যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) চালুর প্রক্রিয়া থমকে গেছে। ১০ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে চার মাস আগে ছয়টি ভেন্টিলেটর যন্ত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বিশেষায়িত শয্যা ও মনিটর এখনো আসেনি। একটি ওয়ার্ড থেকে রোগী সরিয়ে আইসিইউ স্থাপনের জন্য অবকাঠামোগত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শীতে করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ আসার শঙ্কা রয়েছে। এখনই আইসিইউ প্রস্তুত করতে না পারলে নতুন করে আক্রান্ত রোগীদের সেবা পেতে আবারও ভোগান্তিতে পড়তে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, আইসিইউ ব্যবহারের উপযোগী করার জন্য এরই মধ্যে শয্যা, মনিটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একাধিক চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সর্বশেষ ৬ অক্টোবর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, আইসিইউ শয্যা ও মনিটর না থাকায় নতুন আইসিইউ চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে আইসিইউ ভেন্টিলেটরগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
গত রোববার যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটার কক্ষের বিপরীত পাশের ছয় নম্বর মহিলা সার্জারি ওয়ার্ড থেকে রোগী সরিয়ে আইসিইউ কক্ষের জন্য অবকাঠামোগত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ওই ওয়ার্ডের ভেতরে ১০টি আইসিইউ শয্যা স্থাপনের মতো জায়গা কাচ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এসডিইউ ও কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট চালুর জন্য আরও ২০টি শয্যা স্থাপনের জায়গা রাখা হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউ নেই। এ কারণে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সংকটময় মুহূর্তে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। আইসিইউর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ। কিন্তু শয্যা আর মনিটর না আসায় চালু করা যাচ্ছে না। অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও গবেষণা বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা সব্যসাচী দাস বলেন, ঢাকার মহাখালীতে নতুন একটি কোভিড-১৯ হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ২২০টি আইসিইউ শয্যা, মনিটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প বাতিলও করা হয়েছে। এ কারণে ওই শয্যা, মনিটরসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি যশোর জেনারেল হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু কবে নাগাদ এ প্রক্রিয়া শেষ হবে, তা বলা যাচ্ছে না। কারণ, প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নের জন্য হাসপাতাল জরিপ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল পরিচালকের সম্মতি নেওয়াসহ অনেক কাজ এখনো বাকি আছে।
যশোরের সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ এপ্রিল যশোরে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হন। এরপর বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা। সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, জেলার কোভিড-১৯ হাসপাতাল থেকে সংকটাপন্ন রোগীদের ঢাকা ও খুলনায় স্থানান্তর করতে হয়। কিন্তু যশোরেই আইসিইউ চালু হলে স্থানান্তরের প্রয়োজন হতো না।