কমছে রোগী, বন্ধ হচ্ছে সেবাকেন্দ্র

0
651

সিলেটে রোগীশূন্য হাসপাতাল বাসার চিকিৎসায় আক্রান্তরা
সিলেটে দিন দিন কমছে করোনা সংক্রমণ। বাড়ছে সুস্থতা। জনসচেতনতা বাড়ায় আক্রান্তরাও প্রয়োজন ছাড়া যাচ্ছেন না হাসপাতালে। বাসায় আইসোলেশনে থেকেই নিয়ম মেনে নিচ্ছেন চিকিৎসা। ফলে রোগীশূন্য হয়ে পড়েছে ‘কভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলো। তিনটি হাসপাতালের ১৮১ শয্যার বিপরীতে গতকাল রোগী ভর্তি ছিলেন মাত্র ৬৬ জন। এই অবস্থায় ‘কভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল কমানোরও চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। দেশে করোনা সংক্রমণের শুরুতে সিলেটেও নেওয়া হয় চিকিৎসার প্রস্তুতি। শুরুতে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে সিলেট বিভাগের একমাত্র ‘কভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল ঘোষণা দিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা কার্যক্রম। গত মে মাস থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল রোগীতে প্রায় পূর্ণ হয়ে যায়। ফলে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন দেখা দেয় নতুন হাসপাতালের। পরে সিলেট কিডনি ফাউন্ডেশন ও প্রবাসীদের সহযোগিতায় খাদিমপাড়া ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ‘কভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল হিসেবে প্রস্তুত করার কাজ শুরু হয়। সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত সিলেটের তিনটি ‘কভিড ডেডিকেটেড’ হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৬ জন। এর মধ্যে ৫২ জনই শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। বাকিদের মধ্যে খাদিম হাসপাতালে নয়জন ও দক্ষিণ সুরমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র পাঁচজন।
এই অবস্থায় রোগী সংকটের কারণে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে চালু রেখে খাদিমপাড়া বা দক্ষিণ সুরমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে একটিতে করোনার ডেডিকেটেড চিকিৎসা বন্ধের চিন্তা ভাবনা চলছে।
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান জানান, সিলেটে আগের চেয়ে করোনা সংক্রমণ কমেছে। দিন দিন সুস্থতার হারও বাড়ছে। করোনার চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনায় মৃত্যুর সংখ্যাও কমেছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায় অনেকেই নিজ বাসায় আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কমছে। আগে যেখানে হাসপাতালে রোগীদের ভর্তি করতে হিমশিম খেতে হয়েছে এখন রোগীর চাপ অনেকটাই কমেছে।
চট্টগ্রামে বন্ধ হলো তিন করোনা সেবাকেন্দ্র

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস চরম পর্যায় ধারণ করার সময়ই প্রতিষ্ঠা করা হয় চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতাল। এটিই চট্টগ্রামের প্রথম বেসরকারি করোনা সেবাকেন্দ্র। কিন্তু গত এক সপ্তাহ আগে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। একইভাবে বন্ধ করা হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তৈরি হওয়া করোনা আইসোলেশন সেন্টার। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করা হয় তরুণদের উদ্যোগে প্রস্তুত করা করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রাম। তাছাড়া বর্তমানে চালু থাকা আরও অন্তত তিনটি আইসোলেশন সেন্টার ও ফিল্ড হাসপাতালও বন্ধের পথে। তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনার প্রথম দিকে আইসোলেশন সেন্টারে রোগীর চাপ বেশি ছিল। পর্যায়ক্রমে রোগীর চাপ কমায় এসব সেবাকেন্দ্র বন্ধ করা হচ্ছে। তাছাড়া আর্থিক সংকটও একটি বড় কারণ। তবে রোগী থাকলে যে কোনো উপায়ে অর্থের সংস্থান হতো। রোগী না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। জানা যায়, গত মার্চ মাসের পর থেকে চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশন ও বেসরকারি উদ্যোগে অন্তত ছয়টি ফিল্ড হাসপাতাল ও আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়। এর মধ্যে একটি ৬০ শয্যার ফিল্ড হাসপাতাল এবং ১০০ শয্যা করে দুটি আইসোলেশন সেন্টার বন্ধ হয়ে যায়। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘এখন করোনা রোগীর সংখ্যা কমছে। যেসব রোগী আসছে তাদেরকে সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তাই বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা সেবাকেন্দ্রগুলোতে রোগীর চাপ কমছে।
তাছাড়া সেন্টারগুলো পরিচালনাও ব্যয় বহুল।’
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১২০টি নমুনা পরীক্ষা করে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬ জন। এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ হাজার ৭৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে কেউ মুত্যুবরণ করেননি। ইতিমধ্যে মারা গেছেন ২৮১ জন। বর্তমানে চট্টগ্রামে ছয়টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে।

সূত্রঃ  বাংলাদেশ প্রতিদিন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে