শীতে মসৃণ চুল

0
859

শীতে চুল হয় এলোমেলো, অবিন্যস্ত। হিম আবহাওয়ার কারণে যত্নে আসে অবহেলা। শুষ্ক আবহাওয়ার মৌসুমে অনেকেই পারলারে দৌড়ঝাঁপে নারাজ। আর করোনাকালে তো পারলারে যাওয়াও হচ্ছে না কারও কারও। তবে ভাবছেন কীভাবে এমন চুল ম্যানেজ করবেন! প্রয়োজন কেবল সামান্য একটু যত্ন; আর পরিমিত লাইফস্টাইল। আজ জানব সেসব।

চুলের সুস্থতা নিশ্চিত করে চুলের সৌন্দর্য। আর শীতকালে চুল পড়ার সমস্যায় কমবেশি অনেকেই ভোগেন। এ সময় শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে হওয়া খুশকি থেকে চুলের গোড়া আলগা হয়। চুল পড়ার পরিমাণও বেড়ে যায়। এ সময় অনেকেই পারলারে গিয়ে একটা স্পা করিয়ে আসেন বটে, তবে করোনাকালের কারণে অনেক ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। আর সেক্ষেত্রে ঘরোয়া পরিচর্যাই হতে পারে একমাত্র উপায়।

চুলের ধরন বুঝে যত্ন নেওয়া উচিত। এমনটাই মনে করেন কসমোলজিস্ট শোভন সাহা। শোভন মেকওভারের এই বিউটি এক্সপার্টের মতে, শীতকালে চুলের শুষ্ক ভাব কটিয়ে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এক সপ্তাহই যথেষ্ট। চুলের যত্ন নিতে মেনে চলুন কিছু ঘরোয়া উপায়। তবে তৈলাক্ত চুলের জন্য যে উপায়ে আস্থা রাখা যায়, শুষ্ক চুলের বেলায় বদলে যায় তার সমাধান। তাই আপনার চুলের ধরন বুঝে তবেই প্রয়োগ করুন সে উপায়গুলো।

তৈলাক্ত স্ক্যাল্পের যত্নে

তৈলাক্ত স্ক্যাল্পে লুকিয়ে থাকা খুশকির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। অর্থাৎ খুশকি মাথার ত্বকের (স্ক্যাল্পে) সঙ্গে লেগে থাকে। এ সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে আধা কাপ অলিভ অয়েল হালকা গরম করে এর সঙ্গে এক ফালি লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান। ৪৫ মিনিট রেখে হালকা কোনো শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার এভাবে চুলের যত্ন নিন।

শুষ্ক স্ক্যাল্পের যত্নে

শীতকালে শুষ্ক স্ক্যাল্পের বিড়ম্বনা বেশি। এ ধরনের মাথার ত্বকে (স্ক্যাল্পে) খুশকি বেশি দেখা দেয়। এ থেকে মুক্তি পেতে মেথি পেস্ট করে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে আধা ঘণ্টা পর রিঠা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার পাতি লেবুর রসের সঙ্গে নিমপাতার রস মিশিয়ে মাথায় লাগিয়ে আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করতে পারেন।

নিয়মিত চুল ধুতে হবে

শীতকালে ঠান্ডার ভয়ে অনেকে গোসলের সময় চুল ভেজান না। ফলে শ্যাম্পুও করা হয় না নিয়মিত। এটা ঠিক নয়। শীতকালে প্রতিদিন চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। আবার অনেকেই চুল ধোয়ার জন্য সরাসরি গরম পানি ব্যবহার করেন। এমনটি না করে ঠান্ডা পানি দিয়েই চুল ধোয়ার কাজ সেরে ফেলুন।

চুলের যত্নে করণীয়

শীতের হিম আবহাওয়ায় মৃদু শ্যাম্পু ব্যবহার করা ভালো। এক কাপ গরম পানিতে পাঁচ থেকে ছয়টা রিঠা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন। এটি শ্যাম্পুর কাজ করে থাকে। চুল রং করা থাকলে এই মিশ্রণের ব্যবহারে অনেক সময় চুল রুক্ষ বোধ হতে পারে। এমন হলে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

তেলে চুল ভাজা

চুলের রুক্ষতা দূর করতে তেলের কোনো বিকল্প নেই। সপ্তাহে অন্তত দুদিন তেল দেওয়া চুলে গরম পানি দিয়ে ভেজানো তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট এভাবেই রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে অতিরিক্ত তেল ধুয়ে ফেলুন। চুলে তেল মালিশ করার সময় একটু গরম করে নিলে আরাম ও ফল- দুটোই ভালো আসবে।

প্রাকৃতিক উপাদানে মসৃণ চুল

এক চামচ বেকিং সোডা এক বাটি পানির সঙ্গে মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এরপর এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এক বাটি পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার এটা দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল নরম করার জন্য কন্ডিশনার হিসেবে মধু মেশাতে পারেন। ৪-৫ মিনিট রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।

ঝলমলে চুলের টোটকা

আস্ত পাকা কলা, ছোট আকারের তিনটি দেশি পিঁয়াজ ও এক টেবিল চামচ মধু বেটে একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর চুলের গোড়া এবং সম্পূর্ণ চুলে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। কিছুদিন ব্যবহারে উপকার পাবেন।

চুলের রুক্ষতা রোধে করণীয়

চুলের রুক্ষ ভাব দূর করতে নিয়মিত তেল মাখতে হবে। তবে চুলে তেল দিয়ে বাইরে বের হওয়া ঠিক হবে না। এতে চুলে আরও বেশি ময়লা জমবে। বাইরে বের হলে চুল ভালোমতো বেঁধে, ঢেকে রাখতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে