প্রিডায়াবেটিস : সতর্ক হওয়ার সময় এখনই

0
217
prediabetes

প্রিডায়াবেটিস হলো রক্তের গ্লুকোজ স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি কিন্তু ডায়াবেটিক মাত্রায় এখনো পৌঁছেনি, এমন পর্যায়। তবে এটিকে গুরুত্বহীনভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ডায়াবেটিসের চেয়েও মারাত্মক হতে পারে প্রিডায়াবেটিস। প্রিডায়াবেটিসেও দেহে ডায়াবেটিস হওয়ার অস্বাস্থ্যকর পরিবর্তন সাধিত হয়ে থাকে।

শুধু তাই নয়, অনেক প্রিডায়াবেটিক রোগী ডায়াবেটিসজনিত দীর্ঘস্থায়ী (ক্রনিক) জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে যান।

প্রাথমিক অবস্থায় শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায়। ডায়াবেটিসের সংকেত বলা হয় সেসব লক্ষণকে। হয়তো অনেকেই প্রাথমিক এসব লক্ষণ টের পান না। যার ফলাফল হয় মারাত্মক। ডায়াবেটিসের চেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয় প্রিডায়াবেটিসের সময়কালকে।

দেহে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। যেগুলোকে ক্লাসিক্যাল লক্ষণ বলা হয়, তা সাধারণত টাইপ-১ ডায়াবেটিসের বেলায় প্রযোজ্য, টাইপ-২-এর বেলায় উপস্থিত না-ও থাকতে পারে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে।    আর প্রিডায়াবেটিসের বেলায় প্রায়ই কোনো উপসর্গ দেখা দেবে না, যার ফল হয় মারাত্মক। অনেক ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসের চেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয় প্রিডায়াবেটিসকে।

রক্তে এইচবিএওয়ান্সি যদি ৫.৭ থেকে ৬.৪%; অভুক্ত অবস্থায় রক্তের গ্লুকোজ ৫.৬ থেকে ৬.৯ মিলিমোল/লি বা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাবার ২ ঘণ্টা পর ৭.৯ থেকে ১১.০ মিলিমোল/লি হয় তাকে প্রিডায়াবেটিস বলা হবে।

লক্ষণ

–    ঘন ঘন প্রস্রাব করা

–    উচ্চ রক্তচাপ

–    কাজ না করেও খুব ক্লান্ত

–    হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি

–    খুব তৃষ্ণার্ত হয়ে যায়

–    ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া

এ ছাড়া মহিলাদের পিসিওড থাকলে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যায়। এটি প্রিডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে। যদি হঠাৎ আপনার সমস্যা দেখা দেয় সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যান। এটি প্রিডায়াবেটিস হওয়ার কারণও হতে পারে। উচ্চ কোলেস্টেরল, যদি আপনি এই লক্ষণগুলো দেখতে শুরু করেন তবে আপনার রক্তে শর্করার পরীক্ষা করা জরুরি।

প্রিডায়াবেটিস প্রতিরোধে করণীয়

এ কাজে যাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি তাদের চিহ্নিত করে প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়। আর এভাবে প্রিডায়াবেটিস, ডায়াবেটিস এবং ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা সংক্রান্ত চিকিৎসা খরচ কমানো সম্ভব। এটা সত্যি যে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব; অন্তত অর্ধেক রোগীর ক্ষেত্রে। স্বাভাবিক ওজন ধরে রাখা এবং প্রতিদিন কিছু শারীরিক পরিশ্রম করে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

পরামর্শ দিয়েছেন

ডা. শাহজাদা সেলিম

সহযোগী অধ্যাপক

এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে