চিকিৎসার নামে নিষ্ঠুরতা

0
913
মাইন্ড এইড

কর্তৃপক্ষীয় নজরদারি বাড়াতে হবে

আত্মমর্যাদাবোধ, অন্যের প্রতি আস্থা রেখে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক তৈরি, গভীর অনুভূতি, অন্যকে ক্ষমা করে দেওয়ার শক্তিসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য হলো মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য। এ বৈশিষ্ট্যগুলোর অনুপস্থিতি মানসিক সমস্যা তৈরি করে। মানসিক প্রক্রিয়াগুলোই আমাদের সব আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। কারও মানসিক রোগ হলে তার নিউরো-ট্রান্সমিটারের ঘাটতি বা বাড়তিজনিত মানসিক প্রক্রিয়া, আবেগ আর আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয়। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রের নামে গড়ে উঠেছে নির্যাতন সেল। এখানে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নেই।

সর্বশেষ রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড সাইকিয়াট্রি অ্যান্ড ডি-অ্যাডিকশন নামের বেসরকারি হাসপাতালে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার আনিসুল করিমকে চিকিৎসার নামে পিটিয়ে মেরেছেন সেখানকার কর্মীরা। বেসরকারি এ হাসপাতাল মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অনুমোদন নিয়েছিল। তবে চিকিৎসা হতো মানসিক রোগের। এ ধরনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে কোনো রোগী নির্যাতনের শিকার হন এটা স্বাভাবিক ধারণার বাইরে। তবে মানসিক ও মাদকাসক্তি সংশ্লিষ্ট ভুঁইফোড় চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত পরিদর্শন, লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়ন নীতিমালা সরকারের আছে। এ প্রক্রিয়াগুলো ঠিকমতো বাস্তবায়ন হলেই এসব প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

জাতীয় জরিপ অনুযায়ী দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক জনগোষ্ঠীর ১৭ শতাংশ এবং ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরের ১৮ শতাংশ মানসিক রোগে ভুগছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী দেশে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরিমাণ কম। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত জনবলও অপ্রতুল। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়টি এখন পর্যন্ত অবহেলিত। মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের নজরদারি বাড়াতে হবে। দক্ষ জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণ, সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতি গড়ে তোলা, প্রতিটি হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ ইউনিট ও শয্যার ব্যবস্থা এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে