আইবিএস রোগীরা কী খাবেন না?

পেটের পীড়ায় অনেকেই ভুগে থাকেন। লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনসহ নানা কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়া কায়িক শ্রমের অভাবের কারণেও অনেক হজমপ্রক্রিয়া ঠিকমতো হয় না।

জীবনযাপন প্রণালিতে কিছুটা পরিবর্তন আনলেই আইবিএস থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। সাধারণত এতে পেটের নিচের দিকে মাঝে মাঝে ব্যথা হয়। মলত্যাগের অভ্যাস ও ধরন পরিবর্তিত হয়ে যায়।

কখনো ডায়রিয়া, কখনো কোষ্ঠকাঠিন্য। কখনো আমাশয় দেখা যায়। এছাড়া উদ্বায়ু, পেট ফাঁপা, পেট ভারবোধ হওয়া ইত্যাদি সমস্যা লেগেই থাকে। এ রোগের জন্য মানসিক চাপকে অনেক সময় দায়ী করা হয়।

আইবিএস রোগীরা কী খাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ ও বারডেম হাসপাতালের চিফ নিউট্রিশন অফিসার আখতারুন নাহার আলো।

আইবিএস রোগীদের নির্দিষ্ট কোনো খাদ্য তালিকা নেই। তবে রোগীদের চিহ্নিত করতে হবে কী ধরনের খাবারে তাদের সমস্যা হচ্ছে। ঠিক সেসব খাবার বাদ দিলে ভালো হয়। রোগীকে শক্ত ও ভাজা খাবার না খেয়ে নরম আঁশবিহীন খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

যদি তাদের ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্স বা দুধে অসহনশীলতা থাকে, তাহলে দুধ ও দুধজাত খাবার বাদ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সয়ামিল্ক ও সয়াবিনের তৈরি খাবার খাওয়া যেতে পারে। এ ধরনের রোগীদের ভালো থাকার জন্য peppermint oil কার্যকরী।

এছাড়া নারিকেল তেল IBS হলে ভালো ফল দেয়। নারিকেল তেল দিয়ে রান্না অথবা প্রতিদিন খালি পেটে ২ চা চামচ নারিকেল তেল খেলে ভালো থাকবেন। কারণ এ তেল অন্ত্রের প্রদাহ প্রশমিত করে। ডিসপেপসিয়া বা অজীর্নতা হলে পেপারমিন্ট ট্যাবলেট চুষে খেতে হয়। আইবিএসের রোগীরা কিছু নিয়ম মেনে চলবেন। যেমন-

* আঁশবিহীন সবজি ও ফল খেতে হবে।

* পানির পরিমাণ বাড়াতে হবে।

* ভাত-চালের রুটি-আলু-নুড্লস খাওয়া যাবে।

* খেতে হবে মাছ-ডিম-মুগডাল।

* অতিরিক্ত চর্বি ও মিষ্টি বাদ দিতে হবে।

* ভালো করে চিবিয়ে খাবার খেতে হবে।

* প্রতিদিনের খাবারে কাঁচা পেঁপে থাকলে ভালো হয়।

* কড়া চা-কপি যতটা সম্ভব কম খেতে হবে।

* বাসি খাবার না খাওয়াই ভালো।

* রান্নার ধরন হবে ভাঁপানো, সিদ্ধ ও গ্রিল।

* সালাদ ড্রেসিং, মেয়ানেজ, পনির বাদ দিতে হবে।

* প্রোবায়টিক হিসাবে দই খেলে ভালো হয়।

* কাঁচা রসুন, পেঁয়াজ, শসা, মুলা এবং ঝালযুক্ত খাবার বাদ দিতে হবে।

* নিয়মিত ও প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খেতে হবে।

* রাত জাগা বন্ধ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।

* প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার, তামাক, জর্দা, সিগারেট বাদ দিতে হবে।

* কোমল পানীয় ও অ্যালকোহল বাদ দিতে হবে।

* প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়া ঠিক নয়। এতে হজমের ব্যাঘাত ঘটিয়ে সমস্যা বাড়িয়ে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *