দন্তক্ষয় রোগ শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এই দন্তক্ষয় রোগের যদি যথাসময়ে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে সেখান থেকে ব্যথা হয়। শিশুদের খাবার খেতে অসুবিধা হয়, কথা বলতে এমনকি খেলাধুলা ও পড়াশোনার ক্ষতি হয়। বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় দেখা গেছে—
♦ শিশু যাদের বয়স ৬-৮ বছর, তাদের অর্ধেকেরও বেশি শিশুর কমপক্ষে একটা দুধ দাঁতে দন্তক্ষয় রোগ হয়।
♦ শিশু ও কিশোর যাদের বয়স ১২-১৭ বছর, তাদের কমপক্ষে একটা স্থায়ী দাঁতে দন্তক্ষয় রোগ হয়।
♦ নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশু ও কিশোর, যাদের বয়স ৫-১৯ বছর তাদের দন্তক্ষয় রোগের পরিমাণ মধ্যম বা উচ্চ আয়ের পরিবারের শিশু-কিশোরদের চেয়ে দ্বিগুণ।
করণীয়
আমরা সবাই জানি, দন্তক্ষয় রোগ শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য রোগ। তাই ফ্লুরাইড ভার্নিশ ১-৩ বছরের বাচ্চার দন্তক্ষয় রোগ প্রতিরোধ করে। যে অঞ্চলে ফ্লুরাইডযুক্ত পানি আছে, সেখানকার শিশুদের দন্তক্ষয় রোগের পরিমাণ কম। অন্যদিকে যেসব শিশু-কিশোর ফ্লুরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দ্বারা দাঁত ব্রাশ করে, তাদের দন্তক্ষয় রোগের পরিমাণ কম থাকে। এ ছাড়াও নিচের এই বিষয়গুলো বিশেষ নজরে রাখতে হবে—
♦ মাড়ি প্রতিদিন দুইবার মুছে দিতে হবে নরম পরিষ্কার কাপড় দিয়ে সকালে খাবার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে। এতে চিনি জাতীয় খাবার ও ব্যাকটেরিয়াল ব্রাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে।
♦ যখন শিশুদের নতুন দাঁত ওঠে তখন প্রতিদিন দুইবার নরম প্রিমল ব্রাশ দ্বারা ও ফ্রেশ পানি দ্বারা দাঁত ব্রাশ করতে হবে, তবে কোনো পেস্ট নয়।
♦ দন্তক্ষয় রোগ শুরু হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য জন্মের এক বছর পর শিশুদের ডেনটিস্ট দেখানো উচিত।
♦ শিশুদের মুখে প্রথম দাঁত আসার সঙ্গে সঙ্গে ফ্লুরাইড ভার্নিশ দাঁতে প্রয়োগ করা উচিত।
♦ দুই বছরের ওপরের শিশুদের ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দ্বারা প্রতিদিন দুই বেলা দাঁত ব্রাশ করা উচিত।
♦ পানীয় জলের সঙ্গে ফ্লোরাইড থাকলে দাঁতের উপকার হয়।
♦ শিশুদের দাঁতে ডেন্টাল সিলেন্ট ব্যবহার করলে দন্তক্ষয় রোগ কম হয়।
পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. অনুপম পোদ্দার
সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
রেডিওডন্টোলজি অ্যান্ড ওয়ান প্যাথলজি
ঢাকা ডেন্টাল কলেজ