ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে চোখে হতে পারে অঞ্জনি

0
300
Spread the love

চোখের পাতায় অঞ্জনি প্রধানত চোখের পাতার বিভিন্ন অংশে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে ঘটে। চোখের পাতা বা আঁখি পল্লবের যে হেয়ার ফলিকল বা চুলের গোড়া আছে, যেমন—মাইবোমিন গ্রন্থি (তেলক্ষরণের গ্রন্থিগুলো, যা চোখের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে) এবং ল্যাকরিমল বা অশ্রুসংক্রান্ত গ্রন্থি (চোখের জলক্ষরণের গ্রন্থি) এগুলো হলো চোখের পাতায় অঞ্জনি হওয়ার সাধারণ জায়গা।

লক্ষণ

চোখের পাতায় অঞ্জনির লক্ষণ ও উপসর্গগুলো স্থানভেদে বিভিন্ন হয়।

♦ ব্লেফারাইটিস—এটা হলো চোখের পাতার প্রান্তে চোখের লোমের বা চুলের গ্রন্থিকোষে অঞ্জনি।

এর সাধারণ উপসর্গগুলো হলো লাল, ফোলা এবং চোখের পাতার গোড়া ব্যথা করা।

♦ চোখের গোড়া বা পাপড়ির ওপর মোটা আবরণ পড়া অথবা পরত পড়া।

♦ চোখে অস্বস্তি বোধ করা।

♦ আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি অথবা অসহনশীলতা।

♦ প্রাথমিকভাবে চোখের পাতার আক্রান্ত স্থানে লাল ভাব এবং ব্যথা বোধ হয়ে থাকে।

♦ আক্রান্ত চোখের পাতা লাল হয়ে যায় এবং ফুলে ওঠে।

♦ স্টাই বেদনাদায়ক হয়ে থাকে ও কখনো কখনো পুঁজ বের হয়।

♦ আক্রান্ত হওয়া চোখে লাল ভাব এবং চোখ থেকে পানি পড়া।

কারণ

চোখের পাতায় অঞ্জনির মুখ্য কারণ হলো ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাসের কারণে সংক্রমণ। অন্য কারণগুলোর মধ্যে আছে―

♦ সেব্রোয়েক ডার্মাটিটিস

♦ রোজেশিয়া

♦ অস্বাভাবিক তেল নিঃসরণ।

অঞ্জনি নির্ণয় ও চিকিৎসা

প্রধানত চোখের পরীক্ষা এবং উপসর্গের ইতিহাসের ভিত্তিতে বিভিন্ন রকমের চোখের পাতায় অঞ্জনি নির্ণয় করা হয়ে থাকে।

♦ জীবাণু-প্রতিরোধী চোখের ড্রপ সংক্রমণের চিকিৎসা করতে প্রধানত ব্যবহার করা হয়।

♦ যখন অসহ্য প্রদাহ বা ব্যথা হয় তখন স্টেরয়েড চোখের ড্রপ ব্যবহার করা হয়।

♦ যখন ব্লেফারাইটিস খুশকির কারণে হয় সে ক্ষেত্রে সাধারণভাবে খুশকিনাশক শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হতে পারে।

করণীয়

♦ কুসুম সেক ব্যথা কমাতে সাহায্য করে এবং চোখের পাতার মধ্যে তেল সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।

♦ এক টুকরা তুলার বল বা কাপড়ের বল গরম পানিতে ভিজিয়ে দিনে অন্তত চারবার সেক দিন, কখনো প্রয়োজন হলে অ্যান্টিবায়োটিক মলম লাগানো যেতে পারে।

♦ চোখের পাতার ওপর হালকা ম্যাসাজ তেলগ্রন্থির মধ্যকার প্রতিবন্ধকতা সরাতে সাহায্য করে।

♦ বাচ্চাদের চুলে ব্যবহার করা শ্যাম্পুর সঙ্গে ঈষদুষ্ণ পানি মিশিয়ে বা অল্প স্ক্রাবিং চোখের চটচটে কঠিন আবরণ বা পরত পরিষ্কার করতে ব্যবহার করা হয়।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অঞ্জনি অল্প দিনের মধ্যে সেরে যায়। কিন্তু যদি অঞ্জনি বারবার হয়, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

লেখক :  ডা. শরমীন সোহেলী

সিনিয়র কনসালট্যান্ট

বসুন্ধরা আই হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, ঢাকা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে