করোনাভাইরাস শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায়। এসব বিষয়ে নতুন এক গবেষণার পর ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বোল্ডারের বিজ্ঞানী জোস লুইস জিমেনেজ বলেছেন, ‘ঘরের ভিতর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, ঘরের ভিতর আবদ্ধ থাকে। সেখানে বাতাসের চলাচল কম থাকে। তবে ঘরের বাইরে কম বিপজ্জনক। কারণ, এখানে বাতাসের চলাচল বেশি থাকে।’ সূত্র : এএফপি।
গবেষণায় বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব না থাকলে ঘরের বাইরের চেয়ে ঘরের ভিতর করোনাভাইরাসের সংক্রমণের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বিজ্ঞানী জোস লুইস জিমেনেজ বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাঁরা ঘরের বাইরে বেশি সময় কাটান, তাঁদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি তুলনামূলক কম থাকে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘যখন আমি ঘরের বাইরে জগিং করতে যাই, তখন দেখি ঘরবাড়িগুলোর মধ্যে ৩২ ফুট দূরত্ব রয়েছে। খুব কমসংখ্যক মানুষ বাইরে রয়েছে। এসব সময় আমি সঙ্গে মাস্ক রাখি। কিন্তু তা পরি না। যদি আমি কারও কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলি, তখন মাস্ক পরি। যদি বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে যাই, তখন মাস্ক পরি। খবরে বলা হয়েছে, ঘরের বাইরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। গত অক্টোবর মাসে চীনের গবেষকেরা ইনডোর এয়ার নামের এক সাময়িকীতে ৭ হাজার ৩২৪টি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের তথ্য তুলে ধরেন। এর মধ্যে সাংকিউ হেনান নামে একটি গ্রামে ঘরের বাইরে কেবল একজনের ক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। তিনি ২৭ বছরের এক ব্যক্তি। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ঘরের বাইরে করোনায় সংক্রমিত একজনের সঙ্গে সময় কাটানোর পর তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন। স¤প্রতি আইরিশ টাইমসের তথ্যে জানা গেছে, এ বছরের ২৪ মার্চ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে ২ লাখ ৩২ হাজার ১৬৪ জন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২৬২ জন ঘরের বাইরে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। অর্থাৎ মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের কীটবিজ্ঞানের অধ্যাপক ডোনাল্ড মিলটন বাইরে ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে যেখানে লোকেরা চিৎকার-চেঁচামেচি করে ও বাতাস আবদ্ধ থাকে। তবে সামাজিক দূরত্ব থাকলে ঘরের বাইরে সব সময় মাস্ক পরে থাকার প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন না।
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আমেশ আদালজা বলেছেন, বদ্ধ ঘরে সামাজিক দূরত্ব না থাকলে মানুষকে মাস্ক পরতে হবে। বিশেষ করে যাঁরা টিকা নেননি, তাঁদের মাস্ক পরা জরুরি।