রোজায় ডায়াবেটিক রোগীরা যা খাবেন

0
160
ইফতারে যা খাওয়া যাবে আর যা খাওয়া যাবে না

রোজার সময় ডায়াবেটিক রোগীদের প্রয়োজন বিশেষ সতর্কতা। যাঁরা ইনসুলিন নিচ্ছেন তাঁদের অবশ্যই হাইপো বা হাইপার গ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলো জেনে নিতে হবে। নিয়মিত ব্লাড সুগার ফলোআপ করতে হবে। রোজায় ইনসুলিন ওষুধের সঙ্গে ব্লাড সুগার অ্যাডজাস্ট করে কি না, তা লক্ষ করুন। প্রথম দিকে ইফতারের আগ মুহূর্তে, ইফতারের দুই ঘণ্টা পরে ও সাহরির দুই ঘণ্টা পর ব্লাড সুগার পরীক্ষা করুন। এ ছাড়া সারা দিনে যখনই খারাপ লাগবে, ব্লাড সুগার পরীক্ষা করে দেখুন। এর পাশাপাশি নজর দিন খাদ্যাভ্যাসের ওপর।

কেমন হবে খাবারের প্ল্যান?

* রোজায় সাহরি ও ইফতারে শুধু পানি খাওয়ার ওপর জোর দেবেন না। রোজায় খাদ্যাভ্যাস হতে হবে সুষম। হাই ফাইবার বা উচ্চ আঁশসমৃদ্ধ ও লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমৃদ্ধ খাবার রাখুন খাদ্যতালিকায়। যেমন ভুসিসমেত আটা বা লাল আটা, লাল চাল, ওটস, চিড়া, বাদাম, মিক্সড ডাল, সিরিয়াল, শাকসবজি ও ফল। পাশাপাশি থাকবে ডিম, মাছ, মাংস ও দুধ। যেন ধীরে ধীরে ভেঙে খাবারগুলো সারা দিন অ্যানার্জি দিয়ে যায় আপনাকে।

* ইফতারে প্লেটে রাখুন খেজুর, কয়েক পদের ফল, শসা, দই, চিড়া, মাছ বা মাংসের কাবার, লাচ্ছি, মাঠা, লাবাং, ছানা, আখের রস, ডাবের পানি, আখের গুড়ের শরবত, লেবু পানি, কিছু বাদাম, সবজি খিচুড়ি ইত্যাদি।

* ইফতারে আপনি যত মাংসের কাবাব জাতীয় হাইডেনসিটির ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার খাবেন, তত বেশি পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে আপনাকে।

* খাদ্যতালিকা থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি (শর্করা ও চর্বি) সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করুন। বিশেষ করে ইফতারে।

* ইফতারে সরল শর্করা খাবার পরিহারের চেষ্টা করুন। যেমন চিনি, গুড়, সুগার, সিরাপ ও মিষ্টি। এর বদলে রাখুন আঁশসমৃদ্ধ খাবার। যেমন লাল চাল বা লাল আটার তৈরি খাবার, বিচিজাতীয় খাবার, ওটস, নানা ধরনের ডাল, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি।

* ইফতারে দই চিড়া, দই সালাদ, ফ্রু্টস সালাদ, ছানা, রসাল ফল, ফলের রস, লেবু-ইসবগুলের শরবত, লাচ্ছি, মাঠা, ফালুদা, চিড়ার শরবত, ওটসের শরবত, সাগুদানার ডেজার্ট খেতে পারেন, তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া।

* ইফতারের পরের সময়টুকু পানি ও রসাল খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান।

* রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।

* সাহরি ও রাতের খাবারে সবজি, মাছের পাতলা ঝোল, মুরগির তরকারি রাখতে পারেন মেন্যুতে। আম-ডাল, শজনে-ডাল, করলার ঝোলজাতীয় তরকারি রাখুন পাতে। শেষে টক দই বা এক কাপ ননি ছাড়া দুধ। যাঁরা ভাত এড়িয়ে চলতে চান, তাঁরা স্যুপ, স্টু, সবজির স্যুপ, ওটস কিংবা কলা-দুধ খেতে পারেন। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা ‘আম-দুধ-ভাত’ বা ‘কলা-দুধ-ভাত’- এ জাতীয় খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন।

 

পরামর্শ দিয়েছেন

শায়লা শারমীন

সিনিয়র নিউট্রিশনিস্ট
ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল, ঢাকা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে