ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হচ্ছে আজ
আজ সারা দেশে শুরু হচ্ছে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময়ে দেশের নির্ধারিত ইপিআই কেন্দ্রসমূহে পর্যায়ক্রমে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের ১টি করে নীল রঙের ১ লাখ আই ইউ ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ১টি করে লাল রঙের ২ লাখ আই ইউ উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। পাশাপাশি এই সময়ে পুষ্টিবিষয়ক বিভিন্ন বার্তা জনগণের মধ্যে প্রচার করা হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, পক্ষকালব্যাপী চলা এ কর্মসূচি সফল করতে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার ক্যাম্প করা হয়েছে। এসব ক্যাম্পে সক্রিয় থাকবেন ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। করোনার কারণে এবারের ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি ঠিক রাখতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিশুদের টিকা খাওয়ানো হবে। শহর বা গ্রামের সব হাসপাতাল, ক্লিনিকের প্রতিটি কেন্দ্রে যেন মায়েরা তাঁদের শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়াতে নিয়ে আসেন তার জন্য দেশের সর্বত্র প্রচার চলছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সূত্রে জানা গেছে, ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনটি প্রথম শুরু করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন দেশে রাতকানা রোগের হার ছিল ৪.১ শতাংশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় এসেই রাতকানা রোগ নির্মূলে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এখন দেশে রাতকানা রোগের হার ১ শতাংশেরও নিচে। উল্লেখ্য, এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর ক্যাম্পেইন পালন করার কথা থাকলেও পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ শুরু হচ্ছে পক্ষকালব্যাপী এ ক্যাম্পেইন।
ট্রাম্পকে দেওয়া হচ্ছে ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি : ড. বিজন
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল।
শনিবার রাতে ডেইলি স্টার পত্রিকার সাংবাদিক গোলাম মোর্তজার সঙ্গে ফেসবুক লাইভে এ কথা জানান তিনি।
ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আমি সিঙ্গাপুরে আসার পর বর্তমানে যেহেতু কোয়ারেন্টাইনে আছি, তাই পড়াশোনা, লেখালেখির পাশাপাশি টেলিভিশন দেখার সুযোগ পাচ্ছি। যে সুযোগ আমি বাংলাদেশে থাকতে ব্যস্ততার কারণে পাইনি। টেলিভিশনের খবরে দেখলাম আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। তখন আমি আমার ফেসবুকে একটা পোস্ট দেই, ট্রাম্পের জন্য বেস্ট চিকিৎসা হবে অ্যান্টিবডি থেরাপি। তার পরে দেখি তাকে সেই অ্যান্টিবডি থেরাপিই দেয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি এবং প্লাজমা থেরাপির পার্থক্য হচ্ছে, দুটির মূল কম্পোনেন্ট কিন্তু এক। প্লাজমাতেও যে নিউট্রালাইজ অ্যান্টিবডি রয়েছে, ককটেলেও সেই একই অ্যান্টিবডি থাকে।
‘ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপি বলা হচ্ছে এই কারণে যে হিউম্যান এবং মাউসের অ্যান্টিবডি একত্র করে এটা বানানো হয়। ককটেল অ্যান্টিবডি থেরাপিতে করোনাভাইরাসকে সরাসরি আক্রমণ করে তার ডোমেইনকে ভেঙে দেওয়া হয়। ফলে তার শরীরে ভাইরাসের মাল্টিফিকেশন রেট কমে আসবে এবং তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
বাংলাদেশে ককটেল অ্যান্টিবডি তৈরি করা সম্ভব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘বাংলাদেশে এটা করতে সময় লাগবে, তবে এটা করার মতো লোক রয়েছে। আমি যখন ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত পিএইচডি করি, আমার মূল থিসিস ছিল মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি। সেই কনসেপ্ট থেকেই ককটেল অ্যান্টিবডি তৈরি করা হয়েছে। এটা কোনো বিষয় না, আমি নিজেও এটা তৈরি করতে পারব। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ল্যাবরোট্রিতে নিঃসন্দেহে এটা তৈরি করার পরিবেশ রয়েছে। গণস্বাস্থের ল্যাবে যে ফ্যাসিলিটি আছে, সেখানেই এটা করা সম্ভব, এটা খুব কঠিন কিছু না। এই বিষয়টা আমি খুব ভালো করেই জানি।’
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
করোনায় আক্রান্ত ট্রাম্পের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে
করোনায় সংক্রমিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। টুইটে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সুস্থ আছেন।
স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের করোনা শনাক্ত হয়। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর তাঁদেরও করোনা শনাক্ত হয়। হোয়াইট হাউসেই ট্রাম্প ও মেলানিয়া কোয়ারেন্টিনে থাকবেন বলে চিকিৎসক জানান। তবে গতকাল সন্ধ্যায় ট্রাম্পকে মাস্ক পরে হোয়াইট হাউসের বাইরে দেখা যায়।
তিনি হেঁটে হেলিকপ্টারে ওঠেন। হেলিকপ্টারে তাঁকে মেরিল্যান্ডে ওয়াল্টার রিড সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
টুইটে ১৮ সেকেন্ডের এক ভিডিওতে ট্রাম্প জানান, তিনি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি আমি ভালো আছি।’ মেলানিয়াও ভালো আছেন বলে ওই টুইটে জানান ট্রাম্প। প্রেস সচিব কেলেইজ ম্যাকেনি এক বিবৃতিতে জানান, চিকিৎসকরা আগামী কয়েকদিন ওয়াল্টার রিড থেকে ট্রাম্পকে দায়িত্বপালন করার পরামর্শ দিয়েছেন। হাসপাতালের বিশেষ একটি কক্ষে ট্রাম্প থাকবেন।
হোয়াইট হাউসের চিকিৎসা কর্মকর্তা সিন কনলি বলেন, করোনায় শনাক্ত ট্রাম্পের মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তিনি কিছুটা ক্লান্ত । তবে সুস্থসবল আছেন।
ট্রাম্পের চিফ অফ স্টাফ মার্ক মেডোস বলেন, ৭৪ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের মৃদু উপসর্গ রয়েছে। তবে তিনি ভালো আছেন।
হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক সিন কুনলে জানান, ট্রাম্পকে রেজনারনের অ্যান্টিবডি ককটেলের একটি ডোজ দেওয়া হয়েছে। এই চিকিৎসাপদ্ধতি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মধ্যে রয়েছে। কনলি আরও বলেন, বিশেষজ্ঞদের একটি দল ট্রাম্পের চিকিৎসা করছেন।
নিউইয়র্ক প্রতিনিধি জানান, ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে হেঁটে হেলিকপ্টারে ওঠেন।
তাঁর সঙ্গে চিফ অফ স্টাফ মার্ক মেডোস এবং হোয়াইট হাউসের চিকিৎসা কর্মকর্তারা ছিলেন। হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে অতিরিক্ত সতর্কতার জন্যই প্রেসিডেন্টকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখান থেকেই তিনি দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। হোয়াইট হাউসের চিকিৎসা কর্মকর্তা সিন কুনলে জানান, প্রেসিডেন্টকে জিঙ্ক, ভিটামিন ডি , মেলাটোনিন এবং দিনে একটি এসপ্রিন দেওয়া হয়েছে।
রিপাবলিকান দলের প্রচার শিবির থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের আগামী সব কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে। সমাবেশগুলো ভার্চুয়ালি করে সমন্বয়ের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।
ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া বক্তব্যে ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা এই মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। অর্থনীতিকে চালু করতে পারব। তিনি বলেন, এ সময়টি রাজনীতির নয়।
মঙ্গলবার একই মঞ্চে দুই প্রার্থী বিতর্ক করেছেন। জো বাইডেনের দুই দফা পরীক্ষা করা হলেও তাঁর কোভিড-১৯ সংক্রমণ নেগেটিভ এসেছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বয়স ৭৪ বছর। কোভিভ-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে নানা বিবেচনায় যাদের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয় ট্রাম্প সেই গ্রুপের মধ্যেই পড়েন।ডোনাল্ড ট্রাম্প সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নির্বাচনী প্রচারণার সময় সমাবেশ করেছেন বেপরোয়াভাবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে ।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫ তম সংশোধনী অনুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব নেবেন।
সূত্রঃ প্রথমআলো
প্রবীণদের পুষ্টি চাহিদা!
কম বয়সীদের তুলনায় প্রবীণের খাবারের চাহিদা কিছুটা ভিন্ন। প্রবীণদের রুচি, স্বাদ নিয়ে সমস্যা ও নানা ধরনের রোগবালাইয়ের উপস্থিতির কারণে এ বয়সে তাঁদের খাবারের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
বাড়িতে বয়স্ক ব্যক্তিটির জন্য খাবার প্রস্তুতের সময় খেয়াল করুন তাঁর ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, কিডনি জটিলতা ইত্যাদি আছে কি না বা এগুলোর কী অবস্থা। অনেকে স্ট্রোকের জন্য বা দাঁতের সমস্যার জন্য চিবিয়ে খেতে পারেন না। আর বয়স হলে হজমে গোলমাল, কোষ্ঠকাঠিন্য তো হয়ই। এই সব কিছু মাথায় রেখেই করতে হবে তাঁদের খাদ্যতালিকা।
প্রতিদিন খাবারের তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ফল, শাকসবজি—এর যেকোনো একটি বা দুটি ফল রাখুন। সেটা হতে পারে কলা, আপেল, কমলা, লিচু, পেঁপে, আম ইত্যাদি। শাকসবজির ক্ষেত্রে টাটকা সবুজ সবজি তালিকায় রাখুন। তবে লক্ষ রাখবেন হজমে সমস্যা হচ্ছে কি না। পালংশাক, ব্রকলি, পাতাকপি, রংবেরঙের সবজি যেমন বেগুন, গাজর, টমেটো ইত্যাদিতে খনিজ ও ভিটামিন প্রচুর। কিন্তু গ্যাস্ট্রিকের বা হজমের সমস্যা হলে সহজে হজম হয় এমন সবজি যেমন কাঁচা পেঁপে, লাউ, জালি ইত্যাদি দিন।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেহেতু আমাদের হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে, তাই প্রতিদিনের রুটিনে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম রাখা অত্যন্ত জরুরি। এতে অস্টিওপরোসিস এবং হাড় ভাঙার মতো সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। ক্যালসিয়ামের কিছু ভালো উৎস হলো দুধ, দই, চিজ, দুধের তৈরি যেকোনো খাবার, এর বাইরে ব্রকলি, টফু, বাদাম, পাতাকপি।
ফ্যাট সম্পূর্ণ বাদ না দিয়ে ভালো ফ্যাটগুলো বেছে নিন। যেমন ওমেগা-৩ যুক্ত চর্বি। মাছ এবং বাদাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ। এসব খাবার মস্তিষ্ককে সতেজ রাখে ও আলঝেইমার প্রতিরোধে সহায়ক।
খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন। তবে প্রোটিন গ্রহণের ক্ষেত্রে মাছ, মুরগি, মটরশুঁটি, ডাল, ডিম, বাদাম এবং যেকোনো সবজির বিচি খেতে পারেন। তবে কিডনির সমস্যা ও ইউরিক অ্যাসিড বাড়া থাকলে প্রোটিন গ্রহণের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হজমশক্তি কমে যায়, পরিপাকতন্ত্রের চলন কমে যাওয়ার জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, তাই খাদ্যতালিকায় ফাইবার রাখা জরুরি। হোলগ্রেন রাইস, লাল আটা বা ওটসে আছে ফাইবার। ফলমূল ও শাকসবজিতেও আছে। দরকার হলে ইসবগুল, তোকমা ইত্যাদি দিতে পারেন।
বয়স্কদের ডায়াবেটিস থাকলে সহজেই হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে যায়। তাই সারা দিনে ছয় বা সাতবার খাবার দিতে হবে। অল্প করে হলেও বারবার দিতে হবে। খাবার সময়সূচি ঠিক রাখতে হবে। রাতের খাবার একটু আগেই সেরে নিতে হবে।
অনেকেই তরল বা আধা তরল খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। সে ক্ষেত্রে সুষম খাবার না দিলে অপুষ্টি হতে পারে। ব্লেন্ডারে বা জাউ করে যেভাবেই দেওয়া হোক, তাতে পর্যাপ্ত প্রোটিন যেমন মাছ, মাংস, ডিম ও ভিটামিনযুক্ত শাকসবজি মিশিয়ে দিন। শুধু চাল দিয়ে তৈরি জাউ বা সুজিজাতীয় খাবারে পুষ্টি হবে না। সব ধরনের খাবারই দিতে হবে। প্রয়োজন হলে বিশেষ ধরনের ক্যালরি চার্টের জন্য পুষ্টিবিদের সাহায্য নিন।
লেখক: পুষ্টিবিদ, সাজেদা হসপিটাল
গ্লোব বায়োটেক’র ‘ভ্যাকসিন’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য
বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে ১ অক্টোবর একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। খবরটিতে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক কর্তৃক প্রস্তুতকৃত করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট ‘ব্যানকভিড’কে ‘করোনা প্রতিরোধে সক্ষম ভ্যাকসিন’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে মার্কিন একটি মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায়।
বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, গ্লোব বায়োটেক এর ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট ‘ব্যানকভিড’ সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি ‘মার্কিন গবেষণা জার্নাল বায়োআর্কাইভ’-এ প্রকাশিত হয়েছে। উপরের বেশিরভাগ শিরোনামেই এই বিষয়টি স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। প্রতিবেদনের ভেতরেও দাবি করা হয়েছে, ‘মার্কিন জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে’। (কিছু সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে ‘করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সক্ষম’ কথাটিকে কোট/আনকোটে রাখা হয়েছে। যদিও প্রতিবেদনের ভেতরে এই তথ্য ‘মার্কিন জার্নাল’ এর বরাতে তুলে ধরা হয়েছে।)
বুম বাংলাদেশ- এর যাচাইয়ে দেখা যাচ্ছে, গ্লোব বায়োটেক এর প্রস্তুতকৃত ভ্যাকসিন ক্যান্ডিডেট ‘ব্যানকভিড’ সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি এখনও কোনো গবেষণা জার্নালে প্রকাশিত হয়নি।
বায়োআর্কাইভ (BioRxiv.org) নামে যে ওয়েবসাইটের কথা বলা হয়েছে সেটি কোনো ‘গবেষণা জার্নাল’ নয়। এটি একটি ‘প্রি-প্রিন্ট’ আর্কাইভ।
BioRxiv এর ওয়েবসাইটের এবাউট সেকশনে তাদের পরিচয় সম্পর্কে লেখা আছে-
“bioRxiv (pronounced “bio-archive”) is a free online archive and distribution service for unpublished preprints in the life sciences. It is operated by Cold Spring Harbor Laboratory, a not-for-profit research and educational institution. By posting preprints on bioRxiv, authors are able to make their findings immediately available to the scientific community and receive feedback on draft manuscripts before they are submitted to journals.”
“সাধারণত একটি জার্নাল-আর্টিকেল তখন প্রকাশযোগ্য যখন উক্ত জার্নালের সম্পাদকমণ্ডলী আর্টিকেলটির ব্যাপারে সন্তুষ্ট থাকে যে জার্নালটির লেখক বিশেষজ্ঞদের দেয়া পরামর্শ আমলে নিয়েছেন। বায়ো-আর্কাইভের পাঠকদের তাই সচেতন থাকা উচিত যে এখানে প্রকাশিত আর্টিকেলগুলো লেখকের শেষ কথা নয়। এছাড়াও এখানে প্রকাশিত আর্টিকেলগুলোতে ভুলও থাকতে পারে এবং এমন তথ্য থাকতে পারে যা বৈজ্ঞানিক-চিকিৎসক মহলে স্বীকৃত বা গৃহীত নয়।”
অর্থাৎ, প্রি-প্রিন্ট আর্কাইভ আর গবেষণা জার্নাল সম্পূর্ণ ভিন্ন জিনিস। জার্নালে কোনো গবেষণা প্রকাশের আগে তা সংশ্লিষ্ট ফিল্ডে বিশেষজ্ঞ ‘পিয়ার’দের দ্বারা যাচাইবাছাই এবং সংশোধন পরিমার্জনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেই প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল কোনো গবেষণা জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। কিন্তু পিয়ার-রিভিউ এর আগেও কিছু আর্কাইভে কোনো গবেষণা প্রকাশ করা হয়, যার মূল উদ্দেশ্য হলো সংশ্লিষ্ট ফিল্ডের বিজ্ঞানীদেরকে গবেষণাটি সম্পর্কে ধারণা দেয়া, তাদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহ করা ইত্যাদি।
গ্লোব বায়োটেক এর গবেষণাপত্রটি নিজেদের আর্কাইভে প্রকাশ করে শিরোনামের উপরের হলুদ রঙে হাইলাইট করে লিখে রাখা হয়েছে–“bioRxiv is receiving many new papers on coronavirus SARS-CoV-2. A reminder: these are preliminary reports that have not been peer-reviewed. They should not be regarded as conclusive, guide clinical practice/health-related behavior, or be reported in news media as established information.”
অর্থাৎ, “বায়োআর্কাইভ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বহু গবেষণাপত্র পাচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে, এগুলো প্রাথমিক রিপোর্ট যা কোনো পিয়াররিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। এগুলোর ভিত্তিতে উপসংহার টানার সুযোগ নেই, কোনো ধরনের ক্লিনিকাল এবং স্বাস্থ্যগত বিষয়ে নির্দেশনা হিসেবে না অথবা প্রতিষ্ঠিত তথ্য হিসেবে সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হওয়া উচিত হবে না।”
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে BioRxiv-কে ‘মেডিকেল জার্নাল’, ‘মার্কিন মেডিকেল জার্নাল’, ‘শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল জার্নাল’, ‘বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মেডিকেল জার্নাল’ ইত্যাদি বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা ভুল। ‘বিজ্ঞান বিষয়ক পিয়ার-রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত’ হওয়া গবেষণাপত্রে যেসব তথ্য প্রকাশিত হয় সেগুলোকে ‘বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত’ হিসেবে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু কোনো পিয়ার-রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত নয় এমন গবেষণাপত্রে উল্লেখিত অনেক তথ্যে ভুল, অসম্পূর্ণ তথ্য থাকার শঙ্কা থেকে যায়। ফলে এই ধরনের গবেষণাপত্রের আলোকে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার সুযোগ নেই। কিন্তু বাংলাদেশি অনেক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে এবং প্রতিবেদনের ভেতরে গ্লোব বায়োটেক এর জার্নালে প্রকাশ না হওয়া গবেষণাপত্রের আলোকে সিদ্ধান্তমূলক তথ্য দেয়া হয়েছে যে, “গ্লোবের ভ্যাকসিন করোনা প্রতিরোধে সক্ষম”; যা বিভ্রান্তিকর।
সূত্রঃ সময় টিভি
ভ্যাকসিনেও সহজেই ফিরবে না স্বাভাবিক জীবন
প্রাণঘাতী করোনার টিকা এলেই দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যাবে এমন নয়। লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির গবেষকেরা জানিয়েছেন, টিকা নিয়ে আরও বাস্তববাদী হওয়া দরকার।
লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক নিলয় শাহ বলেন, করোনার টিকা সহজলভ্য হয়ে গেলে, আগামী মার্চেই স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসবে এমন নয়। তাই করোনাভাইরাসে জারি থাকা কড়াকড়ি ধীরে ধীরেই শিথিল করতে হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে করোনা সুরক্ষায় বিশ্বজুড়ে ২শ’রও বেশি টিকা তৈরির কাজ চলছে। তবে কেউই চূড়ান্ত নিরাপত্তার পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি। সবাই টিকা পরীক্ষার নানা ধাপে থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কারও টিকা ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়নি। মহামারী অবসানে টিকা আশার আলো জাগালেও সেটি তৈরির ক্ষেত্রে অনেকবার ব্যর্থতা আসতে পারে সেটি সবারই জানা। আর তা সহজলভ্য হতেও লেগে যেতে পারে একবছর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকাদান প্রক্রিয়া শুরু হলেও সে প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে কয়েক মাস, এমনকী একবছরেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
এদিকে চীনের উহান শহর থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) প্রতিদিন মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কোভিড-১৯ এর তাণ্ডবে বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা তিন কোটি ৪১ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা দশ লাখ ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। সুস্থ হয়েছেন দুই কোটি ৫৪ লাখের বেশি মানুষ।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৪১ লাখ ৪৭ হাজার ২১৫ জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ লাখ ১৮ হাজার ২০৯ জন। সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ৮৩৭ জন।
করোনা ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৫ হাজার ৮৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে আরও ২ লাখ ৮৮ হাজার ১৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন দুই লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ।
করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেশি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রের পরেই সংক্রমণে এগিয়ে রয়েছে ভারত, ব্রাজিল, রাশিয়া, কলম্বিয়া, পেরু, মেক্সিকো, স্পেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, আর্জেন্টিনা।
আক্রান্ত ও মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ধারে-কাছে নেই কোনো দেশ। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৩ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২ লাখ ১১ হাজার ৭৩৮ জন।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ লাখ ১০ হাজার ২৬৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৮ হাজার ৭০৮ জনের।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় ৪৮ লাখ ১৩ হাজার ৫৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৯৬২ জনের।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২০ হাজার ৭২২ জন।
পঞ্চম স্থানে থাকা কলোম্বিয়ায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ২৯ হাজার ৬৭৯ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার ৯৯৮ জনের।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৪৭৯ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। দেশে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ২৫১ জনের। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৬ জন।
মানবকণ্ঠ/এইচকে
টেকনোলজিস্ট নিয়োগের গুজবে লেনদেনের শঙ্কা
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের গুজব ছড়িয়ে অবৈধভাবে অর্থ আয়ের পাঁয়তারা করছে একটি অসাধু চক্র। সরকারি চাকরির বয়স শেষ এমন ৩৭০ জনকে নিয়োগ দেয়ার নামে তারা গোপনে অর্থ সংগ্রহে মাঠে নেমেছে। জনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা দাবি করা হচ্ছে। প্রার্থীদের আশ্বস্ত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার নাম।
এ সংক্রান্ত একাধিক অডিও রেকর্ড যুগান্তরের হাতে এসেছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, এমন তথ্য তাদের জানা নেই। অস্বচ্ছ এ প্রক্রিয়ায় কোটি কোটি টাকা লেনদেনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এই নিয়োগের বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি। এ সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্তও হয়নি। অসাধু চক্রটি নিজেদের স্বার্থে হঠাৎ করেই নতুন নিয়োগের গুজব ছড়িয়েছে। এক্ষেত্রে তারা করোনার সময় বয়স ও যোগ্যতা প্রমার্জনা করে কয়েকজনের নিয়োগের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে। এতে তাদের প্রচারণা জোরদার হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের বয়স শেষ এমন কয়েকজন যুগান্তরকে বলেন, তাদের নেতৃত্বে আছেন এ ধরনের দু’একজন চাকরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেছেন, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছেন বিশেষ ব্যবস্থায় আমাদের নিয়োগ দেয়া হবে।
যুগান্তরের হাতে আসা অডিও রেকর্ডগুলো থেকে জানা যায়, একটি গ্রুপ স্বেচ্ছাসেবী এবং বয়সোত্তীর্ণ মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ফোন করে তাদের বিশেষ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করছেন। মন্ত্রণালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এবং ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার ভাইয়ের নাম ব্যবহার করে আগ্রহী সবাইকে টাকা সংগ্রহে রাখতে বলা হচ্ছে। চাওয়ামাত্রই যেন টাকা দিতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে তাগিদ দেয়া হচ্ছে। অথচ এর আগে প্রচলিত নিয়মের বাইরে গিয়ে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ না দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর ও টেকনোলজিস্টদের দুই সংগঠনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক প্রশাসন ডা. হাসান ইমাম যুগান্তরকে বলেন, চাকরির বয়স শেষ এমন কাউকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে নিয়োগের কোনো সার্কুলার জারি হয়নি। সরকারি চাকরিতে এর কোনো সুযোগও নেই। এমন কোনো প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে আমার জানা নেই। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ১২শ’ টেকনোলজিস্টের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাইরে আর কিছু চলমান নেই।
এর আগে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ১২০০ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎ করে জুন মাসে অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তার (যাকে অবসরোত্তর কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত করেন তৎকালীন মহাপরিচালক) নেতৃত্বে একটি দুর্নীতিবাজ চক্র অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ১৮৩ জন টেকনোলজিস্টের নামের তালিকা চূড়ান্ত করে। এসব অনিয়ম বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও তদন্ত না করে রোববার ও সোমবার ১৮৩ জনকে সশরীরে হাজির হয়ে কাগজপত্র দাখিল করতে বলা হয়। তাদের মধ্যে ১৫৭ জন হাজির হয়ে কাগজপত্র জমা দেন।
কাগজপত্রগুলো বাছাই করে দেখা যায়, সরকারি মেডিকেল ফ্যাকাল্টি থেকে পাস করা ৯৫ জন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৫০ জন, বিএসসি-ইন টেকনোলজি পাস করা ৯ জন, সনদবিহীন প্রার্থী দু’জন এবং ডিপ্লোমা-ইন-ফার্মেসি পাস করা একজন প্রার্থী নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। এই বিষয়গুলো জানাজানি হলে সমস্যা সমাধান না করে রাষ্ট্রপতির প্রমার্জনায় তাদের নিয়োগ নিশ্চিত করা হয়।
এই কাজে সাবেক একজন সচিব, প্রভাবশালী চিকিৎসক নেতা জড়িত থাকলেও তাদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সেই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালককে (প্রশাসন) বদলি করে এই অসাধু প্রক্রিয়া হালালের চেষ্টা করা হয়।
যদিও এর আগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে টেকনোলজিস্ট নেয়ার প্রস্তাবনা ছিল। কিন্তু অধিদফতর থেকে মানসম্পন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য আউটসোর্সিংয়ের পরিবর্তে স্থায়ীভাবে টেকনোলজিস্ট নিয়োগের সুপারিশ করে ২৯ এপ্রিল চিঠি দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বেকার অ্যান্ড প্রাইভেট সার্ভিসেস মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ৬ দফার ভিত্তিতে আমাদের সঙ্গে অধিদফতরের সমঝোতা হয়েছিল। আমরা অবিলম্বে তার বাস্তবায়ন চাই। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ১২শ’ পদ সৃষ্টির নির্দেশ দিয়েছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর বাইরে কোনো অসাধু প্রক্রিয়ায় স্বেচ্ছাসেবক ও বয়সোত্তীর্ণ তকমা দিয়ে নিয়োগ দেয়া হলে তা মেনে নেয়া হবে না।
সূত্রঃ যুগান্তর
করোনার টিকা তৈরিতে প্রাণ যাবে ৫ লাখ হাঙরের
করোনার কার্যকর ভ্যাকসিন বা টিকা উদ্ভাবনে গবেষণা চলছে বিভিন্ন দেশে। একে বলা হচ্ছে, ‘ফাস্ট-ট্র্যাক’ গবেষণা। এই টিকার জন্য হয়তো মরতে হবে পাঁচ লাখ হাঙরকে! বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষাকারী সংগঠন ‘শার্ক অ্যালাইস’।
তাদের বক্তব্য, মানুষের প্রাণ বাঁচাতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যেভাবে হুড়োহুড়ি করে পরীক্ষা চলছে; তাতে হয়তো পাঁচ লাখ হাঙরকে মৃত্যুদণ্ড পেতে হবে। কিন্তু টিকা তৈরিতে হাঙরকে কেন মরতে হবে? এর উত্তর হলো- বেশির ভাগ ভ্যাকসিন বা টিকায় ‘অ্যাজুভ্যান্ট’ লাগে। এটি একটি ফার্মাকোলজিক্যাল এজেন্ট, যা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে ভ্যাকসিনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ উপাদানটি মেলে হাঙরের লিভারে। ভ্যাকসিনের দ্রুত ও কার্যকরী প্রভাব পেতে উপাদানটি জরুরি। অতএব ব্যাপক গবেষণা এবং টিকা তৈরির জন্য হাঙর নিধন জরুরি হয়ে পড়েছে।
সব ভ্যাকসিনেই বিভিন্ন অ্যাজুভ্যান্ট ব্যবহার করা হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন তৈরিতে লাগে ‘স্কুইলিন অয়েল’। কভিড-১৯-এর প্রতিষেধক তৈরিতেও এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। হাঙর ছাড়াও আরও বেশ কিছু প্রাণীর লিভারে থাকে এই তেল। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হাঙরের লিভার অয়েলই নেওয়া হয়।
ওই সামুদ্রিক প্রাণী রক্ষাকারী সংগঠনটি দাবি করেছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন তৈরি করতেই অন্তত ২১ হাজার হাঙরকে মারতে হবে। গাছ থেকেও ‘স্কুইলিন অয়েল’ পাওয়া যায়। সংস্থাটির দাবি, হাঙর না মেরে যেন গাছ থেকে পাওয়া স্কুইলিন অয়েল ব্যবহার করা হয়। এতে পরিবেশ ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে না।
সূত্র :আনন্দবাজার।
পেটের কোন ব্যথা অ্যাপেনডিসাইটিসের, জেনে নিন বিপজ্জনক লক্ষণগুলো!
বৃহদান্ত্র এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের সংযোগস্থলে বৃহদান্ত্রের সঙ্গে যুক্ত একটি ছোট্ট থলির মতো অঙ্গটিকে অ্যাপেন্ডিক্স বলা হয়। লম্বায় এটি ২ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। থাকে তলপেটের ডান দিকে। এর সঠিক কাজ যে কী, তা এখনো অস্পষ্ট।
তাই এটিকে অকেজো অঙ্গ বলা হয়। কিন্তু এই ছোট্ট থলেতে আকস্মিক প্রদাহ হলে দেখা দেয় অসহনীয় ব্যথা।
অ্যাপেন্ডিক্সের এই সমস্যাটি অ্যাপেনডিসাইটিস নামে পরিচিত। যথা সময়ে অস্ত্রোপচার না করালে বা সময় মতো সমস্যা ধরা না পড়লে অ্যাপেনডিসাইটিসের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বিশ্বের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষের প্রাণ সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই অঙ্গটি।
সেজন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে ‘সার্জিক্যাল এমার্জেন্সি’ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। তাই অ্যাপেনডিসাইটিসের সমস্যা কখনও অবহেলা করা উচিত নয়।
অ্যাপেনডিসাইটিস কীভাবে এবং কেন হয়?
কোনও কারণে অ্যাপেন্ডিক্সে খাদ্যকণা বা ময়লা ঢুকে গেলে সেখানে রক্ত আর পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।
শুধু তাই নয় সেখানে নানা রকম জীবাণুর আক্রমণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে অ্যাপেনডিক্সে ব্যথা হতে শুরু করে।
অ্যাপেনডিসাইটিসের উপসর্গ ও লক্ষণসমূহ:
১. পেটে ব্যথা হয়। সাধারণত, নাভির কাছ থেকে শুরু হয়ে পেটের ডান দিকের নিচের দিকে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে,
২. ক্ষুধামন্দা বা খিদে না পাওয়া,
৩. বমি বমি ভাব,
৪. বমি হওয়া,
৫. ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
৬. জ্বর জ্বর ভাব। তবে এ ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি হয় না,
৭. অ্যাপেন্ডিক্স কোনও কারণে ফেটে গেলে সারা পেট জুড়ে মারাত্মক ব্যথা অনুভূত হয় এবং পেট ফুলে ওঠে।
চিকিৎসা কী
অ্যাপেন্ডিসাইটিসের চিকিৎসা হলো আক্রান্ত অংশ বা অ্যাপেন্ডিক্স যত দ্রুত সম্ভব অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে ফেলে দেওয়া। অস্ত্রোপচারের ভয়ে অনেকে হাসপাতালে যেতে চান না। অনেক সময় শিশু বা বেশি বয়স্করা ব্যথার সঠিক বর্ণনাও দিতে পারে না। কিন্তু জটিলতা এড়াতে পেটে ব্যথা তীব্র ও স্থায়ী অথবা থেকে থেকে হলে রোগীকে শক্ত খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন বা মুখে খাবার দেওয়া বন্ধ রাখুন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
মনে রাখতে হবে অ্যাপেন্ডিক্স কোনও কারণে ফেটে গেলে রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই অ্যাপেনডিসাইটিসের উপসর্গগুলো চিনে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া জরুরি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম
কেমন আছেন মেলানিয়া?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। টুইটারে মেলানিয়া ট্রাম্প নিজের শারীরিক অবস্থা ভালো বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর উপসর্গ মৃদু, তিনি ভালো আছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার সকালের দিকে করা দ্বিতীয় আরেকটি টুইটে মেলানিয়া তাঁর প্রতি ভালোবাসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। ওই সময়ে তিনি বলেন, তাঁর উপসর্গ অনেকটাই মৃদু এবং তিনি ভালো আছেন। দ্রুত সেরে ওঠার প্রত্যাশার কথাও বলেন তিনি।
মেলানিয়া ট্রাম্প প্রথম টুইটে বলেন, তিনি ও ট্রাম্প হোয়াইট হাউসেই কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাঁরা ভালো বোধ করছেন। তিনি ব্যক্তিগত সব কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।
হোয়াইট হাউসের একজন উপদেষ্টার বরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও উপসর্গ মৃদু।
বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পকে কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।
ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা এক টুইটে তাঁরা বাবাকে একজন ‘যোদ্ধা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
হোয়াইট হাউসের চিকিৎসা কর্মকর্তা সিন কুনলে বলেছেন, ট্রাম্প ও মেলানিয়া ভালো আছেন।
মেলানিয়ার চিফ অব স্টাফ স্টেফানি গ্রিশাম ইউএসএ টুডেকে বলেছেন, মেলানিয়া হোয়াইট হাউসেই আছেন। তাঁর অবস্থা ভালো।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাস্ক পরার বিপক্ষে অবস্থান নিলেও ৫০ বছর বয়সী মেলানিয়াকে প্রায়ই মাস্ক পরতে দেখা গেছে। মেলানিয়া মাস্ক পরার গুরুত্ব নিয়ে টুইটও করেছেন আগে।
সূত্রঃ প্রথম আলো