ক্ষুধা নেই, অকারণে ওজন বাড়ছে। কাজে নেই মনোযোগ। হাতেও পড়ছে কালচে দাগ। আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে এটি পেটের কোনো অসুখ।
তবে আদতে এটি অটো ইমিউন ডিজিজের লক্ষণ। রোগটির বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ।
বিজ্ঞানীরা একে এক ধরনের অটো ইমিউন রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ রোগে নিজ দেহের প্রতিরোধব্যবস্থা শত্রুভাবাপন্ন হয়ে ওঠে। অ্যাডিসন্স ডিজিজের ক্ষেত্রে এটি ঘটে অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির সঙ্গে। আমাদের দুই কিডনির মাথার ওপর মুকুটের মতো বসে আছে অ্যাড্রেনাল গ্রন্থিদ্বয়।
এই গ্রন্থির কাজ অকার্যকর হলে ঘাটতি দেখা যায় এর হরমোন নিঃসরণে।
অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির যত কাজ
এই স্তর থেকে যে হরমোন নিঃসরণ হয় তাকে বলে গ্লুকোকোর্টিকয়েড। শরীর যেভাবে শর্করা, আমিষ ও চর্বি ব্যবহার করে এবং একে সঞ্চয় করে, সে প্রক্রিয়ার ওপর রয়েছে এই হরমোনের প্রভাব। এ ছাড়া রক্তের গ্লুকোজের ওপর আছে এর প্রভাব। রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঊর্ধ্বমুখী করে।
এতে আমাদের দেহ ও মনে চাপ পড়ে। আরেকটি হরমোন আছে এই গ্রন্থির, যা এর ভেতর থেকে নিঃসরিত হয়। এটি শরীরে পানি ও খনিজ নিয়ন্ত্রণ করে।
লক্ষণ
► ক্ষুধার অনুভূতি না থাকা
► অকারণে ওজন কমা
► হাতের তালুসহ নানা স্থানে কালো ছোপ
► হাতে ও পায়ের পেশিতে ব্যথা
► রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া
► বমি
► পেট খারাপ
► অবসাদ ও খিটখিটে মেজাজ
► মাথার চুল ও গায়ের লোম পড়ে যাওয়া
এসব লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। হরমোনের ঘাটতি থাকলে তা পূরণের জন্য ওষুধ দেবেন তিনি। এ রোগ বিরল বলেই শোনা যায়। বিখ্যাত ব্যক্তিদের মধ্যে ভারতের অভিনেত্রী সুস্মিতা সেন এই রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ও যুক্তরাজ্যের সাহিত্যিক জেন অস্টেনও অ্যাডিসন্স ডিজিজে ভুগেছেন।