চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের কাছে মাদক যেত ক্লিনিক থেকে

0
720

স্বাচিপ নেতা ডা. সুমন রায় পলাতক

খুলনায় চিকিৎসক নেতা ডা. সুমন রায়ের ব্যক্তিগত চেম্বার থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধারের পর নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। এরই মধ্যে তার মাদক বিকিকিনির নেটওয়ার্ক ও সহযোগীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে মাঠে নেমেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। অভিযোগ রয়েছে, ডা. সুমনের মাদক নেটওয়ার্কের সদস্যদের একটি বড় অংশই চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থী! এদিকে মাদক সিন্ডিকেটে জড়িত ডা. সুমন রায় ও তার সহযোগীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। গত ৯ নভেম্বর রাতে জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানে খুলনা হেলথ গার্ডেন ক্লিনিকে ডা. সুমন রায়ের কক্ষ থেকে এক হাজার ৬৫০ পিস ইয়াবা, ৫০ গ্রাম গাঁজা, ইয়াবা সেবনের সরঞ্জামাদি ও নগদ এক লাখ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়। সেখান থেকে সুমনের দুই সহযোগী আসাদুজ্জামান হিরা ও অথৈ গ্রেফতার  হয়। সম্মিলিত দুর্নীতিবিরোধী জোট, খুলনার আহ্বায়ক শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়া দালালচক্রের সঙ্গে ডা. সুমন রায়ের সরাসরি যোগাযোগ ছিল।

তার সঙ্গে কিছু চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ওঠাবসা ছিল। তার চেম্বারে পাওয়া এত ইয়াবা নিজে সেবন করার জন্য রাখেনি। সেখান থেকে মাদক কারা সংগ্রহ করত সে বিষয়টির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মাদক বেচাকেনার সঙ্গে বিভিন্ন ক্লিনিকের দালাল, হাসপাতাল ঘিরে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের সদস্য ও ব্যক্তিগত সহকারীরা জড়িত। এর আগেও খুলনার ক্লিনিকে মাদক সেবনরত অবস্থায় চিকিৎসক আটকের ঘটনা ঘটেছে।

মামলার বাদী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ‘খ’ সার্কেল, খুলনার পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান জানান, নগরীর ছোট বয়রা এলাকায় হেলথ গার্ডেন ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় ‘ডক্টরস্ ক্লাব’র ভিতরে ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধারের পর থেকে ডা. সুমন রায় পলাতক রয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার হওয়া আসাদুজ্জামান হীরা দীর্ঘদিন ধরে মাদক বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত। কিছুদিন পরপর ঠিকানা পরিবর্তন করায় তাকে এতদিন আটক করা যায়নি। সিন্ডিকেটের দুই সদস্য আটকের পর মাদকের উৎস, পাচারের রুট ও কারা ক্রেতা- এ বিষয়গুলোকে সামনে রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নির্ধারণ হলে আসাদুজ্জামান হীরাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

এদিকে ডা. সুমন রায়ের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হওয়ায় পুরো বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বাচিপকে অবহিত করা হয়েছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে সংগঠনের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ আসতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে