দুর্ঘটনায় বিচ্ছিন্ন অঙ্গ পুনঃপ্রতিস্থাপন সম্ভব

0
20

দৈনন্দিন জীবনে বাসায় কাজের সময়, মিল-ফ্যাক্টরিতে কাজ করতে গিয়ে বা সড়ক দুর্ঘটনার কারণে, সংঘাতে জড়িয়ে কিংবা দুর্বৃত্তের আঘাতের ফলে আমাদের হাতের আঙুল বা হাতের অংশবিশেষ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। একটা সময় ছিল যখন এ ব্যাপারে করণীয় তেমন কিছু ছিল না। কিন্তু চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন বিচ্ছিন্ন হওয়া অঙ্গ সার্জারির মাধ্যমে শরীরে পুনঃপ্রতিস্থাপন সম্ভব।

যেসব অঙ্গ প্রতিস্থাপন সম্ভব

►হাতের আঙুল বা সম্পূর্ণ হাত

►বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মাথার চামড়া

►পুরুষাঙ্গ

►বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কান

সফল অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পূর্বশর্ত

►সঠিকভাবে অঙ্গ সংরক্ষণ

►নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সার্জারির সিদ্ধান্ত গ্রহণ

►অপারেশন-পরবর্তী সঠিক যত্ন ও থেরাপি নেওয়া

সঠিকভাবে অঙ্গ সংরক্ষণ পদ্ধতি

বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অংশটি সম্পূর্ণ পরিষ্কার করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে নরমাল স্যালাইন ব্যবহার করা যেতে পারে। স্যালাইন না পাওয়া গেলে পানি দিয়ে এমনভাবে পরিষ্কার করতে হবে যাতে কোনো ধুলাবালি বা ময়লা এতে লেগে না থাকে। এরপর একটি পরিষ্কার কাপড় পানিতে বা স্যালাইনে ভিজিয়ে অঙ্গটি মুড়িয়ে নিতে হবে। এরপর মোড়ানো অবস্থায় একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে এটি রেখে ব্যাগের মুখ আটকে দিতে হবে।

এরপর আরেকটি প্লাস্টিকের ব্যাগে কিছু বরফ নিয়ে তার মধ্যে অঙ্গ মুড়ে রাখা ব্যাগটি রাখতে হবে এবং ব্যাগের মুখ বন্ধ করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন বিচ্ছিন্ন অঙ্গটি সরাসরি বরফের সংস্পর্শে না আসে।

সার্জারির উপযুক্ত সময়

সাধারণভাবে বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে সার্জারি করা সম্ভব হলে ভালো ফল আসে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেতে পারে।

তবে এর পরে অপারেশন করা হলে কোনো ফল আশা না করাই শ্রেয়।

অপারেশন-পরবর্তী যত্ন

অপারেশন-পরবর্তী সময়ে প্রতিস্থাপিত অঙ্গ সঠিক অবস্থানে রাখতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে এতে কোনো ধরনের চাপ না পড়ে। প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর প্রতিস্থাপিত অঙ্গে রক্তপ্রবাহ ঠিক আছে কি না সেটি পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সেলাই কাটার পরে ফিজিওথেরাপি গ্রহণ করার প্রয়োজন হবে, যা প্রতিস্থাপিত অঙ্গকে কর্মক্ষম করতে সহায়তা করবে।

কোথায় পাবেন সেবা?

মাইক্রো সার্জারি সেবা রয়েছে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে দ্রুত যোগাযোগ করতে হবে। ঢাকার মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) এ ধরনের সেবা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে।

পরামর্শ দিয়েছেন

ডা. মোসাব্বির আহমাদ খান

বিশেষজ্ঞ বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ফরিদপুর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে