কান টানাটানি না করে মাথা টানতে হবে — ড. ইফতেখারুজ্জামান
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, দুর্নীতিবাজ যে উচ্চ পর্যায়ের বা নিম্ন পর্যায়েরই হোক না কেন কেউ এককভাবে দুর্নীতি করে না। আটক গাড়িচালক যে পর্যায়ের চাকরিজীবী তার পক্ষে এত সম্পদ অর্জন করা অসম্ভব। কাজেই তার সম্পদ অর্জন যে অবৈধ পন্থায় এটা অত্যন্ত পরিষ্কার। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই দুর্নীতি তিনি এককভাবে করেননি। একই কথা অন্যদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এটা সেবা খাতের সরাসরি ঘুষ লেনদেনের বিষয় নয়। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর আলামত ইতিমধ্যে কিছুটা প্রকাশ পেয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এখন এই দুর্নীতির সঙ্গে যে বা যারা সরাসরি জড়িত তাদেরকে তো অবশ্যই জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। পাশাপাশি একক জবাবদিহিতার মাধ্যমে কার্যকর কোনো ফল পাওয়া যাবে না। এই দুর্নীতির সঙ্গে তার সহযোগীদের বিশেষ করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ এই দুর্নীতি তিনি করতে পারতেন না যদি মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যোগসাজশ না থাকত। কাজেই শুধু কান নিয়ে টানাটানি করলে হবে না, মাথা টানতে হবে। তিনি বলেন, ড্রাইভার রাঘববোয়ালের মতো সম্পদ আহরণ করলেও তিনি অবস্থানগতভাবে চুনোপুঁটি। তার পেছনে ছিল রুই-কাতলারা। তাদেরকেও চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এটা করা ছাড়া দুর্নীতির লাগাম টানা সম্ভব হবে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির রাঘববোয়াল বা রুই-কাতলা কাউকেই বিচারের আওতার আনার দৃষ্টান্ত আমাদের এখানে নেই। সেটা স্বাস্থ্য খাতেই হোক, ব্যাংকিং খাতেই হোক, ঋণ খেলাপিই হোক, জালিয়াতই হোক বা সেবা খাতের হোক। বড় দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা কখনই নেওয়া হয় না। সেটা বেসিক ব্যাংকের কেলেঙ্কারি বা অন্য যেখানেই হোক। সংসদীয় কমিটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দুর্নীতি প্রমাণ হলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটা শুধু একটা উদাহরণ। তিনি বলেন, আসলে এ ধরনের দুর্নীতির রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় সমাজে এক ধরনের বার্তা চলে যায় যে, দুর্নীতি করলে আসলে কিছু হয় না। তখন রাঘববোয়ালদের দুর্নীতির মহোৎসব দেখে চুনোপুঁটিরা ভাবে, আমরা আর কম যাই কেন। এভাবেই অনিয়ম দুর্নীতির বিকাশ ঘটেছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালকের ধরা পড়া কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এ ধরনের দৃষ্টান্ত আরও আছে। খতিয়ে দেখলেই আরও অনেক ধরা সম্ভব হবে। ঢাকা শহর ও দেশের বিভিন্ন স্থানের জমি এবং সম্পদের মালিকানার নেপথ্য খুঁজে দেখলেই এদের ধরা সম্ভব। এদেরকে ব্যাপকহারে চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদলকে ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
রাজধানীর তুরাগ থানার অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদলকে ১৪ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এদিকে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ড্রাইভার মালেক ও তার স্ত্রীর অস্বাভাবিক সম্পদের সন্ধান পাওয়ায় তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণী চেয়ে নোটিস দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গ্রেফতারের আগে থেকেই সংস্থাটি তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে বলে দুদকসূত্র জানিয়েছেন। অন্যদিকে ড্রাইভার মালেককে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মালেকের বরখাস্তের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এক বার্তায় জানান, বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় গাড়িচালক মালেককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল তুরাগ থানা পুলিশ ড্রাইভার মালেককে আদালতে হাজির করে দুই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। এ সময় আসামির আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে বিচারক রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের গাড়িচালক। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০-২৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি তার কর্মস্থলে খুবই প্রভাবশালী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকার ব্যবসাসহ নিজ কর্মস্থলে সাংগঠনিক পদবিকে কাজে লাগিয়ে বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য করে অবৈধভাবে বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক হন। তাই মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের উৎস, জাল টাকার উৎস, পলাতক আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহসহ প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু দুই মামলায় সাত দিন করে ১৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের গাড়িচালক মালেকের বিরুদ্ধে চলা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে তার ও তার স্ত্রীর অস্বাভাবিক সম্পদের সন্ধান পেয়েছে দুদক। সম্পদের তথ্য বিবরণী চেয়ে দুদক তাদের নোটিসও দিয়েছে। তারা যদি সম্পদের হিসাব দিতে না পারেন তাহলে যথাযথভাবে মামলা হবে বলে জানিয়েছে দুদক। মালেক গ্রেফতার হওয়ার আগেই দুদক সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করেছিল বলে সূত্র জানান।
দুদকসূত্র জানান, ২০১৯ সাল থেকে মালেকসহ আরও ৪৫ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে এখন পর্যন্ত ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। দুদক সচিব বলেন, ড্রাইভার মালেকের সম্পদে আর কারও সম্পদ আছে কিনা তা সম্পদ বিবরণী পেলে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে জানা যাবে।
রবিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর তুরাগ থানার কামারপাড়া বামনার টেক ৪২ নম্বর হাজি কমপ্লেক্স ভবন থেকে আবদুল মালেককে গ্রেফতার করে র্যাব-১। এ সময় তার কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ টাকার জালনোট, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন সেট জব্দ করা হয়। অষ্টম শ্রেণি পাস আবদুল মালেক অধিদফতরের চাকরির পাশাপাশি নানা অবৈধ কর্মকা- চালাতেন। অবৈধ অস্ত্র ও জালনোটের কারবার ছাড়াও চাঁদাবাজি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তুরাগ থানার দক্ষিণ কামারপাড়ায় দুটি সাত তলা বিলাসবহুল ভবন, ধানমন্ডির হাতিরপুলে সাড়ে ৪ কাঠা জমিতে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন রয়েছে তার। এ ছাড়া দক্ষিণ কামারপাড়ায় ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম গড়ে তুলেছেন মালেক। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে তার। সূত্র জানান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশনের নামে একটি সংগঠন তৈরি করে তার সভাপতি হন মালেক। কেবল ড্রাইভারদের নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতির নামে হাতিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালককে (প্রশাসন) জিম্মি করে ডাক্তারদের বদলি, পদোন্নতি, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করেছেন মালেক।
সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
করোনার টিকা নিয়ে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাইবেন প্রধানমন্ত্রী
সারা বিশ্বের মানুষের জন্য করোনাভাইরাসের টিকার ব্যবহার নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চাইবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি মাসের ২৬ তারিখ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় তিনি এ নিয়ে প্রস্তাব দেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জাতিসংঘের ৭৫ তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিয়ে আজ সোমবার আয়োজিত এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান। জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরের মাথায় এই প্রথমবারের মতো সাধারণ পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে ভার্চুয়ালি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনে যে করোনাভাইরাস প্রসঙ্গ বিশেষ গুরুত্ব পাবে এটা স্পষ্ট। মহামারির ছোবল থেকে জনস্বাস্থ্য আর অর্থনীতিকে বাঁচাতে কীভাবে একে অন্যকে সহযোগিতা করবে, এটা প্রাধান্য পাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতিসংঘের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভার্চুয়াল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার ভোর চারটায় প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন এবং আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত অন্য মোট সাতটি অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মূল বক্তব্য দেবেন, যেখানে রোহিঙ্গা বিষয়সহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে তুলে ধরবেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় কোভিড-১৯, রোহিঙ্গা সমস্যা, লিঙ্গবৈষম্য কমানো, অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসহ অন্যান্য বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বলবেন জানতে চাইলে আবদুল মোমেন বলেন, ‘তিনি কী বলবেন আমি জানি না, তবে আগে যা বলেছেন তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তিনি বক্তব্য দেবেন। প্রতিবারের মতো এবারও জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যাটি তুলে ধরবেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আইসিজেতে চলমান মামলা এবং আইসিসিতে রোহিঙ্গা নির্যাতনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়ার কারণে এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা আগের বছরগুলোর মতোই গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হবে।’
সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবার ভার্চুয়াল হওয়ায় অতীতের মতো এবার আর অধিবেশনের ফাঁকে কোনো বৈঠক হবে না।
সূত্রঃ প্রথমআলো
বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ বিপুল সম্পদের মালিক গাড়িচালক মালেক গ্রেপ্তার! স্বাস্থ্যে আরেক ‘আবজাল’
তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আব্দুল মালেক ওরফে বাদল (৬৩)। পেশায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক। সর্বশেষ চালাতেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে বরাদ্দ করা সরকারি গাড়ি। অধিদপ্তরের অপর দুটি গাড়ির একটি দিয়ে নিজের গরুর খামারের দুধ বিক্রি করেন, অন্যটিতে চড়তেন তার পরিবারের সদস্যরা। ঢাকায় রয়েছে তার কাঠায় কাঠায় জমি, একাধিক বহুতল বাড়ি ও বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। ডেইরি ফার্মসহ বিভিন্ন ব্যবসায় লগ্নি আছে কোটি কোটি টাকা। ব্যাংকেও আছে নামে-বেনামে টাকা। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যের এই গাড়িচালকের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকার বেশি। অবৈধ সম্পদ গড়তে গিয়ে অনিয়ম-অপকর্মে তিনি যেন ছাড়িয়ে গেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত-সমালোচিত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনকেও। স্বাস্থ্যের এই ‘নয়া আবজাল’ টাকা পাচার করেছেন বিদেশেও।
গতকাল রোববার র্যাব-১-এর একটি দল চালক মালেককে রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। অবশ্য এর আগেই তার অপকর্ম আর সম্পদের অনুসন্ধান চালাতে শুরু করেছিলেন গোয়েন্দারা। সেখানে মালেকের যে সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে, তাতে বিস্মিত সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা। একজন গাড়িচালকের বেতনই বা কত? কিন্তু তিনি সেই সামান্য চাকরি করেই সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। গাড়িচালক পরিচয়েই টাকার কুমির বনে গেছেন মালেক।
জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সমকালকে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে মালেকের সম্পদের পরিমাণ শতকোটি টাকার বেশি। নামে-বেনামে আরও কোথায় কী পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন সমকালকে বলেন, চার বছর ধরে মালেক আমার চালক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছে। তবে কখনও তার অনিয়ম বা কোনো দুর্নীতির ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। আমার কানেও আসেনি। এর আগে সে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরেকজন ডিজির গাড়ি চালিয়েছিল।
তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর দেশজুড়ে ক্যাসিনোসহ দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে শুদ্ধি অপারেশন শুরু করেছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কয়েক মাস ধরে ওই অভিযান স্থবির ছিল। স্বাস্থ্যের মালেকের গ্রেপ্তারের বিষয়টি দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের অংশ। শিগগির এ ধরনের আরও কয়েকজন গ্রেপ্তার হতে পারেন।
কীভাবে এত কিছুর মালিক হলেন এই ক্ষুদ্র কর্মচারী- সে অনুসন্ধানেও বিস্মিত হতে হবে সবাইকে। তিনি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও প্রভাবশালী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে। ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন খুলে তিনি এর সভাপতি হয়েছেন। সেই পদের দাপট দেখিয়ে জিম্মি করে ফেলেছিলেন পুরো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে। নিয়োগ-বদলি থেকে শুরু করে পদোন্নতিও হতো তার অফিস থেকেই!
জানা যায়, অষ্টম শ্রেণি পাস মালেক ১৯৮২ সালে সাভারে একটি স্বাস্থ্য প্রকল্পে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন। দুই বছর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে তার চাকরি স্থায়ী হয়। এরপর তিনি প্রেষণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরে গাড়িচালক হিসেবে বদলি হন। গ্রেপ্তার হওয়ার আগ পর্যন্ত কাগজে-কলমে সেখানেই তিনি গাড়িচালক ছিলেন। এর আগে মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদ্য সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের গাড়ির চালকও ছিলেন। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আগামী ২২ অক্টোবর মালেককে তলব করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে দুদকের হাজিরা দেওয়ার আগেই র্যাবের হাতে ধরা পড়লেন তিনি।
যত সম্পদ: ধর্মের লেবাস নিয়ে চলাফেরা করতেন আব্দুল মালেক। বিয়ে করেছেন দুটি। প্রথম স্ত্রী নার্গিস আক্তারের নামে তুরাগের দক্ষিণ কামারপাড়ায় রমজান মার্কেটের উত্তর পাশে ছয় কাঠা জায়গার ওপর সাততলা দুটি আবাসিক ভবন তৈরি করেছেন, যার নাম ‘হাজী কমপ্লেক্স’। এ দুটি ভবনে ২৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর একটি ভবনের তৃতীয় তলার এক আলিশান ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। বাকি ফ্ল্যাটগুলো ভাড়া দিয়েছেন।
র্যাব সূত্র জানিয়েছে, এ ছাড়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মালেকের আরও ১০ থেকে ১২ কাঠা জায়গা রয়েছে। এর মধ্যে ধানমন্ডি মৌজার হাতিরপুল এলাকায় সাড়ে চার কাঠা জমিতে ১০ তলা ভবন নির্মাণাধীন। তার বড় মেয়ে বেবীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়া এলাকায় ১৫ কাঠা জায়গার ওপর ‘ইমন ডেইরি ফার্ম’ নামে একটি গরুর খামার রয়েছে। সেখানে অন্তত ৫০টি বাছুরসহ গাভি রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যেন তার ‘পারিবারিক প্রতিষ্ঠান’। তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, গাড়িচালক মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পদে লোকজনকে চাকরি দিয়েছেন। তাকে অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তারা সহায়তা করেছেন। তার ওই নিয়োগ-বাণিজ্যের বাইরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তিনি নিজের মেয়ে, জামাতা, ভাই, ভাতিজাসহ স্বজনদেরও নানা পদে নিয়োগ দিয়ে যেন পুরো অধিদপ্তরকেই পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ফেলেছিলেন।
র্যাব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মালেক তার ছোট মেয়ে নৌরিন সুলতানা বেলীকে অধিদপ্তরের অফিস সহকারী পদে চাকরি দিয়েছেন। আপন ভাই আব্দুল খালেক আর ভাতিজা আব্দুল হাকিম রয়েছেন অফিস সহায়ক পদে। বড় মেয়ে বেবীর স্বামী রতনকে দিয়েছেন ক্যান্টিন ম্যানেজারের চাকরি; ভাগ্নে সোহেল শিকারী রয়েছেন গাড়িচালক পদে। এ ছাড়া ভায়রা মাহবুবকেও দিয়েছেন গাড়িচালকের চাকরি; নিকটাত্মীয় কামাল পাশা রয়েছেন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক পদে।
যে প্রভাবে শতকোটি টাকার মালিক তিনি: সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ড্রাইভার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে ভুঁইফোঁড় সংগঠন খুলে এর সভাপতি হওয়ার পরই যেন মালেক হাতে ‘আলাদিনের চেরাগ’ পেয়ে যান। ওই পদের ক্ষমতাবলে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলের চালকদের ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন। ওই পদের কারণে অধিদপ্তরের অসাধু সিন্ডিকেটে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গেও তার সখ্য গড়ে ওঠে। এর পর থেকেই গাড়িচালকসহ বিভিন্ন ছোট পদে নিয়োগ-বদলি আর পদোন্নতির ‘বড়কর্তা’ বনে যান তিনি। এসব অপকর্ম করে কোটি কোটি টাকা আয় করেন তিনি।
মালেকের অপকর্ম অনুসন্ধানে সংশ্নিষ্ট র্যাবের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, গাড়িচালক মালেক শুধু ছোট পদেই বদলি-পদোন্নতি দিতেন না; তিনি চিকিৎসকদেরও বদলি-পদোন্নতিতে হস্তক্ষেপ করতেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) দপ্তরের কর্মকর্তাদের জিম্মি করে চিকিৎসকদের বদলি-পদোন্নতিসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে কর্মচারীদের নিয়োগ-বদলি করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন এই মালেক।
যে তিনটি গাড়ি মালেকের কবজায়: সূত্র জানায়, চালক হলেও মালেক বহু বছর ধরে নিয়মিত গাড়ি চালান না। তবে তার কবজায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নামে বরাদ্দ করা সাদা রঙের একটি পাজেরো জিপ (ঢাকা মেট্রো গ-১৩-২৯৭৯) ছিল। সেটি ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করতেন। এ ছাড়া অধিদপ্তরের একটি পিকআপ (ঢাকা মেট্রো ঠ-১৩-৭০০১) নিজের গরু খামারের জন্য খাবার সরবরাহ, দুধ বিক্রি এবং জামাতার ক্যান্টিনের মালপত্র বহনে ব্যবহার করতেন তিনি। অপর একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো চ-৫৩-৬৭৪১) তার পরিবারের অন্য সদস্যরা ব্যবহার করতেন। এর চালকও অধিদপ্তরের নিয়োগ করা। ওই মাইক্রোবাসের চালকের নাম কামরুল।
জাল টাকা ও অবৈধ অস্ত্রের কারবার!: গতকাল মালেককে গ্রেপ্তারের পর র্যাব কর্মকর্তারা জানান, সম্পদ গড়ার লোভে গাড়িচালক মালেক যেন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। নিজের সম্পত্তি আর ‘সাম্রাজ্য’ রক্ষায় অবৈধ অস্ত্রও ছিল তার দখলে। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসার সঙ্গে জাল মুদ্রার ব্যবসাও ছিল তার। মালেক তুরাগ এলাকায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শক্তির মহড়া ও দাপট দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করতেন। তাকে গ্রেপ্তারের সময় বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও দেড় লাখ জাল টাকা জব্দ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সুলতানা দাবি করেন,
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার বাবাকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। তাদের এত সম্পদ নেই। তাদের বাড়িও দুটি নয়, একটি। তার বাবার সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা আছে।
তিনি অবশ্য স্বীকার করেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি গাড়ি তার বাবা ব্যবহার করতেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদোন্নতির পর নতুন একটি গাড়ি ব্যবহার শুরু করেন। পুরোনো গাড়িটি তার বাবা মাঝেমধ্যে বাসায় নিয়ে আসতেন। তবে নিয়মিত ব্যবহার করতেন না।
মালেক যেন স্বাস্থ্যের ‘আবজাল’: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল এডুকেশন শাখার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ছিলেন আবজাল হোসেন। কিন্তু ১৯৯২ সালে তিনি অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি নিয়েছিলেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছিলেন। নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি ও ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করতেন আবজাল। এভাবে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছিলেন তিনি। তার অপকর্মে জড়িয়েছিলেন স্ত্রীও। গাড়িচালক মালেককে গ্রেপ্তারের পর আবার আলোচনায় এসেছে আবজালের নাম।
দুদকের অনুসন্ধানে আবজাল দম্পতির নামে রাজধানীর উত্তরায় ১৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডে তিনটি পাঁচতলা বাড়ি থাকার তথ্য বেরিয়ে আসে। এ ছাড়া একই এলাকার ১৬ নম্বর রোডে পাঁচতলা বাড়ি ও উত্তরার ১১ নম্বরে সেক্টরে থাকার বিষয়টিও জানা যায়। শুধু তাই নয়, ওই কর্মচারীর নামে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও ফরিদপুরে সারি সারি জমি এবং অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি থাকার তথ্য মেলে। চলতি বছর আবজাল আত্মসমর্পণের পর তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
সূত্রঃ সমকাল
জাতীয় দলের ১১ ক্রিকেটার আইসোলেশনে
১১ জন ক্রিকেটারকে আইসোলেশনে পাঠিয়েছে বিসিবি। উপসর্গ দেখা দেয়া দুই ক্রিকেটারের সংস্পর্শে আসায় তাদেরকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়। আজ রবিবার ( ২০ সেপ্টেম্বর) এক বার্তায় বিসিবি জানায়, ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার পর সকল ক্রিকেটারের করোনা নেগেটিভ এসেছে।
ঢাকার বাইরে থেকে আসা ১০ ক্রিকেটারসহ দুইবার করোনা পজিটিভ হওয়া সাইফ হাসানকে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি ভবনে ১১জন ক্রিকেটার বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন।
১১জনের মধ্যে পাঁচ ক্রিকেটার- এবাদত হোসেন, নাইম হাসান, মোহাম্মদ মিঠুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও নাজমুল হোসেন শান্ত একাডেমি গ্রাউন্ডে ফিটনেস ট্রেনিং এ ঘাম ঝরাচ্ছেন। অন্য ছয়জন- সাইফ হাসান, হাসান মাহমুদ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, আবু জায়েদ রাহি, শফিউল ইসলাম ও সাইফউদ্দিন বিশ্রামে আছেন। অন্য ১৬জন আজ থেকে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে স্কিল ক্যাম্প শুরু করেছেন। এই ১৬জন ক্রিকেটার ইতোমধ্যে সোনারগাঁও হোটেলে উঠেছেন এবং জৈব-সুরক্ষা পরিবেশে আছেন।
বিসিবি জানায়, ‘১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর স্কিল ক্যাম্পের ২৭জন ক্রিকেটারের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে, ২ জন ক্রিকেটারের মধ্যে করোনা উপসর্গ বর্ডার লাইন নেগেটিভ দেখাচ্ছে এবং একজনের করোনা পজিটিভের মতো লক্ষণ দেখাচ্ছে। পরবর্তী করোনা পরীক্ষার আগে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকবেন তারা। ক্যাম্পের জন্য ডাক পাওয়া ২৭ ক্রিকেটারের ওই দিন আবারো সতর্কতা হিসেবে করোনা পরীক্ষা করা হবে।’
আগামী ২২ সেপ্টেম্বর করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসা ক্রিকেটাররা অনুশীলনে যোগ দিতে পারবেন।
সূত্রঃ ইত্তেফাক/এসআই
যে কারণে দেশে আগামী শীতে ভয়াবহ হবে করোনা
আসন্ন শীতকালে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে এখন থেকেই তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি বলেছেন যে, ‘শীতকাল আসন্ন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। আমাদের এই মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’
কিন্তু শীতকালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি কতটা খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে?
আর কেন এই আশঙ্কা?
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদ্য সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং অণুজীব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সানিয়া তাহমিনা বলছেন, ‘কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ কিন্তু গত বছর শুরু হয়েছিল শীতকালেই, ডিসেম্বর মাসে। তখন দেখা গেছে, শীতপ্রধান দেশগুলোয় দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে সারা বিশ্বেই আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, শীতকালে এই রোগটির প্রাদুর্ভাব আবার বেড়ে যেতে পারে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর মধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যে আসছে শীতে করোনাভাইরাস মহামারী আরো মারাত্মক রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে শীতের আগে থেকেই উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোয় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।
ড. সানিয়া তাহমিনা বলছেন, যে তাপমাত্রায় এই ভাইরাসটি বাড়ে, সহজে সংক্রমিত করতে পারে বা নিজের দ্রুত বিস্তার ঘটাতে পারে, শীতকাল সেটার জন্য আদর্শ। এ কারণেই ধারণা করা হচ্ছে যে, শীতকালে এই ভাইরাসের বিস্তার বেশি হতে পারে।
এই সময়ে বাতাকে আর্দ্রতা কম থাকায় হাঁচি, কাশি দেয়া হলে বাতাসে জীবাণুর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাগুলো অনেকক্ষণ ধরে ভেসে থাকে। গরমের সময় সেটা যখন দ্রুত ধ্বংস হয়ে যায়, কিন্তু শীতের সময় অনেকক্ষণ ধরে বাতাসে থাকে। ফলে মানুষের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে।
করোনাভাইরাসের জীবাণুর ক্ষেত্রে যে নিউক্লিয় এনভেলাপ থাকে, অর্থাৎ ভাইরাসের বাইরে যে আবরণ থাকে, যেটি জীবাণুর জেনেটিক কণাগুলোকে ঘিরে রাখে সেটাকে বলা হয় লিপিড মেমব্রেন। এই আবরণটা তৈলাক্ত ধরণের। শীতকালীন পরিবেশে সেটা অনেকক্ষণ টিকে থাকতে পারে।
যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসের জন্য বিশেষ করে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিশেষ অনুকূল বলে দেখা গেছে।
সূর্যের আলোয় যে অতিবেগুনি রশ্মি থাকে তা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। কিন্তু শীতের সময় অতিবেগুনি রশ্মির পরিমাণও কম থাকে। কিন্তু শীতকালে করোনাভাইরাসের বিস্তার বেশি হয়, এমন কোন বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। অনেক সময় দেখা যায়, সাধারণ সর্দিকাশির মতো অনেক রোগ শীতকালে বেড়ে যায়।
কিন্তু কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে সাধারণ ফ্লু থেকে করোনাভাইরাসকে আলাদা করা। কারণ করোনাভাইরাস এবং সাধারণ ফ্লুর লক্ষ্মণ অনেক সময় একই রকমের হয়ে থাকে।
সেক্ষেত্রে পরীক্ষার সংখ্যা যেমন বাড়াতে হবে, সর্দিকাশির লক্ষণ দেখা দেয়ার পর পরীক্ষা করানোর ব্যাপার মানুষজনকেও আগ্রহী হয়ে উঠতে হবে।
কী ধরণের সতর্কতা নিতে হবে? : বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু এখনো এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী টিকা বাজারে আসেনি, তাই সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাই একমাত্র উপায়।
বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. তাহমিনা শিরিন বলছেন, ‘নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার ওপর জোর দিতে হবে। হাত ধোয়া, হাঁচি কাশির সময় শিষ্টাচার রক্ষা করা ইত্যাদি যে বিষয়গুলো এতদিন ধরে বলা হচ্ছে, সেটাই আরও কড়াকড়িভাবে পালন করতে হবে। সেই সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়গুলোও অব্যাহত রাখতে হবে।’
তবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আভাস দিয়েছেন যে, এসব ক্ষেত্রে লকডাউনের মতো বিষয় আপাতত ভাবা হচ্ছে না। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হলেন মোট ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯১৬ জন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত দেশটিতে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৪ হাজার ৯৩৯ জন।
বিশ্বের অনেক দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গেলেও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, দেশটিতে আক্রান্তের তুলনায় সুস্থ হয়ে ওঠার হার অনেক বেশি।
-বিবিসি
নাকে ঘ্রাণ না পাওয়ার কারণ এবং করোনার সাথে সম্পর্ক
জন্মের সময় আমরা পাঁচটি বিশেষ অনুভূতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করি, সেগুলোকেই বলা হয় পঞ্চইন্দ্রীয়। তার মধ্যে অন্যতম হল গন্ধ পাওয়ার ক্ষমতা। আমাদের দেহের সবচেয়ে দৃষ্টিগোচর অংশ হলো মুখ এবং এই মুখের মাঝখানে থাকে নাক। আমরা নাকে ঘ্রাণ বা গন্ধ পাই অলফেক্টরি নামক স্নায়ুর মাধ্যমে। নাকের ভেতরে ওপরের দিকে এই বিশেষ স্নায়ুতন্ত্রটি ছড়িয়ে রয়েছে যা গন্ধ শনাক্ত করে। শ্বাস নেওয়ার সময় প্রবেশ করা বাতাস এসব স্নায়ুতন্ত্রে আঘাত করে, তখনই ঘ্রাণ বা গন্ধের উদ্রেক হয়। নাকের দুই দিকেই স্নায়ুতন্ত্র সমানভাবে থাকে, যাকে বলে গন্ধ গ্রহণের চিহ্নিত এলাকা। এই স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভ সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত। কোনো কারণে এই নার্ভটি অকার্যকর হয়ে গেলে আমরা ঘ্রাণ বা গন্ধ পাই না। আর ঘ্রাণ না পেলে আমাদের জিহ্বার টেস্ট বাড যা স্বাদ পেতে সাহায্য করে, তাও অকার্যকর হয়ে যায়। ফলে একই সাথে নাকে ঘ্রাণ না পেলে মুখে স্বাদও পাই না। তাই বলা হয় ঘ্রাণশক্তি এবং স্বাদ একে অন্যের পরিপূরক।
নাকের ঘ্রাণ শক্তি কমে যাওয়ার কারণ গুলো :
১. নাকের লোকাল/নিজস্ব কারণ:
* সাধারণ ঠান্ডা থেকে সর্দির কারণে নাক বন্ধ হয়ে থাকা
* অ্যালার্জিজনিত নাকের হাঁচি সমস্যা,
* সাইনুসাইটিস, * নাকের হাড় বাঁকা, * নাকের পলিপ,
* নাকের বিভিন্ন ধরণের টিউমার,
*এট্রফিক রাইনাইটিস (যেটাতে রোগী নিজে ঘ্রান পাবেনা, কিন্তু পাশের লোকজন গন্ধ পাবে)।
২. মস্তিষ্কের সমস্যা:
*বার্ধক্য জনিত, *পারকিনসন ডিজিজ, * ব্রেইন টিউমার, * আলঝেইমার ডিজিজ, * মস্তিষ্কের অপারেশন, * মাথায় আঘাত পাওয়া।
৩. অন্যান্য কারণ:
* অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস,
* রেডিও থেরাপি, * জন্মগত সমস্যা, * মানসিক রোগ।
৪.কারো কারো ক্ষেত্রে কিছু ওষুধ:
যেমন- হৃদরোগীদের জিটিএন, ক্যাপট্রোপিল ইত্যাদি ড্রাগ এর কারণে। এছাড়াও জীবাণুনাশক ওষুষের সংস্পর্শে আসলে। একটানা দীর্ঘদিন ধরে নাকের ড্রপ (এন্টাজল/রাইনোজল/আফরিন) চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করলে।
কোভিড-১৯ এর সাথে ঘ্রাণ শক্তি কমে যাওয়ার সম্পর্ক:
আমরা জানি করোনা ভাইরাসের একটি অন্যতম প্রবেশপথ হচ্ছে নাক। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির নাক দিয়ে প্রবেশ করে নাকের ভেতরে ওপরের দিকে পার্শ্ব দেয়াল বা নাকের ছাদে গন্ধ নির্ণয়ের জন্য যে সেনসিটিভ নার্ভ রিসিপ্টর রয়েছে সেখানে ভাইরাস প্রাথমিক ভাবে বংশ বৃদ্ধি করতে পারে (যদিও আমরা জানি ভাইরাস এর বংশবৃদ্ধির প্রধান অংগ হলো ফুসফুস)। তখন করোনা ভাইরাস এই বিশেষ অলফ্যাক্টরি স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করলে, নাকের ভেতরে শ্বাসের সঙ্গে নেয়া বাতাস উল্লেখিত স্নায়ুর স্থানে পৌঁছতে পারে না বা ঘ্রাণের উদ্রেক করতে পারেনা। ফলে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি তখন ঘ্রাণ পাবেন না। গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা চলে যায় বলেই খাবার আমাদের কাছে স্বাদহীন হয়।
কখন ঘ্রাণ না পেলে করোনা সন্দেহ করবেন:
উপরে উল্লেখিত নাকের নিজস্ব বা অন্যান্য কারণের কোনটির লক্ষণ যদি না দেখা যায় এবং নাকের রোগের ইতিহাস না থাকে, তাহলে হঠাৎ করে ঘ্রাণ চলে গেলে ধরে নিতে হবে আপনি করোনা আক্রান্ত। কয়েকদিন আগে জ্বর হয়ে ভালো হয়েছে, কিন্তু এখনও নাকের গন্ধ পাচ্ছেনা না তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই করোনার টেস্ট করা উচিত। টেস্ট যদি তাৎক্ষণিকভাবে করা সম্ভব না হয়, তবে আগে নিজেকে পরিবারের বাকিদের থেকে আইসোলেশনে রাখবেন। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে গবেষণায় দেখা গেছে যেসব করোনা আক্রান্ত রোগীর নাকের ঘ্রাণ চলে যাওয়ার উপসর্গ ছিলো তারা বেশীরভাগই অল্পদিনের মধ্যেই নিয়ম মেনে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ঊঠেছেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে আইসোলেশন এবং বিশ্রামে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক নিয়ম মেনে চলতে হবে। গরম পানির ভাপও নিতে হবে অন্ততপক্ষে দিনে পাঁচ বার।
ঘ্রাণ শক্তি ফিরে পেতে কিছু ঘরোয়া টেকনিক :
ঘ্রাণ শক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করে এমন কয়েকটি সহজলভ্য উপাদানের ঘ্রাণ প্রতিদিন নিয়মিত ২-৩ বেলা শুকতে পারেন। যেমন : লেবুর পাতা, লেবু, গোলাপ ফুল, গোলাপ জল, লবঙ্গ। যদি হাতের কাছে এসব কিছু না পাওয়া যায় তবে লেবু ও গোলাপ ফুলের গন্ধযুক্ত সাবানও কাজে আসতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা আক্রান্ত হওয়ার সাত থেকে ১৪ দিনের মধ্যে স্বাদ-গন্ধের অনুভূতি ফিরে আসছে। কিন্তু ১০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে বেশি সময় লাগছে। তাদের ক্ষেত্রে এই ঘ্রাণশক্তি এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই ফিরে আসে। মনে রাখতে হবে, ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়া স্নায়ুতন্ত্র পুনরায় তৈরী হতে কিছু সময়তো লাগবেই। সাধারণত এর জন্য আলাদা করে কোনো ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে কোন কোন চিকিৎসকরা ভিটামিন বি১,বি৬ এবং বি১২ ট্যাবলেট এর কথা বলে থাকেন।
পরিশেষে বলি, আতংকিত না হয়ে সচেতন থাকি এবং সচেতন রাখি।
ডা: মো: আব্দুল হাফিজ শাফী
নাক-কান-গলা বিভাগ,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা।
সূত্রঃ ইনকিলাব
মস্তিষ্কের অদ্ভুত ব্যায়াম যা স্মৃতি বাড়াবে
মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা দিলে এটি ভালো থাকে। আমরা বার বার যা করি মস্তিষ্ক তাই ধারণ করে এবং স্মৃতি হিসেবে রেখে দেয়। অভ্যাসের বাইরে গিয়ে কিছু করাটাই মস্তিষ্কে নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান। এতে মস্তিষ্কের স্মৃতিক্ষয় হওয়া রোধ পায়। স্মৃতিক্ষয় প্রতিরোধ এবং আপনার মনকে উৎফুলস্ন রাখার জন্য ছোট ছোট কিছু মানসিক ব্যায়াম নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে প্রথম পর্ব।
মস্তিষ্ককে সজাগ রাখা:
মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞা দিলে শারীরিক অনুভূতি- শোনা, দেখা, স্বাদ নেওয়া, গন্ধ নেওয়া, স্পর্শ করা- এসব সঙ্গে মানসিক অনুভূতি যুক্ত হয়ে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশগুলোর মধ্যে আরো বেশি সংযোগ সৃষ্টি করে। নার্ভ কোষগুলো মস্তিষ্কের পুষ্টি উৎপাদন করে- যা নাটকীয়ভাবে স্মৃতি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং পার্শ্ববর্তী কোষগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে এবং বার্ধক্যজনিত প্রভাবগুলো অনেক বেশি প্রতিরোধী করে তোলে।
বাম হাত দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা:
আমরা বেশিরভাগ মানুষ আমাদের প্রায় সব কাজই ডান হাত দিয়ে করি। এর কারণ আমাদের মস্তিষ্কের ডান অংশ বেশি অনুভূতিশীল। গবেষণার মাধ্যমে বলা হয়, মস্তিষ্কের অপর পাশের ব্যবহার করটেক্সের বিভিন্ন অংশের দ্রম্নত এবং উলেস্নখযোগ্য সম্প্রসারণ ঘটায়। তাই আপনি যদি ডানহাতি হন তাহলে বাম হাত দিয়ে ব্রাশে টুথপেস্ট লাগান এবং বাম হাত দিয়েই দাঁত ব্রাশ করুন এবং বামহাতি হলে ডান হাত দিয়ে কাজগুলো করুন।
চোখ বন্ধ করে গোসল করা:
আমাদের হাত শরীরের বিভিন্ন অঙ্গবিন্যাস পর্যবেক্ষণ করতে পারে- যা আমাদের চোখ দেখতে পারে না এবং সেই তথ্য মস্তিষ্কে প্রদান করে। মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা প্রদান করার জন্য চোখ বন্ধ করে গোসল করুন। তবে পানির তাপমাত্রা চোখ খোলা অবস্থায় ঠিক করে নিন।
সকালের কার্যক্রমে পরিবর্তন আনা:
আমরা যে কাজগুলো নিয়মিত এবং বারবার করি, মস্তিষ্ক সেই কাজগুলোর নির্দেশনা দেয় বেশি বা মস্তিষ্কে সেই কাজের অনুশীলন হয় বেশি। আপনার মস্তিষ্ক ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন কাজের কথা ভাববে না যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি তাকে নতুন কোনো কাজ দেবেন। তাই সকালের শুরুতেই কাজের কিছুটা পরিবর্তন আনুন। যেমন নাস্তা করার পর আপনার পোষা প্রাণীকে নিয়ে একটু হেঁটে আসতে পারেন অথবা টেলিভিশনে বাচ্চাদের কোনো অনুষ্ঠান দেখতে পারেন।
পরিচিত জিনিসগুলো উল্টে রাখুন:
আমরা যখন কোনো কিছু ঠিকভাবে দেখি তখন আমাদের মস্তিষ্কের যে অংশ কম সাড়া দেয়, যেমন সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বাম অংশ চেষ্টা করে আমাদের মনোযোগ অন্যত্র সরানোর। কিন্তু যখন আমরা কোনো কিছু উল্টানো অবস্থায় দেখি তখন আমাদের মস্তিষ্কের ডান অংশের মনোযোগ বেড়ে যায় সেই জিনিসটির প্রতি এবং এটি তখন তার আকার, বর্ণ বিশ্লেষণ করতে থাকে। তাই আপনার মস্তিষ্ককে নতুন অভিজ্ঞতা দিতে চাইলে ঘরে রাখা পারিবারিক ছবি, টেবিলে রাখা ঘড়ি এবং ক্যালেন্ডার উল্টে রাখুন।
খাবার টেবিলের চেয়ার পরিবর্তন করা:
প্রায় প্রত্যেক পরিবারে সবার আলাদা আলাদা চেয়ার থাকে যেটাতে বসে খাওয়া হয়। আপনার ও থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু নতুন অভিজ্ঞতা আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভালো তাই আপনার ঘরের খাবার টেবিলের চেয়ারগুলো উল্টিয়ে পাল্টিয়ে বা পরিবর্তন করুন নিজের ইচ্ছামতো।
সূত্রঃ যায়যায়দিন
শীতে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শীতকালে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এই মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
৩৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ ফান্ডে অনুদান গ্রহণকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুদান হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শীতকাল আসন্ন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। আমাদের এই মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘সবাই এই পরিস্থিতিতে (করোনাকালে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে) অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন। আর এ জন্যই আমরা এই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি।’
কোভিড-১৯-এর অভিঘাত থেকে দেশের অর্থনীতিকে মুক্ত রাখতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণাসহ সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে সচল রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি এবং যেখানে যা প্রয়োজন তাই দিয়েছি। কারণ জনগণের সেবা করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাঁর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) প্রাঙ্গণে এই অনুদানের চেক গ্রহণ করেন। করোনা মোকাবিলায় জাতির সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে এই আর্থিক অনুদান দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা সংগঠনগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। দেশের যে কোনো সংকটে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি) হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান।
সূত্রঃ প্রথম আলো
International Webinar on PCOS
Polycystic Ovarian Syndrome (PCOS ) is a burning health issue of women’s health. PCOS Club of Bangladesh (PCoB) inviting you to an international webinar on “PCOS Challenges”.
Block the Date : 21 September, 2020 (Monday)
Time : 8:00 pm – 10.00 pm (BD time)
Please click this URL to join: https://nuvistapharma-net.zoom.us/j/96568781806
Webinar ID: 965 6878 1806 and Passcode: 789118
Join and ask your queries regarding PCOS.