রমজানে মানসিক স্বাস্থ্য

0
783

রমজানের পবিত্র মাসে সারা বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি মুসলিম সুবেহ্ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখেন। রমজান শৃঙ্খলা ও আত্ম উপলব্ধির বিকাশ ঘটায়। আমাদের শিক্ষা দেয় সামাজিকতার ও সহমর্মিতার। সেই সঙ্গে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সুবিধাবঞ্চিতদের সাহায্য ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার কথা।

পবিত্র রমজান মাসজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা এক কাতারে এসে নামাজ পড়েন এবং একসঙ্গে ইফতার করেন। এই মহামারি সময়ে অধিকাংশ দেশই চলাফেরার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে। যার ফলে মুসল্লিদের একত্রে রমজান পালনের ধরনে এসেছে পরিবর্তন। কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধ করতে লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ববিধি মানতে হচ্ছে। যে কারণে গত বছরের মতো এবছরও রমজান পালনে নানাবিধ জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। মুসল্লিরা মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারছেন না কিংবা পরিবার পরিজনের সাথে একত্রে ইফতার বা সেহরিও করতে পারছেন না। এসময়টা আমাদের সকলের জন্যই বেশ কঠিন। আর উৎসবের সময় প্রিয়জনদের থেকে দূরে থাকা এই খারাপ লাগাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। আর এসবের প্রভাব পড়ে মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর।

সামাজিক বিচ্ছিন্নতা আমাদের মাঝে বিষণ্নতা সৃষ্টি করে। মানুষকে অনুভূতিহীন করে তোলে। যার ফলে ইফতার ও সাহরিতে অতিরিক্ত খাওয়া, ইফতারের পর ধূমপান, শরীরচর্চার অভাব, মোবাইল বা টেলিভিশনের পর্দায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় ইত্যাদি অভ্যাস গড়ে ওঠে। অনিয়মিত ঘুম বিশেষত সাহরির জন্য ঘুমের ধরন পালটে যাওয়া, অহেতুক কেনাকাটা, এবং আরো নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। বয়ষ্ক মানুষ এবং যাদের সোশাল অ্যাংজাইটি কিংবা মুড ডিসআর্ডারের লক্ষণ আছে, তারাই এ ক্ষেত্রে বেশি সমস্যায় পড়েন। মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে ইমিউন সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, যা কভিড-১৯ এর বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশ বিপজ্জনক।

এর থেকে মুক্তি পেতে কাজে ব্যস্ত থাকুন। এছাড়া নিজেকে ভালো রাখার জন্য যা যা করতে পারেন– 

# বাবা-মা-সন্তানদের সাথে আরো বেশি সময় কাটাতে পারেন এবং পরিবারের বিষয়গুলো নিয়ে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করতে পারেন।

# পরিবারের সকলে মিলে কোনো নাটক বা সিনেমা দেখতে পারেন।

# যেকোনো শখ যেমন পড়া-লেখা কিংবা আঁকা-আঁকিতে ব্যস্ত থাকতে পারেন।

# জুম বা অন্য যেকোনো ভিডিও কনফারেন্সিং অ্যাপ দিয়ে ওয়াচ পার্টির আয়োজন করতে পারেন।

# বাসার ভেতরে কিছু খেলাধুলা করতে পারেন।

# হালকা ব্যায়াম করতে পারেন।

# অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে পারেন।

# ইফতার ও নামাজের প্রস্তুতিতে অংশ নিতে পারেন।

# ভার্চুয়াল ইফতারের আয়োজন করতে পারেন।

# ঘরে এক সাথে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মনে রাখবেন সামাজিক দূরত্ব মেনেও মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব এবং অন্যদেরকেও একই ভাবে সহায়তা করা সম্ভব।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে