শরীরচর্চার অভ্যাস ফেরাতে করণীয়

0
757
সাময়িক বিরতি স্থায়ী হয়ে গেলেই বিপত্তি বাঁধবে।

শারীরিক অসুস্থতা, আলসেমি, বেড়াতে যাওয়া, আঘাত পাওয়া ইত্যাদি নানান কারণে শরীরচর্চার নিয়মিত অভ্যাসে ছেদ ঘটতে পারে।

শীত আসলে অনেকেরই শরীরচর্চা নিয়মিত থাকে না। আর সেই মার্চ থেকে চলমান করোনাভাইরাসের প্রকোপে শরীরচর্চা ছেড়েছেন অনেকেই। তবে সার্বিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে কর্মক্ষম রাখতে হলে শরীরচর্চায় ফিরতেই হবে।

আর সেই ফিরে আসার জন্য করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরা হল স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনের আলোকে।

চিকিৎসকের পরামর্শ: হৃদরোগ, বৃক্কের সমস্যা, ডায়বেটিস ইত্যাদি দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষদের লম্বা বিরতির পর শরীরচর্চায় ফিরে আসার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শারীরিকভাবে আহত হয়েছেন এমন মানুষদের জন্যও একই কথা প্রযোজ্য। বিরতির পর শরীরের ওপর প্রাথমিকভাবে কতটুকু ধকল দেওয়া সম্ভব তার একটা ধারণা নিতে হবে, প্রয়োজন হতে পারে কিছু পরীক্ষারও। পাশাপাশি করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য করণীয় বিষয়গুলোও জেনে নিতে হবে।

শুরুটা হোক ধীরে: বিরতির আগে আপনার শরীরচর্চা রুটিন যা ছিল সেটাই এখন আবার শুরু করা যাবে না। শুরুটা করতে হবে তিনভাগের একভাগ দিয়ে। যারা ব্যায়ামাগারে যান, তাদের উচিত হবে প্রশিক্ষকের কাছ থেকে নতুন রুটিন নেওয়া। হতাশ হওয়ার কিছু নেই, কারণ দ্রুতই শরীর অভ্যস্ত হয়ে উঠবে এবং আপনি আগের রুটিনে ফিরতে পারবেন। আর প্রাথমিকভাবে শরীরচর্চার মাত্রা কম হলেও শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে ফুরফুরে অনুভূতিটা পাবেন শুরু থেকেই।

শরীরের ইঙ্গিতগুলো বুঝতে হবে: কথা বলার সময় একটি ‍পুরো বাক্য শেষ করার আগেই যদি দম ফুরিয়ে আসে তবে শরীরচর্চা সেখানেই থামাতে হবে। তবে যেদিন ভালো অনুভব করবেন সেদিন শরীরচর্চার মাত্রা অল্প বাড়াতে পারেন। কোনোদিন শরীরচর্চার পর যদি প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগে তবে পরের দিন একটু কমিয়ে দিন। বুক ব্যথা বা চাপ অনুভব করা, মাথা ঘোরানো, দম ফুরিয়ে যাওয়া অনুভূতি হওয়া ইত্যাদি উপসর্গকে মোটেও অবহেলা করবেন না, চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করুন।

অভ্যাসেই বাড়ে কর্মদ্যম: শক্তি, কর্মক্ষমতা বাড়ানোর প্রধান হাতিয়ার হল অনুশীলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। দিন মাত্র ১০ মিনিট শরীরচর্চাও প্রাথমিক অবস্থায় অনেক উপকারী। হাঁটাহাঁটির ব্যাপারে সকল বিশেষজ্ঞই ইতিবাচক মন্তব্য করেন কারণ তা সহজ, যেকোনো সময় শুরু করা যায়। তবে শুধু হাঁটাতেই সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, শারীরিক সমস্যা না থাকলে সাইকেল চালানো, দৌড়ানো, যোগ ব্যায়াম ইত্যাদির দিকে ঝুঁকতে হবে।

বিভিন্ন শরীরচর্চার মিশ্রণ: হাঁটাহাঁটির মতো ‘কার্ডিও’ ব্যায়ামের সঙ্গে পেশি ও হাড়ের জোর বাড়ানোর জন্য ‘স্ট্রেংথ ট্রেইনিং’য়ের দিকেও মনযোগ দিতে হবে। সেটাও যে খুব জটিল হতে হবে তা নয়। সামান্য চেয়ারে ১০ বার উঠবস করাও শরীরচর্চা। শরীরের ওপরের অংশের জন্য বুকডন দিতে পারেন। মাটিতে না পারলে চেয়ারটা ধরে বুকডন দিলেও কাজ হবে। ‘রেজিস্ট্যান্ট বেল্ট’ কিনতে পারেন, যা বিভিন্নভাবে শরীরচর্চায় ব্যবহার করতে পারবেন।

চাই শরীরচর্চার সঙ্গী: একা শরীরচর্চা করতে চাইলে সেই অভ্যাস ধরে রাখা দুষ্কর হতে পারে, তাই সঙ্গী জুটাতে হবে। সঙ্গীরা একে অপরের আলসেমি দূর করতে সচেষ্ট হওয়া উচিত, দুজনেই ফাঁকিবাজ হলে সবই ফাঁকিতে পড়বে। ঘরেই যারা ব্যায়াম করছেন তারা ব্যায়ামের সঙ্গীর সঙ্গে ভিডিও কলে যুক্ত হতে পারেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যায়ামাগারেও যেতে পারেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে