আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ মানষু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর প্রায় ৩৩ শতাংশ রোগীর চোখের রেটিনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে অনেক রোগীর দষ্টিৃ শক্তি কমে আসে এবং এক পর্যায়ে স্থায়ী অন্ধত্বের দিকে অগ্রসর হয়। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা এবং ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বদ্ধিৃ পাওয়ায় ডায়াবেটিক ম্যাকুলার ইডিমা (ডিএমই) রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বদ্ধিৃ পাচ্ছে। এছাড়া বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (এএমডি) রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে রোগী, পরিবার এবং সমাজে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এই রোগের চিকিৎসা দেশে সীমিত পর্যায়ে চালু থাকলেও সহজলভ্য নয়, তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসায় স্থায়ী অন্ধত্ব এড়ানো সম্ভব। সুইস বায়োটেক প্রতিষ্ঠান রোশ এর সাম্প্রতিক গবেষণালব্ধ নতুন আবিষ্কার এই রোগের রোগীদের চিকিৎসাসেবাকে সহজ করবে বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন।
নতুন এই আবিষ্কার এবং ডিএমই আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাপদ্ধতি নিয়ে বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি এবং রোশ বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে গত শুক্রবার ঢাকার একটি হোটেলে এক বৈজ্ঞানিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দেশের অর্ধ-শতাধিক খ্যাতনামা চক্ষুবিশেষজ্ঞগণ এই সম্মেলনে অংশ নেন।
সম্মেলনে মলূ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভ্ল্যান্ড ক্লিনিক ফ্লোরিডার স্ট্যাফ ফিজিসিয়ান অধ্যাপক ডাঃ রিশি পল সিং। তিনি ডিএমই এবং এএমডি আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি, নতুন আবিষ্কৃত ঔষধ ও বৈজ্ঞানিক তথ্য উপস্থাপন করেন। এছাড়াও বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ আই হসপিটালের কনসাল্ট্যান্ট ভিট্রিও রেটিনা সার্জন ডাঃ নিয়াজ আবদরু রহমান বাংলাদেশে ডিএমই এবং এএমডি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। ডাঃ নিয়াজ আবদরু রহমান বলেন ‘আমাদের কাছে আসা রোগীদের মধ্যে ডিএমই এবং এএমডি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বদ্ধিৃ পাচ্ছে। এই রোগীদের স্থায়ী অন্ধত্ব থেকে রক্ষা করা সম্ভব। তবে এর চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে হলে সকলের একসাথে কাজ করতে হবে, বিশেষ করে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি এবং অফথামোলজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ এর মহাসচিব ডাঃ তারিক রেজা আলী, সহযোগী অধ্যাপক, চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগ, বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশে ডিএমই আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটির উদ্যোগসমহূ তুলে ধরেন। সমাপনী বক্তব্যে রোশ বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোহাম্মদ আফরোজ জলিল বলেন ‘বাংলাদেশে অন্ধত্বের হার হ্রাসকরণে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণের অবদান অনস্বীকার্য। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এই অগ্রযাত্রা অব্যহত রাখতে হবে, তাই ডিএমই’র ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রতিরোধ এবং যথাযথ স্ক্রীনিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।’