূল চিকিৎসা হলো, শরীর থেকে যে পানি বেরিয়ে যাচ্ছে, সেটি পূরণ করা। মৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে মুখে খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সঠিক নিয়মে না বানালে শরীরে লবণের মাত্রার তারতম্য দেখা দেবে। সংক্রমণের মাত্রা যাদের বেশি, প্রচুর পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, তাদের অবশ্যই শিরাপথে স্যালাইন দিতে হবে। পানি ও লবণের মাপ ঠিক রাখতে অবশ্যই চিকিৎসকের তত্ত্ব্বাবধানে স্যালাইন দিতে হবে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে চিকিৎসকের নির্দেশে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়াও এই সময় অন্ত্রের পরিচর্যায় জিংক সাপ্লিমেন্ট ভালো ভূমিকা রাখে।

নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। পানির উৎস যদি নিরাপদ না হয়, প্রয়োজনে পানি অবশ্যই ফুটিয়ে পান করতে হবে। ১০০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পানি ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত ফোটালে পানিকে পানের জন্য নিরাপদ ধরে নেওয়া যায়। রান্না করার ক্ষেত্রেও ফুটানো পানি ব্যবহার করা উচিত।

এ ছাড়া খাবার আগে-পরে হাত ধোয়া, মলত্যাগের পর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। পাশাপাশি ঘরে-বাইরের অনিরাপদ, অস্বাস্থ্যকর খাবারও পরিহার করতে হবে।

পরামর্শ দিয়েছেন-

ডা. শাফেয়ী আলম, মেডিক্যাল অফিসার

কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *