মৌসুমি ব্যাধিতে পরিণত হতে পারে করোনা!

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা করোনা মৌসুমি ব্যাধিতে পরিণত হতে পারে করোনাভাইরাসের তান্ডবে লন্ডভন্ড পুরো বিশ্ব। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত করোনার কোনো কার্যকর টিকা আবিষ্কার না হলেও এ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বের নামকরা প্রতিষ্ঠানগুলো। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ইউরোপবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স কুগ করোনাভাইরাস মৌসুমি সংক্রমণ ব্যাধিতে পরিণত হওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দেননি। সোমবার বার্তা সংস্থা তাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ ভাইরাসকে ইনফ্লুয়েঞ্জা গ্রুপের সমগোত্রীয় উল্লেখ করে বলেন, সে হিসেবে এটি মৌসুমি সংক্রমণ ব্যাধিতে পরিণত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘একজন আশাবাদী হিসেবে আমার নীতি হলো সবচেয়ে ভালোটাই আশা করা। কিন্তু সবচেয়ে খারাপটার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হয়।’ সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বন্ধ হচ্ছে অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক!

দুই হাজার হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার অবৈধ । ১৩ হাজার হাসপাতাল লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নের জন্য অনলাইনে আবেদন জমা পড়েছে। নবায়ন হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স। অপেক্ষমাণ আবেদনের সংখ্যা প্রায় আট হাজার। এখনো আবেদন করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। নবায়নের আবেদন না করা এসব প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। প্রায় দুই হাজার প্রতিষ্ঠান আবেদন করেনি। যারা আবেদন করেনি তাদের অবৈধ ঘোষণা করে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুতই চিঠি দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানকে বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হবে।’ স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল শাখা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮২ সাল থেকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বিভিন্ন সময়ে নিবন্ধন নিয়ে সারা দেশে সাড়ে ১৫ হাজারের কিছু বেশি প্রতিষ্ঠান হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক, ব্লাড ব্যাংক পরিচালনা করে আসছে। ৮ আগস্ট টাস্কফোর্সের ঘোষণার পর থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত ১২ হাজার ১২৭টি আবেদন জমা পড়েছে। এখনো আবেদন করেনি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৭৩টি। এ পর্যন্ত যেসব প্রতিষ্ঠান অবেদন করেছে তার মধ্যে চার হাজার প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র যাচাইয়ের অপেক্ষায় আছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর কিছু কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় তিন হাজার ৫০০টি আবেদন অপেক্ষামাণ রাখা হয়েছে। সব নিয়মনীতি সম্পন্ন করে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন হয়েছে। তবে ত্রুটিপূর্ণ বা অসম্পূর্ণ আবেদন, দেরিতে আবেদন ইত্যাদি কারণে নির্ধারিত সময়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে না পারা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭ হাজার ৬০৮টি। বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকায় আবেদন করেছে তিন হাজার ৪৮৫টি, চট্টগ্রামে দুই হাজার ৪৬৭টি, রাজশাহীতে এক হাজার ৬৬৭টি, রংপুরে ৯৬৪টি, খুলনায় এক হাজার ৫৯২টি, বরিশালে ৭৪০টি, সিলেটে ৫০৭টি ও ময়মনসিংহে ৭০৫টি। টাস্কফোর্সের হাসপাতাল নবায়ন-সংক্রান্ত ঘোষণার পর বেসরকারি হাসপাতালগুলো লাইসেন্স নবায়নে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এর আগে বেশিরভাগ হাসপাতাল, ক্লিনিক লাইসেন্স নবায়নে অনাগ্রহী ছিল। লোকবল সংকটে ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৎপরতায়ও ঘাটতি ছিল। সারা দেশের ১৫ হাজারের বেশি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠান দেখাশোনার জন্য এ শাখায় পরিচালক থেকে শুরু করে মেডিকেল অফিসার মিলিয়ে কর্মকর্তা ১১ জন। যার মধ্যে একজন পরিচালক, দুজন উপ-পরিচালক, তিনজন সহকারী পরিচালক এবং পাঁচজন মেডিকেল অফিসার। অধিদফতরের হাসপাতাল শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নিবন্ধন ফি এবং নিবন্ধন নবায়ন ফি পাঁচ হাজার থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ও সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর চার হাজার ২০০ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করলেও বাকি ১১ হাজারের বেশি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক নিবন্ধন ছাড়াই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে। প্রতি বছর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স নবায়নের জন্য পরিবেশ ছাড়পত্র, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিস্তারিত বিবরণ, সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র, কর সার্টিফিকেট এবং অন্যান্য নথি প্রয়োজন পড়ে। নিবন্ধন নবায়ন করতে এসব হাসপাতালকে নিয়মিত নোটিস দেওয়ার পাশাপাশি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু বেশিরভাগ হাসপাতাল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপডেট না থাকায় তারা লাইসেন্স নবায়ন করতে চায় না। টাস্কফোর্সের ঘোষণার পর অধিক সংখ্যক হাসপাতাল লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

নকল মাস্কের কারবারি রাজ্জাক রিমান্ডে!

কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের ছয় কর্মকর্তাও মামলার আসামি নকল এন৯৫ মাস্ক সরবরাহের মামলায় জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাককে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে তাকে গ্রেফতার করে দুদক। নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনায় দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় আবদুর রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দুদকসূত্র জানিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) ছয় কর্মকর্তা ও আবদুর রাজ্জাককে আসামি করে গতকাল সকালে মামলাটি করেন দুদকের উপপরিচালক নূরুল হুদা। মামলায় সিএমএসডির যে ছয় কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- উপপরিচালক ডা. জাকির হোসেন, সহকারী পরিচালক (স্টোরেজ অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন) ডা. শাহজাহান সরকার, চিফ কো-অর্ডিনেটর ও ডেস্ক অফিসার জিয়াউল হক, ডেস্ক অফিসার (বর্তমানে মেডিকেল অফিসার, জামালপুর) সাব্বির আহমেদ, স্টোর অফিসার (পিআরএল ভোগরত) কবির আহমেদ ও সিনিয়র স্টোরকিপার ইউসুফ ফকির। দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. নূরুল হুদা আসামি আবদুর রাজ্জাককে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা। তবে ওকালতনামায় স্বাক্ষর না থাকায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করতে পারেননি। পরে আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, চিকিৎসক-নার্স ও অন্যদের করোনা থেকে রক্ষার জন? এন৯৫ মাস্ক সরবরাহে জেএমআই গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি করেছিল সরকার। জেএমআই গ্রুপ ২০ হাজার ৬১০টি মাস্ক সরবরাহ করে। পরে দেখা যায়, ওই মাস্কগুলো এন৯৫ মাস্ক নয়। আসামিরা নকল এন৯৫ মাস্ক সরবরাহ ও গ্রহণ করেন এবং একই তারিখে অসদুদ্দেশ্যে ওই নকল মাস্ক ১০টি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক-নার্স ও অন্যদের মৃত্যুর ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন। এজাহারে বলা হয়েছে, পরস্পর যোগসাজশে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজেরা লাভবান হয়ে ও অন্যকে লাভবান করার অসদুদ্দেশ্যে আসামিরা নকল মাস্ক সরবরাহ ও গ্রহণ করেন। তারা প্রকৃত এন৯৫ মাস্কের পরিবর্তে ‘জেএমআই ফেস মাস্ক’ মুদ্রিত বড় কার্টনের মধ্যে ‘এন৯৫ ফেস মাস্ক’ মুদ্রিত ছোট বক্সে এসব মাস্ক সরবরাহ করেন। ‘জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড’-এর উৎপাদিত ২০ হাজার ৬১০ পিস নকল এন৯৫ মাস্কের গায়ে কোম্পানির নাম, মাস্কের নাম বা অন্য কোনো লেখা/ছবি মুদ্রণ ছিল না। সিএমএসডি পরে তা ১০টি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করে, যা দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর আগে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনা, সেসব সরঞ্জাম বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ১০ জুন অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এরপর ১ জুলাই জেএমআই, তমা কনস্ট্রাকশন, এলান করপোরেশন, মেডিটেক ইমেজিং লিমিটেড ও লেক্সিকোন মার্চেন্ডাইজ ও টেকনোক্র্যাট লিমিটেডের পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তাকে তলব করে চিঠি পাঠায় দুদক। তলব নোটিসে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা কভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে অন্যদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বক্তব্য শোনা ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। এরপর ৮ জুলাই মেসার্স জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক, তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের সমন্বয়কারী (মেডিকেল টিম) মতিউর রহমানকে প্রায় ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের অনুসন্ধানকারী দল। সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিদেশযাত্রা বাড়ছে, কমছে সংক্রমণ!

করোনা মহামারির কারণে প্রবাসীদের অনেকেই গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে ফেরেন। করোনা পরিস্থিতিতে বিদেশ যাওয়ার হারও তলানিতে ঠেকেছিল। পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা পাল্টানোর ফলে আড়াই মাস ধরে আবার বিদেশযাত্রা শুরু হয়েছে। এ কারণে চট্টগ্রামে বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষার হার আগের চেয়ে বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে এক দিনে সর্বোচ্চ ৫৭৪ বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে নমুনা পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করছেন ২৩১ বিদেশগামী। এদিকে নমুনা পরীক্ষায় বিদেশগামীর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও কমছে করোনা পজিটিভের সংখ্যা। চট্টগ্রামে গত ২০ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিন ৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করে একজনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এর পর থেকে সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭২ দিনে চট্টগ্রামে ১৬ হাজার ৬৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ আসে ৩৮৩ বিদেশগামীর। সেই হিসাবে করোনা পজিটিভের হার ২.৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম থেকে বিদেশগামীদের সবচেয়ে বেশি করোনা পরীক্ষা হয়েছে গত ২৯ দিনে। গত ৭২ দিনে মোট নমুনা পরীক্ষার ৫৫.৮৩ শতাংশ পরীক্ষা হয়েছে এই মাসের ২৯ দিনে। তবে পজিটিভের হার আগের ৪৩ দিনের চেয়ে কমেছে। প্রথম ৪৩ দিনে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে পজিটিভের হার ছিল ৩.৬১ শতাংশ। আর পরবর্তী ২৯ দিনে পজিটিভের হার ১.৩৬ শতাংশ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৭২ দিনের মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর এক দিনে সর্বোচ্চ ৫৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। ওই দিন ৯ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। আর এ পর্যন্ত গত ১৬ আগস্ট এক দিনে সর্বোচ্চ ২৭ জনের করোনা পজিটিভ আসে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে পজিটিভের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। চট্টগ্রামে বিদেশগামীরা করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করছেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। সেখানের দুটি বুথে নিবন্ধনের কাজ চলছে। নিবন্ধনের পর যাত্রীরা পাশের চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নির্দিষ্ট বুথে নমুনা দেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ এবং বিআইটিআইডি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার পর প্রতিবেদন যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। সেখানের দুটি বুথে নিবন্ধনের কাজ চলছে। নিবন্ধনের পর যাত্রীরা পাশের চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নির্দিষ্ট বুথে নমুনা দেন। এরপর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ এবং বিআইটিআইডি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার পর প্রতিবেদন যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। এ কার্যালয় থেকে করোনা পরীক্ষার সনদ দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের নেগেটিভ আসছে তাঁরা বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। পজিটিভ এলে ফের নমুনা পরীক্ষা করছেন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিদেশগামীদের করোনা পরীক্ষা কার্যাক্রমের সমন্বয়ক জেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক সুজন বড়ুয়া বলেন, ‘সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে আমরা প্রায় ৫০ জন এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এ কাজ করতে হয়। দিন দিন বিদেশগামীর সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে নিবন্ধন বাবদ পাওয়া তিন কোটি ৯০ লাখ ৭৩ হাজার ৫০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়েছে।’ সূত্রঃ কালের কন্ঠ

দেশে ফুসফুসের রোগের মূল কারণ, সুস্থ রাখার উপায় জেনে নেই!

বাংলাদেশে ফুসফুসের প্রধান অসুখ যক্ষ্মা। এ ছাড়া বায়ু দূষণের কারণে ফুসফুসের নানা রোগে অনেকেই আক্রান্ত হন। আর এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। বাংলাদেশে ফুসফুসের যেসব সমস্যা বেশিঃ স্বাস্থ্য অধিদফতরের ২০১৮ সালের ‘হেলথ বুলেটিন’ অনুযায়ী, বাংলাদেশে অসংক্রামক ব্যাধিতে যাদের মৃত্যু হয় তার ১০% শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত কারণে। এই বুলেটিন অনুযায়ী, শিশু মৃত্যুর যে ১০টি প্রধান কারণ রয়েছে তার মধ্যে দুই নম্বরে রয়েছে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টজনিত রোগে। বাংলাদেশ লাঙ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে ফুসফুসের সবচেয়ে প্রধান রোগ হলো যক্ষ্মা। এ ছাড়া হাঁপানি, ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিস’ এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণও অনেক বেশি। বায়ু দূষণের কারণে ফুসফুসের সমস্যায় অনেকেই আক্রান্ত হন। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। যে কারণে যক্ষ্মা এত বেশিঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের যক্ষ্মা বিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন বলছে, যে দেশগুলোতে যক্ষ্মা রোগের হার সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে আক্রান্ত ছয়টি দেশের মধ্যে। ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ বলছেন, এই অবস্থান প্রতি বছর মোটামুটি একই জায়গায় থাকে। তিনি বলছেন, বাংলাদেশে যুগযুগ ধরে যক্ষ্মার প্রবণতা এত বেশি কারণ, “বাংলাদেশ খুব ঘনবসতি। বাংলাদেশে সব জায়গায় এত ভিড় যে শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগগুলো হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে একজনের থেকে আর একজনের শরীরে সংক্রমিত হওয়া খুব সহজ। যক্ষ্মায় আক্রান্ত একজন রোগী আরও দশজনকে আক্রান্ত করতে পারে। ” যক্ষ্মায় ছয় মাসের চিকিৎসা নিতে হয়। সকল রোগী চিহ্নিত না করতে পারা, চিকিৎসা অসম্পন্ন রাখার কারণে রোগটি রয়ে যায়। আর দারিদ্রের কারণে অনেকে চিকিৎসা নিতে যেতে পারেন না যদিও বাংলাদেশে কম খরচে এর চিকিৎসার যথেষ্ট ব্যবস্থা রয়েছে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণের মধ্যে তিনি উল্লেখ করলেন পরিচ্ছন্নতার ধারণার অভাব। “আমাদের দেশে হাঁচি ও কাশির যে এটিকেট — মুখ রুমাল দিয়ে ঢেকে নেয়া, রুমাল তা না থাকলে বাহু দিয়ে মুখ ঢেকে হাঁচি ও কাশি দেয়া — সেই অভ্যাসটা বেশিরভাগের মধ্যেই নেই। এটা ভিড়ের মধ্যে ঘটলে চিন্তা করুন সংক্রমণ কত সহজ। ” ফুসফুসের শত্রু ধূমপান ও বায়ু দূষণঃ ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেসপারেটরি মেডিসিনের চিকিৎসক ডা. রওশন আরা খানম বলেছেন, “আপনি যদি এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের দিকে তাকান দেখবেন বিশেষ করে ঢাকা শহরে বায়ুর মান যত দিন যাচ্ছে খারাপ হচ্ছে। বায়ুতে ধুলো ও ধোয়ার কারণে শহরের আকাশ কেমন ঝাপসা দেখায়। হাঁপানির মতো শ্বাসকষ্ট এখন আমরা অনেক বেশি পাই। ” বছরের শেষের দিকে ইটের ভাটার চিমনি শুধু শহরে নয় গ্রামেও দূষণ তৈরি করে। যারা দুষিত বায়ু রয়েছে এমন পরিবেশে নিয়মিত লম্বা সময় কাজ করেন তাদের ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতি হবে। যেমন যারা শহরের রাস্তায় বা ইটের ভাটায় কাজ করেন। ডা. রওশন আরা খানম বলছেন, ধূমপান ফুসফুসের অনেক বড় শত্রু। “আমরা নতুন যে বিষয়টা পাচ্ছি, ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিস’ মেয়েদের মধ্যে অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে ইদানীং। এর একটি কারণ হচ্ছে সরাসরি ধুমপান না করলেও ধুমপায়ীদের আশপাশে যারা থাকেন তাদেরও অনেক ক্ষতি হয়। মেয়েরাও ইদানীং আগের থেকে বেশি ধুমপান করছেন। ” ২০১৮ সালের গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে অনুযায়ী, বাংলাদেশে চার কোটির বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। ডা. রওশন আরা খানম আরও বলছেন, গ্রামের দিকে যে কাঠের চুলায় রান্না হয়, তার ধোঁয়া ফুসফুসের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর। যেহেতু নারীরা চুলার খুব কাছে থাকেন, প্রতিদিন এবং লম্বা সময় ধরে তাই খুব সরাসরি এই ধোঁয়া তার ফুসফুসে প্রবেশ করে। এ ছাড়া রয়েছে মশার কয়েলের ধোঁয়া যার ক্ষতিও কম নয়। ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে করোনাভাইরাসঃ ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ বলছেন, করোনাভাইরাসের আক্রমণের প্রধান লক্ষবস্তু হচ্ছে ফুসফুস। শ্বাসতন্ত্র মানুষের শরীরে তার প্রবেশ পথ এবং করোনাভাইরাস ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে যায়। এমনকি সুস্থ ব্যক্তি যাদের ফুসফুসে কখনো কোন সমস্যা ছিল না তারাও মারাত্মক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলছেন, “করোনাভাইরাস ফুসফুসে একটা বড় তাণ্ডবলীলা করে যায় বলতে পারেন। কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তিদের একটা বড় অংশের পালমোনারি ফাইব্রোসিস হচ্ছে। রোগটিতে যা ঘটে, ফুসফুসের কোষগুলোতে সে বাসা বাঁধে এবং সেখানেই তার প্রসার ঘটে। করোনাভাইরাস এই কোষগুলোর মারাত্মক ক্ষতি করে যায়” “মানুষের ফুসফুস নরম থাকার কথা। এতে সহজে ফুসফুসে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড যাওয়া আসা করে। কিন্তু ফাইব্রোসিস হয়ে গেলে ফুসফুস শক্ত আকার ধারণ করে। তখনই অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের যাওয়া আসা ব্যাহত হয়। কারণ ফুসফুসের থলিগুলো ফুলতে পারে না। রোগী একটি দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্টে ভোগে। ” এই রোগ চিকিৎসার পর ফুসফুসকে তার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা যায় না। ফুসফুস যেভাবে সুস্থ রাখবেনঃ শুধু করোনাভাইরাসের জন্য নয়, ফুসফুসকে সুস্থ সারা বছরই চেষ্টা থাকা উচিত, বলছেন জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর। তিনি বলছেন, ফুসফুস সুস্থ রাখতে সবচেয়ে বেশি দরকার নির্মল বায়ু। কিন্তু সেটি পাওয়া যেহেতু খুব সহজ নয় তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে ফুসফুস সুস্থ রাখতে তিনি কয়েকটি উপায় বলছেন: ধূমপান যত দ্রুত সম্ভব ত্যাগ করা : ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি নয়, শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি করে। ধুমপান ত্যাগ করলে পুরো শরীরের মঙ্গল। >> সুষম খাদ্য গ্রহণ করা: শাকসবজি, ফল ও মাছ বিশেষ করে টক জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। লেবু, কমলা, মাল্টা, বাতাবি লেবু, আমড়া, বড়ই এই ধরনের টক জাতিয় ফল ফুসফুসের জন্য উপকারী। >> ফুসফুসের জন্য উপকারী ভিটামিন: ফুসফুসে প্রতিনিয়ত যে ক্ষয় হয় সেজন্য ভিটামিন-সি, ডি ও জিঙ্ক যুক্ত খাবার খাওয়া খুব জরুরি। ফুসফুসের সহজ একটি ব্যায়ামঃ ডা. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর বলছেন, স্কুলে শরীর চর্চার সময় যেমনটা করতেন তেমনটা দুই হাত আস্তে আস্তে একসঙ্গে মাথার উপরে তুলতে হবে। তোলার সময় মুখ দিয়ে নি:শ্বাস নিতে হবে। দুই হাত প্রসারিত করে মাথার উপরে তুললে বক্ষ পিঞ্জর প্রসারিত হয়। এতে বেশি বাতাস প্রবেশ করে। মাথার উপরে হাত কিছুক্ষণ রাখতে হবে। দশ সেকেন্ডের মতো শ্বাস ধরে রাখতে হবে। এরপর হাত নামাতে হবে একই সাথে জোরের সাথে মুখ দিয়ে ধরে রাখা বাতাস ছেড়ে দিতে হবে। এই ব্যায়াম সকাল ও বিকাল ১৫ মিনিট করার পরামর্শ দিচ্ছেন ডা. বেননুর। একসঙ্গে এতক্ষণ না পারলে সারা দিনে ২৫ থেকে ৩০ বার এই ব্যায়াম করা যেতে পারে, বলছেন তিনি। সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন      

করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসিইউতে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ!

করোনা উপসর্গসহ গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। তার অবস্থা এতোটাই গুরুতর যে তাকে এখন হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র)স্থানান্তরিত করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো: ইউনুস যুগান্তরকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত সোয়া ৮টার দিকে সংসদ ভবনের বাসভবনে অসুস্থহয়ে পড়লে ৯টার দিকে মন্ত্রীকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।বর্তমানে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।তারসুস্থতা কামনায় দলের পক্ষ থেকে দোয়া কামনা করা হয়েছে। সূত্র জানায়, রাত ৯টা নাগাদ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বাসায় শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। এক পর্যায়ে তার অক্সিজেন লেভেল ৩১-এ নেমে আসে। হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়ার পর তার অক্সিজেন লেভেল স্বাভাবিক হয়। তার ফুসফুসে কফ জমেছ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এছাড়া করোনা উপসর্গ থাকায় তার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ রিপোর্ট পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাকে বর্তমানে হাসপাতালের করোনা ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। সেখানে তার কাছে আছেন একমাত্র মেয়ে কান্তা আব্দুল্লাহ। প্রসঙ্গত, ৭৫ বছর বয়সের আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বরিশাল-১ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়কও। এর আগের সরকারের সময়ে হাসানাত আবদুল্লাহ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ছিলেন। তার বড় ছেলে সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণসম্পাদক। ১৯৭৫ সালে ভয়াল কালোরাতেনিহত শহীদ আব্দুররব সের‌নিয়াবাতের ছেলে আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং ওই রাতের প্রত্যক্ষ সাক্ষী তিনি। চলতি বছরের ৭ জুনে তার স্ত্রী সাহান আরা আবদুল্লাহ ইন্তেকাল করেন। সূত্রঃ যুগান্তর

করোনার টিকার তৃতীয় ট্রায়ালে একমত ঢাকা-দিল্লি

ভারতে পরীক্ষা শেষে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দুই দেশ নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মঙ্গলবার দুই দেশের যৌথ পরামর্শক কমিশনের বৈঠকে এই প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশ তাতে রাজি হয়। বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতের ঋণচুক্তির (এলওসি) প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন দ্রুততর করতে দুই প্রতিবেশী দেশ একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এলওসির প্রকল্পগুলো যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে ওই কমিটি। বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা প্রথমবারের মতো ভার্চ্যুয়াল বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এলওসি আজকের বৈঠকে বড় ইস্যু ছিল। ক্রেডিটটার বাস্তবায়ন খুব ধীরগতিতে হচ্ছে। তাই বৈঠকে এটা আমরা আলোচনায় গুরুত্বের সঙ্গে তুলেছি। এই বিষয়ে একটি মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে, যাতে এই ঋণের অর্থ ছাড়ে গতি আনা যায়।’ ওই বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘কোভিড-১৯–এর টিকা তৈরিতে সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন পর্যায়ের পরীক্ষা চালুর পরপরই বাংলাদেশে কোভিড-১৯ টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করতে প্রস্তুত ভারত। আমরা টিকা পরীক্ষার পাশাপাশি বিতরণ ও উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার প্রত্যাশা করছি। এই সব প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’ ভারতের একটি কূটনৈতিক সূত্র মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে বলেন, কোভিড-১৯–এর টিকার বিষয়ে দিল্লির দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো দুই নিকট প্রতিবেশীরও আকাশ ও স্থলপথে লোকজনের যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। ভারত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের জন্য এয়ার বাবল নামে কর্মসূচি শুরু করেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে এ ধরনের এয়ার বাবলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এয়ার বাবল চালু করতে আমরা একমতে পৌঁছেছি। এই বিষয়ে প্রক্রিয়াসহ মোডালিটিসহ আনুষঙ্গিক বিষয় চূড়ান্ত করতে কাজ চলছে। পাশাপাশি আমরা বলেছি যে রোড ওপেন করে দেন, তাহলে আমাদের সুবিধা হয়। কেননা, আমাদের বেশির ভাগ মানুষ সড়কপথেই যাতায়াত করে। ভারত এ বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।’ ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্রটি বলছে, কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় দুই দেশ এয়ার বাবল চালু করবে, এ নিয়ে খুঁটিনাটি বিষয়গুলো চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। তবে কখন থেকে তা চালু হবে, এ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জানা গেছে, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ সম্মেলন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ওই বৈঠকের আগে ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট উন্মোচন করবে ভারত। এ ছাড়া দুই দেশ যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর যৌথভাবে উদ্‌যাপনের বিষয়ে আলোচনা করেছে। তিস্তাসহ পানিবণ্টনের বিষয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘তিস্তা বিষয়ে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে অনেক আগেই ঐকমত্য হয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই আমরা এটা বাস্তবায়নের জন্য জোর দিয়েছি। আশা করছি দ্রুত হবে।’ তিনি জানান, দ্রুত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে দুই দেশ একমত হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ প্রসঙ্গে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা দুই পক্ষ একমত হয়েছি যে কেউ যাতে না মারা যায়। যেসব অঞ্চলে মারা যায়, সেখানে যৌথভাবে মনিটরিং করব। এটা আমাদের জন্য লজ্জার, ভারতের জন্যও লজ্জার।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে যে দৃঢ় সম্পর্ক, সেটি একজন মারা গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন পেঁয়াজ একটি ছোট জিনিস। কিন্তু যখন দুর্ঘটনা হয়, তখন এই সম্পর্কে আঘাত হানে। আমরা ভারত থেকে বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আনি। যেমন পেঁয়াজ এবং সেটি হঠাৎ করে বন্ধ করে দিলে এর প্রভাব বাংলাদেশের বাজারের ওপর পড়ে।’ সূত্রঃ প্রথমআলো

করোনায় হৃদরোগীদের বেশি মৃত্যুঝুঁকি

হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় তিন থেকে চারগুণ বেশি। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ করোনা সংক্রমণের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত প্রতিদিন এ রোগে মৃত্যুর হার গড়ে ২৫ জনের ওপর। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশির বয়স ৬০ বছরের বেশি, যাদের একটি বড় অংশই রক্তচাপ, হৃদরোগসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তাই হৃদরোগ আছে- এমন ব্যক্তিদের শুরু থেকেই সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এমন প্রেক্ষাপটে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব হার্ট দিবস। এবার এ দিবসটির প্রতিপাদ্য- ‘বৈশ্বিক মহামারিতে হৃদরোগীদের প্রতি হৃদয়বান হোন।’ দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। হৃদরোগীদের মৃত্যুঝুঁকি: হৃদরোগজনিত সমস্যা আছে, করোনাভাইরাস সংক্রমিত হলে এমন ব্যক্তির মৃত্যুঝুঁকি কেমন?- সম্প্রতি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিভাগ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ সারাবিশ্বে পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ৪১টি গবেষণাপত্রকে বৈজ্ঞানিক বিশ্নেষণের মাধ্যমে এ প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করে। এতে দেখা গেছে, করোনা আক্রান্তের মধ্যে যাদের আগে থেকে কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ ছিল, তাদের বেশিরভাগই মারা গেছেন। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে ভুগছেন- এমন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে মৃত্যুঝুঁকি শুধু আক্রান্তদের চেয়ে প্রায় তিন থেকে চারগুণ বেশি। গবেষণায় বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে বিদ্যমান কিছু রোগ বা কোমরবিডিটি- যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের প্রাদুর্ভাব তুলনামূলক বেশি। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মধ্যে ৩৬ দশমিক ৫, হৃদরোগীদের মধ্যে ১১ দশমিক ৯ এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে ২২ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছেন। দেশে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্তদের সতর্ক করে গবেষণায় বলা হয়, বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল দেশে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের কারণে উচ্চঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সতর্ক বার্তা দিচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৫ সালের এক জরিপের কথা উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ওই জরিপ অনুযায়ী দেশে ২০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩২ শতাংশ নারী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। এ ছাড়া ২০১৮ সালের আরেকটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে প্রতিবছর হৃদরোগজনিত কারণে দুই লাখ ৭৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা হৃদরোগীদের মৃত্যুঝুঁকি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। চীন ও আয়ারল্যান্ডের একদল গবেষক চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত চীনের উহানের হুশেনশান হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। এতে দেখা যায়, ৮৫০ করোনা আক্রান্ত রোগী, যাদের প্রায় ৩০ শতাংশের হৃদরোগজনিত সমস্যা ছিল, তাদের মধ্যে ৪ শতাংশ মারা গেছেন। অন্যদিকে হৃদরোগজনিত সমস্যা নেই, করোনা আক্রান্ত এমন দুই হাজার ২৭ রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে মাত্র এক শতাংশের। বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তিদের ওপর এখন পর্যন্ত কোনো গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়নি। তবে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) করোনায় আক্রান্ত ও মৃত ব্যক্তিদের ওপর একটি পর্যালোচনা শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর সমকালকে বলেন, হৃদরোগজনিত সমস্যায় থাকা ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে তার মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। দেশে এ পর্যন্ত করোনায় মৃতদের অধিকাংশের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, লিভারসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত এবং মৃতদের অধিকাংশের কোমরবিডিটি রয়েছে। এ বিষয়ে আইইডিসিআর এক পর্যালোচনা শুরু করেছে। এটি শেষ হলে নির্দিষ্ট করে বলা যাবে, কত শতাংশ কোন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সতর্ক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের: জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বলেন, হৃদযন্ত্রে অনেক কারণেই করোনার সংক্রমণ হতে পারে। এই ভাইরাস সরাসরি হৃদযন্ত্রকে আক্রান্ত করতে পারে। মায়োকার্ডাইটিসের কারণে প্রদাহ হলে এটি প্রথমেই হৃদযন্ত্রকে আক্রান্ত করে না। ফুসফুস এবং অন্যান্য অঙ্গে সংক্রমণ হলে এমনটি হয়। ওই মায়োকার্ডাইটিস থেকে হৃদযন্ত্রের পেশির প্রদাহ হয়। এখান থেকে কার্ডিয়াক এরিথমিয়া হতে পারে। এর ফলে এটি হার্টকে আঘাত করতে পারে অর্থাৎ অ্যাকিউট কার্ডিয়াক ইনজুরি হতে পারে। যারা হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, স্ট্রোক হয়েছে, বাইপাস সার্জারি করা হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে করোনার সংক্রমণ অধিক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। তিনি আরও বলেন, এসব ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে জ্বরের পাশাপাশি কাশি হতে পারে। সেখান থেকে নিউমোনিয়া অথবা বুকে তীব্র ব্যথা ও চাপ অনুভব করতে পারেন। ফলে মনে হতে পারে এটি হার্ট অ্যাটাক। এ ধরনের সমস্যা হলে ইসিজি করে দেখতে হবে। অনেক সময় ওই উপসর্গ হার্ট অ্যাটাকের ইসিজির মতো দেখা যায়। কার্ডিয়াক এনজাইম ট্রপোনিন টেস্ট, সিপিকে-এমবি অনেক সময় বেশি থাকলেও ভুলবশত হার্ট অ্যাটাক রোগীর মতো চিকিৎসা হতে পারে। যদিও এটি হার্ট অ্যাটাক নয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। সুতরাং চিকিৎসা শুরুর আগে এসব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী সমকালকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে ভুগছেন, তাদের জন্য কভিড-১৯ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের। তাদের মধ্যে যারা ধূমপান, অ্যালকোহল ও চর্বিজাতীয় খাবার খান তারাও ঝুঁকিপূর্ণ। সুতরাং, সতর্কতা অবলম্বনের বিকল্প নেই। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারির এই সময়ে হৃদরোগীরা দ্বিমুখী সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। একদিকে করোনায় আক্রান্ত হলে হৃদরোগীদের জটিলতা বাড়তে পারে। অন্যদিকে সংক্রমণের ভয়ে তারা হার্টের নিয়মিত চেকআপ ও চিকিৎসা থেকে বিরত থাকলেও মারাত্মক ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। কারণ, হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকের জটিলতা করোনার মতোই ভয়াবহ। আমরা একটি অপ্রত্যাশিত ও অদৃশ্য সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছি। জানি না করোনা মহামারি কোথায় গিয়ে থামবে। করোনার এই সময়ে হার্টের যত্ন নেওয়া অন্য যে কোনো সময়ে চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। হৃদরোগের চিকিৎসাও সংকটে: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গত বছর কার্ডিয়াক সার্জারি ইউনিট চালু করা হয়েছে। তবে কার্ডিওলজি বিভাগটি দীর্ঘদিন ধরে চালু আছে। দুটি বিভাগই চলছে সীমিত পরিসরে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেরও একই চিত্র। অন্যদিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের পুরোনো আটটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সীমিত পরিসরে কার্ডিওলজি থাকলেও কার্ডিয়াক সার্জারি চিকিৎসার সুযোগ নেই। নতুন প্রতিষ্ঠিত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কোনোটিতেই হৃদরোগের চিকিৎসা নেই। এ অবস্থায় সরকারি বিশেষায়িত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ওপরই এ চিকিৎসা নির্ভরশীল। যেখানে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়তে হয় রোগীদের। সরকারি হাসপাতালের অন্তত পাঁচজন পরিচালক ও চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, যন্ত্রপাতি, জনবলসহ নানামুখী সংকটের কারণে দেশের জেলা সদরের সরকারি হাসপাতালগুলোতে হৃদরোগ সেবা বিশেষ করে কার্ডিয়াক সার্জারি চিকিৎসা খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। আটটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অল্পবিস্তর হৃদরোগ সেবা দেওয়া হচ্ছে। এসব হাসপাতালে ক্যাথল্যাবের পাশাপাশি টিএমএলআর মেশিন, স্টিম সেল, রেনাল কার্ড, ইসিপি থেরাপি মেশিন বছরের পর বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) এবং লজিস্টিক সাপোর্টের অভাবে স্থানীয় চিকিৎসকরা রোগীকে ঢাকায় রেফার করতে বাধ্য হন। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানীর সেবাকেন্দ্রে আনার পথেই অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশে হৃদরোগের চিকিৎসা আগের তুলনায় অনেক এগিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে দেশে হৃদরোগের চিকিৎসা সম্প্রসারিত হয়েছে। এতে করে রোগীদের চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখিতা কমেছে। প্রতিবছরই হৃদরোগের চিকিৎসা সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষ করে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নতুন সম্প্রসারিত ভবন ও চিকিৎসাও সম্প্রসারিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে হৃদরোগ ইউনিট সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সুতরাং হৃদরোগ চিকিৎসা নিয়ে সংকট থাকবে না বলে মনে করছেন তিনি। কর্মসূচি :দিবসটি উপলক্ষে এবার জাতীয় পর্যায়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এর বাইরে করোনা পরিস্থিতির কারণে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রাসহ অন্য কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। সূত্রঃ সমকাল    

করোনা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে মায়ের বুকের দুধ!

চীনা বিজ্ঞানীদের নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, মায়ের বুকের দুধ কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। বেইজিংয়ের একদল গবেষক সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা কোষগুলোতে মায়ের বুকের দুধের প্রভাব পরীক্ষা করেছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর অনেক আগে ২০১৭ সালে সংগ্রহ করা দুধের কার্যকারিতা পশুর কিডনি কোষ এবং মানবদেহের ফুসফুস ও অন্ত্রকোষে পরীক্ষা করা হয়। গতকাল সোমবার ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। গবেষকেরা জানান, তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, মায়ের বুকের দুধে অধিকাংশ জীবিত ভাইরাস মারা যায়। বেইজিং ইউনিভার্সিটি অব কেমিক্যাল টেকনোলজির অধ্যাপক টং ইগাংয়ের গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তাঁদের গবেষণা নিবন্ধ গত শুক্রবার ‘বায়োরেক্সিভ ডট ওআরজি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। গবেষকেরা দাবি করেছেন, বুকের দুধ ভাইরাসের প্রবেশেও বাধা দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে কোভিড সংক্রমিত মায়েদেরও সন্তানকে বুকের দুধ পান করানোর কথা বলা হয়। সাম্প্রতিক এ গবেষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তের পক্ষেই জোর সমর্থন দিচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে গত জুন মাসে কয়েকটি দেশে ৪৬ জন মায়ের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে তিনজন মায়ের বুকের দুধে ভাইরাসের জিন শনাক্ত করা হলেও সংক্রমণের কোনো প্রমাণ ছিল না। শুধু একজন শিশু করোনা পজিটিভ হয়। এ ক্ষেত্রে তার অন্য কোনোভাবে সংক্রমণের আশঙ্কা করা হয়েছিল। গবেষক টং ও তাঁর সহকর্মীরা মায়ের বুকের দুধের সঙ্গে কিছু সুস্থ কোষের মিশ্রণ ঘটান। এরপর বুকের দুধ সংগ্রহ করে কোষগুলোকে ভাইরাস সংক্রমণের জন্য উন্মুক্ত করেন। তাঁরা দেখেন, ওই কোষগুলোতে ভাইরাস ঢুকতে পারেনি। এ ছাড়াও সংক্রমিত কোষে ভাইরাসের প্রতিলিপি উৎপাদন বন্ধ করে দিতে পারে। গবেষকেরা বলছেন, মায়ের বুকের দুধে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এর মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস ও কিছু ব্যাকটেরিয়ার ওপর এর প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া যায়। গবেষকেরা আগেই ধারণা করেছিলেন, করোনাভাইরাস মায়ের বুকের দুধের কিছু পরিচিত অ্যান্টিভাইরাল প্রোটিন যেমন ল্যাকটোফেরিনের প্রতি সংবেদনশীল। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখেন, এসব কোনো প্রোটিন আশানুরূপ সংবেদনশীলতা দেখায়নি। অন্য প্রোটিনগুলো ভাইরাস সংক্রমণে বাধা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে ‘হোয়ে’নামের উপাদানটি। গরু ও ছাগলের হোয়ে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত জীবন্ত ভাইরাল স্ট্রেইনকে বাধা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে মায়ের বুকের দুধের হোয়ে প্রায় শতভাগ কার্যকর। গবেষকেরা মায়ের বুকের দুধে কোনো ক্ষতিকর দিক খুঁজে পাননি। তাঁর বলছেন, মায়ের বুকের দুধ ভাইরাসকে মারার পাশাপাশি কোষের বৃদ্ধিতে কাজ করে। অনেক মা এখন অন্য শিশুদের জন্য বুকের দুধ দান করেন। সংক্রমণ এড়াতে এই বুকের দুধ পাস্তুরিত করা হয়। গবেষকেরা বলছেন, ১০ মিনিট ধরে ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় দুধ গরম করলে হোয়ে প্রোটিন নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এতে সুরক্ষার হার ২০ শতাংশের নিচে নেমে যায়। তাই ভাইরাসপ্রতিরোধী ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মাথায় রাখার কথা বলেন তাঁরা। সূত্রঃ প্রথমআলো