গবেষণায় এগিয়ে চীন রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র জার্মানি অস্ট্রেলিয়া
করোনাভাইরাস রুখতে গোটা বিশ্বের গবেষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেশ কয়েকটি দেশ এরই মধ্যে তাদের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন নিজ নিজ দেশে প্রয়োগও করছে। এই দেশগুলোর মধ্যে এগিয়ে রয়েছে চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। এসব দেশ আবিষ্কৃৃত ভ্যাকসিনের পরীক্ষা কোনো কোনোটি দ্বিতীয় ধাপ পার করে তৃতীয় ধাপ বা চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। এই ধাপটি শেষ হলেই বাজারে মিলবে করোনার ভ্যাকসিন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্যানুযায়ী, চীন, রাশিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারতসহ অন্যান্য দেশে ভ্যাকসিনের প্রস্তুতি পর্ব যে গতিতে চলছে, তাতে অনেকেই দাবি করছেন- খুব দ্রুত বাজারে চলে আসবে করোনা প্রতিরোধক। ১৩৫টিরও বেশি প্রতিষেধকের কাজ চলছে পুরোদমে। অন্তিম পর্যায়ের ট্রায়ালে রয়েছে এর কয়েকটি। বিশেষ করে রাশিয়ার স্পুটনিক-ভিসহ দুটি ভ্যাকসিন, চীনের এডি-৫ এনকোভসহ অন্তত গোটা তিনেক ভ্যাকসিন, আমেরিকার এমআরএনএ-১২৭৩, ইংল্যান্ডের চ্যাডক্স-১, ভারতের কোভ্যাকসিন ও জাইকোভ-ডি নিয়ে গবেষকরা খুবই আশাবাদী। কোনো কোনো সূত্র বলছে, এখন চ্যাডক্সের পরেই রয়েছে মার্কিন সংস্থা মডার্না আইএনসির তৈরি এমআরএনএ-১২৭৩ ভ্যাকসিন। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় ধাপে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয়েছে এটির।
একই পর্যায়ে রয়েছে জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়ার ভ্যাকসিন। ফেজ টু-তে রয়েছে জার্মান ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার বিটিএন-১৬২। এইসঙ্গে ব্রিসবেন বিশ্ববিদ্যালয় মলিকিউলার ক্ল্যাম্প পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে সম্পন্ন করেছে প্রি-ক্লিনিক্যাল পর্যায়ের ট্রায়ালের কাজ। এদিকে ক্যামব্রিজ ও ম্যাসাচুসেটসের গবেষকরাও অংশ নিয়েছেন চীনের এডি-৫-এনকোভসহ আরও ৭টি ভ্যাকসিন তৈরির কাজে। এডি-৫ এনকোভের প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে উহানে বিভিন্ন বয়সের ১০৮ জনকে টিকা দিয়ে ভালো ফল পাওয়া গেছে। ভালো খবর হলো, যাদের এডি-৫ এনকোভের দুটো ডোজ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে প্রচুর অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। কভিড থেকে সেরে ওঠা মানুষের শরীরে যত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তার চেয়ে ঢের বেশি। আর মন্দ খবর হলো, ট্রায়ালে যাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, তাঁদের বেশ ভালো রকম ঝিমুনি হয়েছে। মাথাও ধরেছে অনেকের।
এ ছাড়া ভারতে ১২টি সংস্থায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে একযোগে। কোভ্যাকসিনের বিষয়ে দ্রুত এগিয়ে চলেছে দেশটি। ফলে এটির বাজারে আসতে খুব বেশি দেরি হবে না। জাইকোভ-ডি নামেও আরেকটি ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করতে যাচ্ছে ভারত। গবেষকরা বলছেন, ভ্যাকসিনগুলোর কাজ হবে অ্যান্টিবডি এবং টি-সেল রেসপন্স তৈরি করা।
অ্যান্টিবডি শরীরে থাকা ভাইরাসকে খুঁজে লড়াই করে মেরে ফেলবে। আর টি-সেল কাজ করবে দুই-তিনভাবে। প্রথমত, এটি অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাহায্য করবে। দ্বিতীয়ত, সংক্রমিত কোষে গিয়ে ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করার পাশাপাশি তাকে ভালো করে চিনে নিজের স্মৃতিতে রেখে দেবে। এই টি-সেলগুলোই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে তাকে অকেজো করে দেবে।