আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের মাঝামাঝি করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন ‘কোভ্যাকসিন’ ভারতের বাজারে আনতে চলেছে ভারত বায়োটেক।
সংস্থার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, সব প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে ভারত সরকার অনুমতি দিলে তবেই বাজারে আসবে এই ভ্যাকসিন। ভারত বায়োটেকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মুহূর্তে সফলভাবে কোভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল পরিচালনার দিকেই লক্ষ্য দিচ্ছে তারা।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির (এনআইভি) একসঙ্গে কভিড-১৯ টিকা কোভ্যাকসিন তৈরি করছে। নিষ্ক্রিয় সারস-কোভ-২ ভাইরাস ব্যবহার করে প্রস্তুত হয়েছে এই ভ্যাকসিন। আইসিএমআর ল্যাবে ভাইরাসের আইসোলেশন কাজটি করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে ভারত বায়োটেকের ইন্টারন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাই প্রসাদ বলেন, যদি আমরা পরীক্ষার শেষ পর্যায়ে শক্তিশালী পরীক্ষামূলক প্রমাণ এবং তথ্য ও কার্যকারিতা, সুরক্ষা তথ্য জমা দিতে পারি তবেই সব অনুমোদন পাব। আশা করছি ২০২১ সালের মাঝামাঝি এই ভ্যাকসিনটি ভারতের বাজারে আনতে সক্ষম হব। তিনি জানান, দেশের ১৩ থেকে ১৪টি রাজ্যে ২৫ থেকে ৩০টি সাইটে পরিচালিত হচ্ছে কোভ্যাকসিনের ট্রায়াল। দুটি করে ডোজ সরবরাহ করা হবে। প্রতিটি হাসপাতালে ২ হাজার জনকে সেই ডোজ দেওয়া হবে।
ভ্যাকসিনে বিনিয়োগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ভারত বায়োটেকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বলেন, ভ্যাকসিনের উন্নয়ন এবং নতুনভাবে উৎপাদনের সুবিধার জন্য আমাদের প্রায় ৩৫০-৪০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে তিন ধাপের ক্লিনিকাল ট্রায়াল পরিচালনার জন্য আমাদের বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এই টাকার মধ্যে। সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাকে এই ভ্যাকসিন বিক্রির সংস্থার পরিকল্পনার বিষয়ে সাই প্রসাদ বলেন, আমরা সরকারি এবং বেসরকারি উভয় সংস্থাকেই সরবরাহ করার পরিকল্পনা করছি। সম্ভাব্য সরবরাহের জন্য আমরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার মধ্যেও আছি।
রাশিয়ার ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হচ্ছে ভারতে : চলতি নভেম্বর মাসেই ভারতজুড়ে শুরু হতে পারে রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। ১০০ জনের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে। এখন শুধু এথিক্স কমিটির অনুমতির অপেক্ষা। এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজকে নির্বাচিত করা হয়েছে। সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজ থেকে জানানো হয়েছে, সেখানে ১২ জনের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত এই সংখ্যাটা ২০ জনও হতে পারে। সব মিলিয়ে ঠিকঠাক অনুমতি মিললে স্পুটনিক ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক পরীক্ষা নভেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ হয়ে যাওয়ার আশা রাখছে সংস্থা। এই বিষয়ে অধ্যাপক মলয় মন্ডল বলেন, সাবধানতার সঙ্গে এগোনো দরকার। যেভাবে প্রচার হচ্ছিল, তা একেবারেই ঠিক নয়। দ্বিতীয় ট্রায়াল শেষ হতে ডিসেম্বরও হতে পারে। অনেক বৈজ্ঞানিক দিক আছে। তা দেখেশুনেই বিজ্ঞানী গবেষক চিকিৎসকরা এগোচ্ছেন। যারা বলছেন যে ভ্যাকসিন চলে এসেছে, তারা ঠিক কাজ করছেন না।