যেভাবে বাড়বে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

আমরা হর-হামেশা জীবাণুর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পড়ি। এ জীবাণু হতে পারে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক কিংবা পরজীবী। এসব রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমাদের শরীরের রয়েছে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা। এটিকে শক্তিশালী করতে হলে কতগুলো বিষয়ের উপর অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।betrupi giriş
স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য : ভিটামিন-এ, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন-ই, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি, আয়রন, ফলিক এসিড, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, এবং জিংক শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এসব ভিটামিন ও খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ খাবার থাকা অতীব জরুরি।

নিয়মিত শরীরচর্চা : নিয়মিত শরীরচর্চা রোগ প্রতিরোধ পাঁচিলকে মজবুত করে। শরীরচর্চা করলে রক্ত প্রবাহ সচল থাকে। রক্তের মাঝে চলে আসে জীবাণু বিরোধী ইমিউনতন্ত্রের কোষ। অঙ্গ কোষে পৌঁছে যায় জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার আণুবীক্ষণিক সৈনিক। শরীরচর্চার ফলে মন থাকে ফুরফুরে, উদ্বিগ্নতা কেটে যায়, নিদ্রা হয় সুখকর।

পর্যাপ্ত পানি পান করুন : রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাকে সতেজ রাখতে পানির ভূমিকা অসামান্য। রক্ত আর লসিকা নালী পথে বাহিত হয় জীবাণু বিরোধী কোষ। এদের চলাচল মসৃণ রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয়। পানি শরীরের কোষে পৌঁছে দেয় পুষ্টি আর বহন করে নিয়ে যায় দূষিত উপাদান।

দরকার সুখনিদ্রা : নিদ্রার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধের দেওয়ালের সম্পর্ক গভীর। যারা ছয় ঘণ্টার কম নিদ্রা যান তারা ফ্লুতে আক্রান্ত হন বেশি। প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করতে হলে ঘুমাতে হবে পর্যাপ্ত। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কমপক্ষে সাত ঘণ্টা, টিন এজারদের প্রয়োজন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা আর শিশুদের দরকার ১৪ ঘণ্টা ঘুম।

মানসিক চাপমুক্ত থাকুন : শারীরিক ও মানসিক চাপ ইনফেকশনের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরের সুপ্ত থাকা ভাইরাসকে উদ্দীপ্ত করে। মানসিক চাপ ইমিউন ব্যবস্থাপনাকে দুর্বল করে দেয়। দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ অন্যান্য ব্যাধিকে আমন্ত্রণ জানায়। সে কারণে মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপন করুন।

সময়মতো টিকা নিন : রোগীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশাল ঢাল হলো টিকা। অসংখ্য ব্যাধির বিরুদ্ধে আবিষ্কার হয়েছে প্রতিরোধকমূলক টিকা। সময়মতো এসব টিকা নিলে মুক্ত থাকা যাবে অসংখ্য ব্যাধি থেকে।

ধূমপান বর্জন করুন : ধূমপান ইমিউনতন্ত্রকে দুর্বল করে ফেলে। এর ফলে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। এটি এন্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। ধূমপানের ফলে উৎপন্ন নিকোটিন, ফর্মালডিহাইড, এমোনিয়া, কার্বণ মনোঅক্সাইড, টার, এসিটোন ইত্যাদি রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে অস্ত্রধারী শ্বেত রক্তকণিকার কার্যক্রম ব্যাহত করে।

লেখক : লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ
মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট,
সিএমএইচ, ঢাকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *