করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে এবং তা উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক দিনে সারা দেশে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৮৭ জন। এর আগে এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ ডিসেম্বর। ওই দিন ২ হাজার ২০২ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়। গত বুধবার পর্যন্ত এক দিনে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১৬ জন।
ওই সময়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২০ হাজার ৯২৫ জনের। এতে সংক্রমণ শনাক্ত হয় ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ মানুষের দেহে, যা গত ৯৪ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি সংক্রমণ হার শনাক্ত হয় গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর। ওই দিন শনাক্তের হার ছিল ১০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। করোনাভাইরাস রোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হলেও বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ তা মানছে না।
রাজধানীর গণপরিবহনগুলোয় আগের মতোই গাদাগাদি করে চলছে মানুষ। ঢাকার বাইরের অবস্থা আরও বেপরোয়া। অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। বাজারে রেস্তোরাঁয় কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ নেই। মনে হচ্ছে সবকিছু চলছে ফ্রিস্টাইলে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ নিঃসন্দেহে সাফল্য দেখিয়েছে। ঘনবসতির এই দেশে মৃত্যুহার অনেক উন্নত দেশের তুলনায় খুবই কম। অর্থনীতিকে সমূহ ক্ষতির কবল থেকে রক্ষায় বাংলাদেশ সাফল্য দেখিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, দায়িত্বশীল কোনো কোনো মহল দেশের সাফল্য ভালো চোখে দেখছে না। কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে জনগণকে টিকা না নেওয়া এবং মাস্ক পরিধান না করতে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একজন দায়িত্বশীল নেতা তো ঘোষণা করেছেন মরেন আর বাঁচেন তিনি যেহেতু বিরোধিতা করেছেন সেহেতু টিকা নেবেন না। আত্মগর্বী ওই নেতা ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অপরাজনীতির চর্চা করতে গিয়ে নিজে শুধু নন, অনেক সরল বিশ্বাসী সমর্থককে বিপদে ফেলেছেন। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে করোনাভাইরাস নিয়ে তামাশা বন্ধ করতে হবে। মাস্ক না পরে কেউ বাইরে বেরোলে জরিমানার ব্যবস্থা থাকা জরুরি।