প্রায়ই সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাচ্ছে আপনার সন্তান, গবেষণা কী বলছে?

0
355

সকালের খাবারকে দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তবে অনেকে সময়ের অভাবে, খাওয়ার অভ্যাস বা ক্ষুধা না থাকার কারণে সকালের খাবার এড়িয়ে যায়। তবে এমন অভ্যাস শিশুদের আচরণগত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যখন শিশুরা সকালের নাস্তা এড়িয়ে যায় তখন তাদের আচরণগত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা তিনগুণ বেড়ে যায়। এর মধ্যে আছে উদ্বেগ, আত্মসম্মানবোধ কমে যাওয়া এবং সবসময় শরীর খারাপ লাগা।

গবেষকরা চার থেকে চৌদ্দ বছর বয়সী ৩,৭০০ স্প্যানিশ শিশুর বাবা-মায়ের উপর জরিপ করেছেন। এবং জানতে পেরেছেন, খাওয়ার অভ্যাস কীভাবে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।

প্রায়ই সকালের নাস্তা এড়িয়ে গেলে শিশুদের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ নাস্তা এড়িয়ে গেলে দিনের বাকি সময়ে পর্যাপ্ত পুষ্টি তাঁরা পায় না। স্পেনের কুয়েনকায় অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ ক্যাস্টিলা-লা মাঞ্চার গবেষণার সম্পাদক ড. হোসে ফ্রান্সিসকো লোপেজ-গিল বলেন, ঝুঁকি কমাতে শিশুদের প্রতিদিন সকালের নাস্তা খাওয়া উচিত।

লোপেজ-গিল বলেছেন, বাড়িতে তৈরি খাবার খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সকালের নাস্তা বাদ দিয়ে শিশুকে রেস্টুরেন্টে খাওয়ালে কিশোর-কিশোরীদের কিছু মানসিক  আচারনগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। একইভাবে, কিছু খাবার বা পানীয়র কারণে আচরণগত সমস্যা হতে পারে।

গবেষণায় বাচ্চাদের বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তাদের বাচ্চারা সকালের নাস্তা খেয়েছে বা এড়িয়ে গেছে? পরে অন্য কোথায় খেয়েছে? তাদের আরও জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তাদের বাচ্চারা কী খায় এবং পান করে? আইটেমগুলির মধ্যে হট চকলেট, চা, দুধ, দই, ডিম, পনির ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বাবা-মাদের তাদের বাচ্চাদের আচরণগত এবং সামাজিক সমস্যা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। প্রশ্নগুলোর মধ্যে শিশুদের ২৫টি সমস্যার কথা বলা হয়েছিল। এরপর বাবা-মাদের জিঙ্গেসা করা হয়েছিল এগুলোর মধ্যে কোনটি আছে কিনা? যার মধ্যে হাইপার অ্যাক্টিভিটি, মানসিক সমস্যা বা বন্ধুদের সাথে অসুবিধা এই সমস্যাগুলো শিশুদের মধ্যে পাওয়া গেছে।

গবেষকরা আচরণগত সমস্যার জন্য নম্বর দিতে ২৫টি প্রশ্নের উত্তরের যোগফল নিয়েছিলেন। তাঁরা বয়স, লিঙ্গ, অঞ্চল এবং অভিবাসী অবস্থা বিবেচনায় এনেছে যাতে এই কারণগুলি ফলাফলকে প্রভাবিত না করে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, বাচ্চারা যারা প্রায়ই সকালের নাস্তা বাদ দিয়েছিল তাদের আচরণগত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা ৩.২৯ গুণ বেশি ছিল যারা বাদ দেয়নি তাদের তুলনায়। আবার যারা সকালের নাস্তা বাড়িতে না করে রেস্তোরায় করছে তাদের আচরণগত সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা ছিল ২.০৬ গুণ বেশি যারা বাড়িতে নাস্তা করে তাদের তুলনায়। রেস্তোরা বা হোটলে সকালের নাস্তা কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে