এই গ্রহে ট্রাম্প একমাত্র করোনা রোগী, যিনি এমন ওষুধ পেয়েছেন’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কী কী বিশেষ ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে গতকাল সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিএনএন। প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞের বরাতে বলা হয়েছে, এই গ্রহে ট্রাম্প সম্ভবত একমাত্র করোনা রোগী, যিনি এমন ওষুধ পেয়েছেন।
অনেকটা নাটকীয়ভাবে সোমবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প হাসপাতাল থেকে হোয়াইট হাউসে ফিরে যান। হাসপাতালে ভর্তির মাত্র তিন দিন পর তিনি হোয়াইট হাউসে ফেরেন। তিনি দ্রুত নির্বাচনী প্রচারে নামবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।
করোনা রোগী ট্রাম্পের এত দ্রুত হাসপাতাল ছাড়া নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা আছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ কোনো নাগরিক করোনায় সংক্রমিত হলে তিনি নিশ্চয়ই দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো একই চিকিৎসা পাওয়ার আশা করবেন না।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে অতিরিক্ত মনোযোগের পাশাপাশি ট্রাম্পের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সেবা পাওয়ারই কথা। কিন্তু তিনি যে চিকিৎসা পেয়েছেন বা পাচ্ছেন, তার মধ্যে কিছু এখন পর্যন্ত দেশটির সাধারণ লোকজনের জন্য সহজলভ্য করা হয়নি।
হাসপাতাল ত্যাগের আগে ট্রাম্প মার্কিন জনগণের উদ্দেশে দেওয়া টুইটে করোনা নিয়ে ভীত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, করোনা নিয়ে ভীত হবেন না। একই সঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ২০ বছর আগের চেয়েও ভালো বোধ করছেন।
ট্রাম্প যে ওষুধ, যে চিকিৎসা পেয়েছেন বা পাচ্ছেন, তা এখন পর্যন্ত সাধারণ মার্কিন নাগরিকেরা পাননি। তাই করোনা নিয়ে ভীত না হওয়ার যে আহ্বান ট্রাম্প তাঁর দেশের জনগণের প্রতি জানিয়েছেন, তাতে তাঁদের নিশ্চিন্তে থাকার উপায় নেই।
হাসপাতালে ভর্তির আগে ট্রাম্পকে রেজেনেরন ফার্মাসিউটিক্যালের একটি পরীক্ষামূলক অ্যান্টিবডি থেরাপি দেওয়া হয়। এটি করোনাভাইরাসের মাত্রা কমাতে পারে। তা ছাড়া ট্রায়ালে এই থেরাপির ইতিবাচক ফল দেখা গেছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এখন পর্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে এই থেরাপি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি।
কোম্পানিটির ভাষ্য, ট্রাম্পের চিকিৎসকদের কাছ থেকে বিশেষ পরিস্থিতে ব্যবহারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই ওষুধ সরবরাহ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ো ক্লিনিক জানিয়েছে, অধিকাংশ মানুষের এই ওষুধ এভাবে পাওয়ার সুযোগ নেই। এটি পাওয়ার বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদি ও চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া।
কিন্তু ট্রাম্প অ্যান্টিবডি থেরাপিটি পেয়েছেন। করোনা শনাক্ত হওয়ার পরদিনই তাঁকে তা দেওয়া হয়। হোয়াইট হাউস ও ট্রাম্পের চিকিৎসকেরা এই তথ্য জানিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. সীমা ইয়াসমিন উল্লেখ বলেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অসুস্থতার ব্যাপার। এ জন্য তা ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ইতিমধ্যে ২ লাখ ১০ হাজার আমেরিকান করোনায় মারা গেছেন। তাঁরা এই ধরনের চিকিৎসা বা ওষুধ পাননি। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো হাজার হাজার আমেরিকান চিকিৎসাধীন। তারাও এই চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
ট্রাম্পকে অ্যান্টিবডি থেরাপির পাশাপাশি রেমডেসিভির ও ডেক্সামেথাসোনও দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পের ক্ষেত্রে এই তিনটি ওষুধের ব্যবহার প্রসঙ্গে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মেডিসিনের অধ্যাপক জনাথন রেইনার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) সম্ভবত এই গ্রহের একমাত্র রোগী, যিনি এই বিশেষ ওষুধগুলোর মিশ্রণটি পেয়েছেন।’
সূত্রঃ প্রথম আলো
মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম হোতা সালাম গ্রেপ্তার: সিআইডি
সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের অন্যতম হোতাকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় সিআইডি কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
সিআইডি বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম আবদুস সালাম। তাঁকে গতকাল সোমবার রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, আবদুস সালাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেসের মেশিনম্যান ছিলেন। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বেশ কয়েকটি ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।
আবদুস সালামকে আজ আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানাবে সিআইডি।
আবদুস সালাম সম্পর্কে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বলেন, প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে সালাম তাঁর খালাতো ভাই জসিমকে দিতেন। জসিমের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল।
আবদুস সালামকে ২০০৬-২০০৯ সাল পর্যন্ত এক দফা প্রশ্ন ছাপার কাজ থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, কীভাবে সালাম আবার প্রেসের কাজ ফিরে পেলেন, সে সম্পর্কে তাঁরা নিশ্চিত নন। এ ব্যাপারে খোঁজখবর চলছে।
আশরাফুল আলম বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন চিকিৎসক ও তিন থেকে চারটি কোচিং সেন্টারের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আশরাফুল আলম বলেন, সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সাবেক পরিচালক আবদুল হান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ওই সময় মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেরও তথ্য পায় তারা। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় আবদুস সালামসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
একটি খুনের মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হওয়ায় আবদুস সালামকে ২০১৫ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। সিআইডি বিভিন্ন জায়গায় আবদুস সালামের স্থাবর সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে আবদুস সালামের খালাতো ভাই জসিমের ৩৮টি ব্যাংক হিসাব থেকে ২১ কোটি ২৭ লাখ ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব থেকে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার সন্ধান পাওয়া যায়। সিআইডি বলছে, মেডিকেলের ভর্তি মৌসুমে এই টাকার লেনদেন হয় বলে তারা নিশ্চিত হয়েছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো
চমকে দিতে হাসপাতাল ছাড়লেন করোনা আক্রান্ত ট্রাম্প!
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সামরিক হাসপাতালে ভর্তি আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এখনো করোনা মুক্ত হননি। তবে এর মধ্যে ঘটালেন ‘বিস্ময়কর’ ঘটনা। করোনা আক্রান্ত হয়েও হাসপাতাল ছেড়ে গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়েছেন।
জানা যায়, সমর্থকদের চমকে দিতে রবিবার কিছুসময়ের জন্য হাসপাতাল ছেড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন এই প্রেসিডেন্টের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে তার যেসব সমর্থক হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়েছিলেন তাদের দেখা দিতেই তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমর্থকদের চমকে দিতে সফর করবেন এমন ঘোষণার কিছু সময়ের মধ্যে গাড়ির ভেতর মাস্ক পরে হাসপাতালের বাইরে ট্রাম্পকে দেখা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায় ট্রাম্প মাস্ক পড়ে গাড়ির পিছনে বসে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়াচ্ছেন। এছাড়া টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেছেন, করোনার চিকিৎসা নেওয়া কালে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, হাসপাতাল থেকে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার বিষয়টিকে চিকিৎসকরা নিরাপদ হিসেবে জানানোর পর ট্রাম্প হাসপাতাল ছাড়েন। বিবিসি, এনডিটিভি
ইত্তেফাক
করোনা পজিটিভ হলেন ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সহকারী!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সহকারী নিকোলাস লুনার দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। বিষয়টি সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউজের দুজন কর্মকর্তা।
খবরে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সব থেকে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন নিকোলাস লুনা। তার অটোগ্রাফ দেয়ার কলম থেকে নোট বুক সবই তিনি প্রস্তুত রাখতেন। তিনি ছাড়া হোয়াইট হাউজের এক ডজনের বেশি ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে।
জানা যায়, গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। ট্রাম্পের সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্তের খবর জানিয়েছিলেন নতুন করে আক্রান্ত নিকোলাস লুনা।
সুত্রঃ ইত্তেফাক
দাঁতের অসহ্য যন্ত্রণায় যা করবেন!
দাঁতে ব্যথা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক, তাই দাঁতের স্বাস্থ্য ধরে রাখতে কিছু ঘরোয়া টোটকা মেনে চলুন।
লবণ গরম পানিঃ
দাঁত, মাড়ি, গলায় ব্যথা কমাতে খুব ভাল কাজ করে লবণ মিশ্রিত গরম পানি। এক গ্লাস গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করুন। এতে যেকোনও সংক্রমণ সেরে যাবে।
রসুন
এক কোয়া রসুন থেঁতলে অল্প লবণের সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতে লাগিয়ে রাখুন। খুব বেশি যন্ত্রণা হলে এক কোয়া রসুন চিবিয়ে খান। যন্ত্রণা কমে যাবে।
লবঙ্গঃ
দুটো লবঙ্গ থেঁতলে নিয়ে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে পেস্টটা দাঁতে লাগান।
লবণ ও গোলমরিচঃ
লবণ ও গোলমরিচ সম পরিমাণে মিশিয়ে পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। দাঁতের ওপর এই পেস্ট লাগিয়ে কয়েক মিনিট রাখুন। দাঁতে ব্যথা কমে গেলেও এটা কয়েক দিন করে গেলে আরাম পাবেন।
পেঁয়াজঃ
পিঁয়াজের অ্যান্টিসেপটিক গুণ যেকোনও ক্ষত, ব্যথা সারাতে সাহায্য করে।
দাঁতে ব্যথা হলে এক টুকরো কাঁচা পিঁয়াজ চিবিয়ে খেয়ে নিন। যদি বেশি ঝাঁঝ লাগে তবে দাঁতের ওপর পিঁয়াজ রাখলেও আরাম পাবেন।
আদাঃ
এক টুকরো আদা কেটে নিন এবং যে দাঁতে ব্যথা করছে সে দাঁত দিয়ে চিবাতে থাকুন। যদি চিবাতে বেশি ব্যথা লাগে তাহলে অন্য পাশের দাঁত দিয়ে চিবিয়ে যে রস এবং আদার পেস্ট তৈরি হবে সেটা ওই আক্রান্ত দাঁতের কাছে নিয়ে যান। জিভ দিয়ে একটু চেপে রাখুন দাঁতের কাছে।কিছুক্ষণের মাঝেই ব্যথা চলে যাবে।
বেকিং সোডাঃ
একটা কটন বাড একটু পানিতে ভিজিয়ে নিন। এর মাথায় অনেকটা বেকিং সোডা লাগিয়ে নিয়ে ব্যাথা হওয়া দাঁতের ওপরে দিন। অন্যভাবেও বেকিং সোডা ব্যবহার করা যায়। এক চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস গরম পানিতে গুলে সেটা দিয়ে কুলকুচি করুন।
দূর্বা ঘাসের রসঃ এছাড়া দূর্ব ঘাসের রসও দাঁতের ব্যথা কমাতে পারে। এটা দাঁতের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও সহায়তা করে।
তবে মনে রাখবেন, আপনার দাঁত ব্যথা করছে তার মানে নিশ্চয়ই দাঁতের ভেতরে কোনও সমস্যা আছে এবং অবশ্যই ডেন্টিস্টের সাহায্য ছাড়া সে সমস্যার থেকে মুক্ত হওয়া যাবে না। ঘরোয়া এই প্রতিকারগুলো আপনাকে কিছুটা সময়ের জন্য ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে মাত্র। বিশেষ করে যদি মাড়ি ফুলে যায় তবে বুঝতে হবে সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে। সুতরাং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডেন্টিস্টের সঙ্গে দেখা করুন। বিডি প্রতিদিনকরোনায় মাতৃসেবা নিয়ে মানুষের পাশে মা-টেলিহেলথ সেন্টার!
এ লক্ষ্যে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, পুষ্টিবিদ, কাউন্সেলিং সেবা এবং স্থানীয় সরকারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম কাজ করে যাচ্ছে। বেসরকারি খাতের সঙ্গে কার্যকর রেফারাল সিস্টেমসহ শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য টেলিহেলথ সেবা নম্বর ৩৩৩ এবং স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩); সার্বক্ষণিক সেবা দিচ্ছে।
এক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, মা টেলিহেলথ সেন্টার গত ১৪ জুন থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ৭৯ হাজার ৪৪২ জনকে সেবা দিয়েছে। যার মধ্যে ৮ হাজার ৮১৭ জনকে স্ত্রীরোগবিদ্যা বিশেষজ্ঞ সেবা, ১২ হাজার ৪৪৬ জনকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সেবা দুই হাজার ১৪২ জনকে সাধারণ চিকিৎসা সেবা, ৯৪১ জনকে মনরোগের চিকিৎসা সেবা, দুই হাজার ২৩০ জনকে পুষ্টি সেবা, ২৯৪ জন করোনা রোগীকে চিকিৎসা সেবা, ৩৬১ জন করোনা রোগীর ফলো-আপ নেওয়া হয়েছে।
এটুআইয়ের চিফ ই-গভর্ন্যান্স স্ট্র্যাটিজিস্ট, লিড ফোকাল ডিজিটাল সার্ভিস এক্সিলারেটর, ফরহাদ জাহিদ শেখ বলেন, ‘এসডিজি’র তৃতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছে মা-টেলিহেলথ সেন্টার এবং এর মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত এবং মাতৃমৃত্যু হ্রাস করতে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি।
এ ছাড়া করোনাকালীন এ সময়ে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ডিজিএইচএস, এটুআই এবং সিনেসিস আইটি একসঙ্গে মা-টেলিহেলথ নিয়ে কাজ করছে। ’
কোভিড-১৯ মহামারি এবং এর বাইরেও বাংলাদেশে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলাদের কার্যকর এএনসি, পিএনসি এবং জরুরি সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন সিনেসিস হেলথ-এর সিইও ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজামউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মা-টেলিহেলথ সেন্টারের মাধ্যমে গর্ভবতী মা, দুগ্ধবতী মা ও দুই বছর বয়সী শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং হেলথ সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এটি সেবা প্রদান করে। এ লক্ষ্যে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, পুষ্টিবিদ, কাউন্সেলিং সেবা এবং স্থানীয় সরকারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন দুটি শিফটে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ৬ জন ডাক্তার যাদের মধ্যে দুই জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, দুই জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, এক জন সাধারণ চিকিৎসক এবং একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। এ ছাড়া একজন পুষ্টিবিদ এবং ৮ জন হেলথ ইনফরমেশন অফিসার মা-টেলিহেলথ সেন্টারে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া এটি জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, ওষুধ, অ্যাম্বুলেন্সও প্রদান করছে। ’
বিডি প্রতিদিন
যেসব কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে-জেনে নেই
গোটা বিশ্বে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বদঅভ্যাস বা অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার হয়।
অনেকেই জানেন, ধূমপান করলে ক্যান্সারে আক্রান্তের সম্ভাবনা বাড়ে। তবে এটা খুব ধীর গতিতে হয়। এ কারণে বেশিরভাগ ধূমপায়ীরা বুঝতেই পারেন না ধূমপানের অভ্যাস তাকে কিভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ধূমপান ছাড়াও আরও কিছু কারণে ফুসফুসের ক্যান্সারে হতে পারে। যেমন-
১. ধূমপান না করেও অনেকসময় পরোক্ষ ধূমপানের কারণে একজন ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা ধূমপায়ীদের আশেপাশে থাকেন ও ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসেন, তাদেরও ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়।
২. যাদের পরিবারে ক্যান্সার রোগী রয়েছেন বা ছিলেন তাদেরও ফুসফুসের ক্যান্সার কিংবা অন্য যেকোনো ক্যান্সার হতে পারে। তাই যদি পারিবারিক ইতিহাসে কারও ক্যান্সার আক্রান্ত কেউ থেকে থাকেন, তাহলে অবহেলা না করে নিয়মিত চেকআপ করানো উচিত।
৩. নিকেল, আর্সেনিক, অ্যাসবেস্টোস, ক্রোমিয়াম বা এই জাতীয় মৌলগুলির সংস্পর্শে অতিরিক্ত আসার ফলে ফুসফুসে ক্যান্সারের ঝুঁকি অন্যান্যদের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে যারা কল-কারখানায় কাজ করেন, তাদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
৪. যারা পেশাগত কারণে ক্ষতিকর ধোঁয়ার আশেপাশে দিনের অনেকটা সময় কাটান তাদেরও ফুসফুসে ক্যান্সার হবার ঝুঁকি থাকে। যারা ডাইং ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন এবং রাসায়নিকের ধোঁয়ার আওতায় আসেন, ট্যানারিতে কাজ করেন, গার্মেন্টসে ধোঁয়ার মাঝে কাজ করেন বা রাস্তায় পিচ ঢালাই করেন তাদেরও ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৫. বর্তমানে পরিবেশ দূষণ অনেক বেড়ে যাওয়ার ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যারা প্রতিদিন রাস্তাঘাটে গাড়ির ধোঁয়ার মধ্যে চলাফেরা করেন, তাদের ক্ষেত্রেই এ ঝুঁকি অনেক বেশি। এ কারণে বায়ুদূষণে হাত থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত মাস্ক কিংবা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সূত্র: জি নিউজ
গ্লোবের করোনা ভ্যাকসিন কত দূর!
বৈশ্বিক মহামারী করোনার লাগাম টানতে নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে গেলো বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক। প্রতিষ্ঠনটির উদ্ভাবিত ‘ব্যানকোভিড করোনা প্রতিরোধে সক্ষম’ মার্কিন মেডিকেল জার্নাল বায়োআর্কাইভে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের পর আশার আলো দেখছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, গবেষণাটি সফল হলে এটি হবে দেশ ও বিশ্বের জন্য এক বিস্ময়কর অর্জন। ভ্যাকসিনটির অগ্রগতি নিয়ে কাল সোমবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করবে গ্লোব বায়োটেক।
গ্লোব বায়োটেকের দাবি, প্রাণিদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শেষে নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার মানদণ্ডে শতভাগ উৎরে গেছে ভ্যাকসিনটি। এখন কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিআরও) তাদের কাছ থেকে প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রতিবেদন নিয়ে ভ্যাকসিনটি মানুষের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর কিনা, তা পরীক্ষা করতে মানবদেহে ট্রায়ালের প্রথম পর্যায় পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) অনুমতি চাইবে। অনুমতি মিললে শিগগিরই মানবদেহে পরীক্ষা শুরু করবে বলে জানান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা ড. আসিফ মাহমুদ।
শনিবার বিকেলে মানবকণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রাণিদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজ যেহেতু সফলভাবে শেষ করতে পেরেছি, সেহেতু আমাদের কাজ কিন্তু অনেকটা শেষ। বাকি কাজটা করবে কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিআরও)। তিনি বলেন, সবকিছু শেষ হলে বাজারজাত করার জন্য ওষুধ প্রশাসন অনুমোদন দিবে। এখন সবকিছু নির্ভর করছে সিআরওর উপর। তারা যতদ্রুত মানবদেহে ট্রায়াল করে রিপোর্ট দিবে তত দ্রুত বাংলাদেশ করোনা ভ্যাকসিন পাবে।
তবে গ্লোব বায়োটেকের এক কর্মকর্তা বলেন, যদি সবকিছু ঠিকঠাক হয়, তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী, আমরা আশা করি, জানুয়ারির মধ্যেই মানবদেহে ট্রায়ালের সব পরীক্ষা (তিনটি পর্যায়ই) শেষ হবে।
গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, ভ্যাকসিনটির এ পর্যন্ত সফলতা বৈজ্ঞানিকভাবে বেশ বলিষ্ঠ অবস্থানই প্রমাণ করে। আমাদের রক্তে যেসব উপাদান তৈরি হলে জীবাণু বা ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাদের শরীর লড়াই করতে পারে সেই জিনিসগুলো যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ইমিউনোজেনেসিটি বলে, এই ভ্যাকসিনটি ইঁদুরের শরীরে তা ভালোমতো তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
আইইডিসিআর’র অন্যতম উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, হিউম্যান ট্রায়াল ছাড়া আসলে কোনো ভ্যাকসিন বা ওষুধকেই সফল মন্তব্য করা বিজ্ঞানসম্মত নয়। তারা হয়তো প্রথম পর্যায়ের অ্যানিমেল ট্রায়ালের ফল জানিয়েছে কোথাও। হয়তো তারা আসলে বলতে চাইছে তাদের গবেষণার ফলাফল কোথাও তালিকাভুক্ত করেছে। আন্তর্জাতিক জার্নালে হয়তো এরপর প্রকাশিত হবে। অ্যানিমেল ট্রায়াল সফল হলে তারা বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) আবেদন জানাবে হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য। আমি তাদের সফলতা কামনা করি। তবে গ্লোব বায়োটেক সফল হোক বা না হোক, তাদের বিজ্ঞানসম্মতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
ভ্যাকসিনের অগ্রগতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন কাল সোমবার: গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড কর্তৃক আবিষ্কৃত কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন ‘ব্যানকোভিড’-এর অগ্রগতি নিয়ে আগামীকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে দুপুর ১২টায় রাজধানীর গুলশান-২ এর লেকশোর হোটেলে। এতে প্রাণিদেহে ট্রায়ালের প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত ও ভ্যাকসিন প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
গত ১ জুলাই গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্লোব বায়োটেক জানায়, তারা দেশেই করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের জন্য কাজ করছে। ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পরই তারা এর ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের কাজ শুরু করে।
পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব ঘোষণা দেয়, প্রাণীদেহের ওপর এই ভ্যাকসিনের প্রথম ধাপের ট্রায়াল তারা সফলভাবে শেষ করেছে। পরবর্তী ধাপগুলো ঠিকঠাকমতো সম্পন্ন করতে পারলে ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে টিকা বাজারজাত করতে পারবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সূত্রঃ মানবকন্ঠ
চিকিৎসার সময় ডাক্তারের কাছে রোগীর যেসব অধিকার থাকে- জেনে নেই
বাংলাদেশে চিকিৎসক এবং রোগীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি, বাগবিতণ্ডা এমনকি সংঘর্ষের ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়। এসব কারণে মারামারি, হাসপাতাল ভাঙচুর এবং মামলা ঘটনাও ঘটে।
রোগীদের অভিযোগ, চিকিৎসকরা তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন না, প্রশ্নের জবাব দেন না এবং যথেষ্ট সময় দেন না। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরাও তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য পান না।
অপরদিকে চিকিৎসকদের অভিযোগ, অনেক সময় রোগীরা তাদের রোগের ব্যাপারে সঠিক তথ্য দেন না।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক রোগী সুরক্ষা দিবস।
কিন্তু হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার সময় একজন রোগীর কী কী অধিকার থাকে? বাংলাদেশে রোগীরা সেসব অধিকারের ব্যাপারে কতটা সচেতন? বাংলাদেশে এসব অধিকার রক্ষার চর্চায় বা কতটা হয়? রোগী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কী করা উচিত?
কয়েকটি ঘটনা
মিরপুরের বাসিন্দা সোমা সাহার পিতা কয়েক বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলছিলেন, ‘’প্রতিদিন সকালে যখন বড় ডাক্তার রাউন্ডে আসতেন, তখন আমাদের সবাইকে ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যেতে বলা হতো। তিনি চলে যাবার পর একজন জুনিয়র ফাইলে ওষুধ, টেস্ট ইত্যাদি লিখে দিতেন। পরে সেটা দেখে নার্স আমাদের ওষুধ আনতে বলতেন। কিন্তু রোগীর উন্নতি কতটা হচ্ছে, কোন ওষুধ কেন দেয়া হচ্ছে, সেটা কখনোই আমাদের বলা হতো না। জুনিয়রদের কাছে জিজ্ঞেস করলে তারাও বিরক্ত হতেন।
এরকম অভিজ্ঞতা যে শুধু তার একার হয়েছে তা নয়।
শামিমা আক্তারের বাচ্চা ছেলের মাথা ফেটে গেলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেলাই করার পর সার্জারি ওয়ার্ডের চিকিৎসক কোনো কথা না শুনেই অ্যান্টিবায়োটিক আর কিছু ওষুধ লিখে দেন। ওষুধগুলোর কোনটার কি কাজ, জানতে চাইলে সেই চিকিৎসক চিৎকার করে বলেন, বাইরে ওষুধের দোকানে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন।
শুধু সরকারি হাসপাতালেই নয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেকে অর্থ খরচ করে যেসব বেসরকারি হাসপাতালে যান, সেখানেও রোগীদের অভিযোগ রয়েছে যে, তাদের চিকিৎসা, ওষুধ বা অপারেশনের ব্যাপারে ঠিক মতো অবহিত করা হয় না।
এমনকি চেম্বারে চিকিৎসকরাও রোগীদের কথা ভালোভাবে না শুনেই চিকিৎসাপত্র দেন বলে অভিযোগ আছে।
নাজমা আক্তার ঢাকার একটি পাকস্থলীর সমস্যা নিয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
তিনি বলছেন, ‘’চিকিৎসক এসে রোগী দেখে যাওয়ার পর তার জুনিয়র এসে আমাদের জানাতেন, এই করতে হবে, ওই টেস্ট করতে হবে। কিন্তু মূল চিকিৎসক কখনো ভালোভাবে কথাও বলতেন না। প্রতিদিন অনেকগুলো করে টেস্ট করতে দিতেন। কিন্তু সেসব টেস্ট কেন করা হচ্ছে, আদৌ দরকার আছে কিনা, তার কোন ব্যাখ্যা কখনো পাই নি। ‘’
দুই বছর আগে অক্টোবরে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ঢাকার একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ভিকারুননিসার ছাত্রী আফরিন হক। একদিন পরেই তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা পরিবারের সঙ্গে কোনরকম আলোচনা না করেই তার লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে নিয়েছিলেন বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন।
রোগী ও চিকিৎসকের সম্পর্ক নিয়ে ধারণার অভাব
বাংলাদেশের একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্ণধার এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলছেন, বাংলাদেশে রোগী এবং চিকিৎসক পরস্পরের প্রতি যে দায়বদ্ধতা, ডাক্তার এবং রোগীর সম্পর্ক যে অলিখিত বোঝাপড়ার একটি সম্পর্ক, সেই সম্পর্কে তাদের কারো ধারণা নেই।
‘রোগী যখন কোন বিষয়ে ডাক্তারের সহযোগিতা প্রার্থী হন, ডাক্তার সেটা দেখেন কর্তৃত্ববাদী দৃষ্টিকোণ থেকে। অর্থাৎ আমি বললাম, আপনি এটা করুন। আসলে হওয়া উচিত, ডাক্তার তার লব্ধ জ্ঞানকে রোগীর কাছে রোগীর মতো করে উপস্থাপন করবেন। সেটা করতে গেলে তার সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। ’
’একই সঙ্গে রোগীকেও মনে রাখতে হবে, তিনি যে বিষয়টির জন্য চিকিৎসকের সহযোগিতা প্রার্থী হয়েছেন, সেই বিষয়টি তাকে বুঝে নিতে হবে। অর্থাৎ চিকিৎসকের সেবাটা নেয়ার জন্য, যোগাযোগ করার জন্য তাকেও প্রস্তুতি নিতে হবে। ’
তিনি বলছেন, চিকিৎসক এবং রোগীর এই যোগাযোগের জায়গাটা বাংলাদেশে একটি ঘাটতি রয়েছে বলে তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটে। তখন একে অপরের প্রতি দোষারোপের ঘটনা ঘটে।
পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ডা. শারমিন ইয়াসমিন বলছেন, ‘নিজেদের এসব অধিকারের ব্যাপারে রোগীরাও সচেতন নন বা জানেন না। ফলে তারা তাদের অধিকার দাবী করতে পারেন না বা আদায় করে নিতে পারছেন না। তাদের জানতে চাইতে হবে। সেই ব্যাপারে তাদেরও সচেতন হওয়া দরকার। তখন আমাদের ভেতর ট্রেন্ডটা চালু হবে। ’
কোথাও কোথাও চার্টার আকারে রোগী চিকিৎসকের অধিকার, দায়িত্বের কথা লেখা থাকে, কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট কোন প্রটোকল অনুসরণ করা হয় বলে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের জানা নেই।
চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে রোগীর কী কী অধিকার রয়েছে?
পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের চেয়ারপার্সন ডা. শারমিন ইয়াসমিন বলছেন, বিশ্বের যেকোনো যেদেশেই রোগীদের প্রধান অধিকার হচ্ছে চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তির অধিকার।
অর্থাৎ তাকে কি চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, কার কাছ থেকে নিচ্ছেন, সেটার জন্য কেমন খরচ হবে, কী ওষুধ দেয়া হচ্ছে বা হবে, কোনটা করলে ভালো হবে, না করলে কি কি সমস্যা হতে পারে, শারীরিক কোনো অসুবিধা হতে পারে কি না, এমনকি মানসিক কোনো সমস্যা হতে পারে কি না- প্রতিটি তথ্য রোগী বা তাদের স্বজনদের জানার অধিকার রয়েছে।
সেবা পাওয়ার সময় তার যদি কোনোরকম ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে, সেটাও তাকে আগে থেকে অবহিত করতে হবে।
ডা. শারমিন ইয়াসমিন বলছেন, “হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স- যেই হোক, রোগী বা তার অ্যাটেন্ডডেন্টের যদি কোন প্রশ্ন থাকে, সেটার উত্তর তাকে দিতে হবে। সেটা অবশ্যই তাদের নিশ্চিত করতে হবে। ”
“একজন রোগীর অধিকার রয়েছে বেছে নেয়ার যে, সেই ওই চিকিৎসা নেবেন নাকি নেবেন না,” বলছেন ডা. ইয়াসমিন।
কিন্তু এসব অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশে অনেক ঘাটতি রয়েছে বলে বলছেন এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
বাংলাদেশে রোগীদের অধিকার কতটা রক্ষা হয়?
বাংলাদেশে ভুল চিকিৎসা বা রোগীদের অধিকার রক্ষা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোন আইন নেই।
রোগীরা ভুল চিকিৎসার শিকার হলে ফৌজদারি বিভিন্ন আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে অভিযোগ জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে তদন্ত করে বিএমডিসি চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিল করতে পারেন, যদিও এরকম ঘটনা খুব একটা শোনা যায় না।
হাসপাতাল বা চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা, অবহেলা, হয়রানি বা প্রতারণার শিকার হলে ফৌজদারি বিভিন্ন আইনের আশ্রয় নিতে পারেন বা মামলা করতে পারেন।
কিন্তু স্বাস্থ্য সেবার অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে শুধুমাত্র একটি জায়গায় গিয়ে অভিযোগ জানালে প্রতিকার পাওয়া যাবে, কোন ব্যবস্থা বা গাইডলাইন এখনো বাংলাদেশে নেই বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
ফলে অধিকার ক্ষুণ্ণ, অবহেলা বা ভুল চিকিৎসার কারণে কারো শাস্তি, ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির উদাহরণ অত্যন্ত বিরল।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে চিরতা!
চিরতা গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রোগ নিরাময়ে চিরতার সমস্ত গাছই ব্যবহার করা হয়। তবে এর শিকড় সবচেয়ে বেশি কার্যকর। চিরতা চর্ম রোগ ও জ্বর সারাতে এক ওস্তাদ গাছ। এছাড়াও হেপাটাইটিস, ডায়াবেটিস, ম্যালেরিয়া জ্বর, অ্যাজমা প্রভৃতি কঠিন অসুখের চিকিৎসাতেও চিরতা ব্যবহার করা হয়।
নিচে চিরতার উল্লেখযোগ্য কিছু ভেষজ গুণ ও ব্যবহার সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো-
অ্যালার্জি সারায়
যাদের এলার্জি হয়ে শরীর চুলকায়, চুলকানোর জায়গাটা ফুলে লাল হয়ে যায়, ত্বক থাকা থাকা হয়ে ওঠে। তারা চিরতার শরণাপন্ন হয়ে ভালো থাকতে পারেন। অ্যালার্জি সারাতে চিরতার তিতা রস সাহায্য করতে পারে। আগের দিন রাতে শুকনো চিরতা ৪-৫ গ্রাম পরিমাণ এক গ্লাস (২৫০ মিলিলিটার) গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন ওটা ছেঁকে দিনের মধ্যে ২-৩ বারে খেতে হবে। সেই সাথে খাবারের দিকেও নজর দিতে হবে। যেসব খাবার খেলে অ্যালার্জি হয় সেসব খাবার খাওয়া যাবে না। বিশেষ করে পুঁইশাক, বেগুন, চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, হাঁসের ডিম ইত্যাদি খাওয়া উচিত হবে না।
প্রবল হাঁপানির উপশম হয়
একজিমার সাথে যাদের হাঁপানি আছে অথবা অর্শের রক্ত পড়াব বন্ধ হওয়ায় হাঁপানি বেড়ে গেছে, অল্প ঠাণ্ডা লাগলে বা ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-কাশি হয়ে হাঁপানির টানটা বেড়ে গেছে তারা আধা গ্রাম চিরতার গুঁড়ো ৩ ঘণ্টা অন্তর মধুসহ চেটে খাবেন। এতে ২-৩ দিনের মধ্যে প্রবল হাঁপানি কমে যাবে।
কৃমি সারায়
কৃমি হলে পেটের উপরের অংশটা মোচড়ায়, ব্যথা করে। পেটে কৃমি হলে আধা গ্রাম চিরতার গুঁড়ো সকালে মধুসহ বা চিনি মিশিয়ে চেটে খাবেন। এরপর পানি খেতে পারেন। এতে কৃমির উপদ্রব চলে যাবে।
চুলকানি সারায়
গায়ে চুলকানি হলে ২০ গ্রাম চিরতাতে অল্প পানি ছিটিয়ে বেঁটে বা ছেঁচে নিতে হবে। তারপর তা লোহার কড়াই বা তাওয়াতে ১০০ গ্রাম সরষের তেল দিয়ে জ্বাল দিয়ে হবে। সরষের তেল গরম হয়ে ফেনামুক্ত হলে তাতে চিরতা ছাড়তে হবে। ভালো করে ভাজা হলে নামিয়ে ছাঁকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে চিরতা যেন পুড়ে না যায়। এই তেল চুলকানোর জায়গায় ঘষে অল্প অল্প করে মালিশ করলে দ্রুত চুলকানি সেরে যাবে।
চুল ওঠা বন্ধ করে
কোনো কারণ দেখা যাচ্ছে না, অথচ রোজ মাথা থেকে প্রচুর চুল উঠছে। চুল উঠতে উঠতে ঘন কেশ পাতলা হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে আগের দিন রাতে এক কাপ গরম পানিতে ৫ গ্রাম চিরতা ভিজিয়ে রেখে পরদিন সেই পানি ছেঁকে তা দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেললে চুল ওঠা কমবে। একদিন পর পর একদিন এভাবে চিরতার পানি দিয়ে মাথা ধুতে হবে। ৩-৪ বার এভাবে ধুতে পারলে চুল ওঠা অনেক কমে যাবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
চিরতা নিয়মিতভাবে খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে বা কমে। চিরতা দেহে অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকে ত্বরান্বিত করে। এক্ষেত্রে আগের দিন রাতে শুকনো চিরতা ৪-৫ গ্রাম পরিমাণ এক গ্লাস (২৫০ মিলিলিটার) গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন ওটা ছেঁকে সকালে খালি পেটে খেতে হবে।
রক্তশূণ্যতা কমায়
চিরতা দেহে রক্তকোষ গঠন করে। তাই চিরতা সেবনে রক্তশূন্যতা কমে যায়। এমনকি ঋতুস্রাব বা মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে তাও কমাতে পারে। কোথাও কেটে গেলে সে কাটা স্থানে চিরতার রস লাগিয়ে দিলে দ্রুত রক্ত পড়া বন্ধ হয়। অভ্যন্তরীন রক্তক্ষরণ, নাক দিয়ে রক্তপড়া এসবও চিরতা বন্ধ করতে পারে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
চিরতার মধ্যে শক্তিশালী এন্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা বার্ধক্যকে বিলম্বিত করে দিতে পারে। এমনকি নিয়মিত চিরতা সেবনে ক্যানসার ও হৃদরোগে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
সূত্রঃ বাংলাদেশপ্রতিদিন