ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতালের ১২ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২৫ শে সেপ্টেম্বর ফ্রি হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে।

বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস ও ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতালের ১২ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ২৫ শে সেপ্টেম্বর ২০২০ রোজ – শুক্রবার, নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি ফ্রি হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত হেলথ ক্যাম্প উদ্বোধন করবেন কশবা মাজাইল ইউনিয়ন পরিষদের সন্মানিত চেয়ারম্যান, জনাব মোঃ কামরুজ্জামান এবং বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দিবেন বিশিষ্ট বাত,ব্যথা ও প্যারালাইসিস রোগে ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ ডাঃ এম ইয়াছিন আলী কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান-ফিজিওথেরাপি বিভাগ, প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, চেয়ারম্যান – ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা। যেসব রোগের চিকিৎসা সেবা ও পরামর্শ দেওয়া হবে- * ঘাড় ব্যাথা। * কোমর ব্যাথা। * হাঁটু ব্যাথা। * হাত ও পা ঝিনঝিন বা অবশ অবশ মনে হওয়া। * যে কোন প্রকারের বাত ব্যাথা ও জয়েন্টের রোগ সমূহ। * স্ট্রোক বা অন্য কারনে মুখ বেকে যাওয়া * স্ট্রোক পরবর্তী প্যারালাইসিস। * সকল ধরণের প্যারালাইসিস রোগের চিকিৎসা। * সাইটিকা ও মেরুদণ্ডের বিভিন্ন রকম সমস্যা * শিশুদের হাত পায়ের সমস্যা ও জন্মগত বিকলাঙ্গতা । *খেলাধুলায় আঘাত জনিত ব্যাথা ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা সেবা পরামর্শ । স্থানঃ নাদির হোসেন উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ রোগী দেখার সময়ঃ সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকেল ৩.০০ পর্যন্ত। ফ্রি রেজিস্ট্রেশন জন্য যোগাযোগ করুন – ০১৭৬১১৮৫৯৬৭

করোনা আপডেট

৫ হাজার ছুঁইছুঁই মৃতের সংখ্যা বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ছুঁতে চলেছে। ভাইরাসটির সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ গেছে আরও ৩২ জনের। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯১৩ জনে। একই সময়ে ১৩ হাজার ১৭০টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৬৭ জনের। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯০ শতাংশ। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৮ লাখ ৯ হাজার ৬৭৯টি। মোট করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৫১ জন করোনা রোগী। এ নিয়ে মোট সুস্থ হলেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৮৬ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৩ দশমিক ২৩ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। মৃত ও সুস্থ হওয়া করোনা রোগী বাদ দিলে বর্তমানে দেশে শনাক্ত হওয়া সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ৮৮ হাজার ৭৩ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩ হাজার ৩২৮ জন। ৯৬ ভাগের বেশি করোনা রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বাড়িতে থেকে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩২ জনের সবারই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে। এর মধ্যে ২৫ জন ছিলেন পুরুষ ও ৭ জন নারী। বয়স বিবেচনায় ৩২ জনের মধ্যে ১৭ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, ৮ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ৪ জন চল্লিশোর্ধ্ব এবং ৩ জনের বয়স ছিল ১১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ২২ জন ঢাকা বিভাগের, ৪ জন ময়মনসিংহ বিভাগের, ২ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন করে চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে সারা দেশের কভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোর ১৪ হাজার ২৫৫টি সাধারণ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ৩ হাজার ৩৪ জন। ৫৪৭টি আইসিইউর মধ্যে রোগী ভর্তি আছেন ২৯৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ৭ হাজার ৩৪৬টি হয়েছে ঢাকার ভিতরে ও ৫ হাজার ৮২৪টি হয়েছে ঢাকার বাইরে সারা দেশে। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সাক্ষাৎকারে এমরানুল হক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের অর্থায়ন জরুরি ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমরানুল হক বলেছেন, অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যাংকিং খাতে করোনার কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পরিচালন মুনাফা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। করোনাকালীন কয়েক মাস নতুন আমানত সংগ্রহ বা ঋণ প্রদান কোনোটাই সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার পথে। এ অবস্থায় অর্থনীতিতে গতি আনতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি। পুরোপুরি গতি ফিরতে আগামী মার্চ পর্যন্ত লাগতে পারে। আর মোট ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়েক বছর লাগবে। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। বেসরকারি খাতের অন্যতম ঢাকা ব্যাংকের নির্বাহী কর্মকর্তা এমরানুল হক প্রায় ৩৩ বছর ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। ১৯৯৮ সালে ঢাকা ব্যাংকে যোগ দিয়ে বিভিন্ন বিভাগে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই করোনা মহামারীর ভয়াবহ সংকট মোকাবিলা করেন। ঢাকা ব্যাংকের এসব সংকট সম্ভাবনা, দেশের ব্যাংকিং কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেছেন এমরানুল হক। এমরানুল হক বলেন, করোনার কারণে আয় সংকুচিত হওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ব্যয় সংকোচন বা ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। ব্যাংকের যত নিয়ন্ত্রণযোগ্য ব্যয় খাত আছে তার প্রতিটিতে কাজ করেছি। বিভিন্ন ব্যাংক এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের বেতন পর্যন্ত কমিয়েছে। আমরা আমাদের অন্যান্য ব্যয় খাতগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রেখেই এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা করেছি। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের লেনদেনের পরিমাণও বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। তবে নতুন করে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। করোনা সংকটে যে ক্ষতির সম্মুখীন আমরা হয়েছি তা কাটিয়ে উঠতে লম্বা সময় লাগতে পারে। সরকার ঘোষিত প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের সম্পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছে দেশের ব্যাংকিং খাত। সীমিত ঋণ আদায়, আমানতের প্রবৃদ্ধি হ্রাসের মতো প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ব্যাংকগুলোর সার্বিক চেষ্টার ফলে ঘোষিত প্যাকেজের সিংহভাগ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের মাঝে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা ব্যাংকের এমডি বলেন, করোনাকালীন নতুন আমানত সৃষ্টি হয়নি বললেই চলে। তাই প্রণোদনা বাস্তবায়নে স্বল্পসুদে ঋণ বিতরণের ফলে ব্যাংকগুলোর তারল্যের ওপর কিছুটা চাপ এসেছে। প্রণোদনার আওতায় প্রদত্ত ঋণ সুবিধাগুলোর মেয়াদ নির্দিষ্ট হওয়ায় এই ঋণ আদায়ের জন্য ব্যাংকগুলোকে দুই বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ফলে নতুন আমানতের সুযোগ সৃষ্টি না হলে ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়তে পারে। তবে নতুন ঋণ প্রদানের জন্য উপযোগী ক্ষেত্র প্রস্তুত হওয়ার আগ পর্যন্ত অলস তারল্যও ব্যাংকগুলোর জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারীতে ঋণ এবং আমানত দুই দিক থেকেই ব্যাংকগুলো সমস্যার মুখে পড়ছে। এমতাবস্থায়, ঢাকা ব্যাংকের অবস্থা বলব তুলনামূলক ভালো। একদম সূচনালগ্ন থেকেই ঢাকা ব্যাংক নিয়মতান্ত্রিক ব্যাংকিং করে আসছে। কিছু ছোটখাট দুর্ঘটনা ব্যতীত ঢাকা ব্যাংকের ইতিহাসে বড় কোনো ব্যাংকিং বিপর্যয়ের নজির নেই। আমাদের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত গ্রাহকদের ব্যবসায় সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও আমরা সহায়তা করছি। সমগ্র ব্যবসায় খাত বর্তমান পরিস্থিতিতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত। যেহেতু করোনার প্রভাব এখনো সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যায়নি, তাই ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার কারণে অধিকাংশ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিস্থিতি বিবেচনা করেই বিনিয়োগে যেতে চাইছে। তবে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান করোনাকালীনও ব্যবসায় সম্প্রসারণে সচেষ্ট আছে। তাই বলা যেতে পারে যে বর্তমানে সামগ্রিক ব্যবসায়িক খাতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ঢাকা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ১ এপ্রিল থেকে ৯ শতাংশ ঋণ সুদহার নির্ধারিত হওয়ায় ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে, যা কোনোভাবেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। আমরা চেষ্টা করছি অনগদ লেনদেন মানে আমদানি, রপ্তানি এবং গ্যারান্টি ব্যবসায়ে অধিক গুরুত্ব দিতে। সেই লক্ষ্যে ঢাকা ব্যাংকে আমরা সব ধরনের ওভারহেড খরচগুলোকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখার ব্যবস্থা করছি। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল পরিচালকের রুম ঘেরাও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালন করা চিকিৎসকরা নিরাপদ আবাসনের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। গতকাল আবাসনের দাবিতে তারা হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া, উপপরিচালক ডা. মামুন মোর্শেদ ও মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও কভিড ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. শাহাদাৎ হোসেন রিপনের রুম ঘেরাও করেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তার কিছু করার নেই। চিকিৎসকদের সরকারিভাবে কোয়ারেন্টাইন বাতিল করেছে মন্ত্রণালয়। কভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী একাধিক চিকিৎসক বলেন, ‘আমাদের হোটেল নেই, কোনো আবাসনের ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ করতে পারেনি। কিন্তু আমরা তো আমাদের পরিবারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারি না। অনেক চিকিৎসকের পরিবারের সদস্য তাদের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। মারা গেছেন তিন চিকিৎসকের বাবা ও শ্বশুর। আমরা কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। এর ভিতরে কোয়ারেন্টাইনের কোনো সমাধান না হলে, আমরা করোনা ইউনিটে আর ডিউটি করব না। তবে হাসপাতালের নন-করোনা ইউনিটে ডিউটি করব।’ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল পরিচালকের রুম ঘেরাও করে অপেক্ষারত চিকিৎসকরা বলেন, ‘হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়ার কক্ষ ঘেরাও করা হয়েছিল। তিনি আমাদের সামনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলমকে ফোন করেন, কিন্তু তিনি কোনো সমাধান দিতে পারেননি।’ প্রায় ৬৫ জন চিকিৎসক হাসপাতাল পরিচালক বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া বলেন, ‘চিকিৎসকদের দাবি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব বলে তাদের জানিয়েছি। ইতিমধ্যে আমি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং মন্ত্রণালয়কেও এটা জানাব। চিকিৎসকরা আমাদের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন, তাদের আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য।’ দেশে করোনা মোকাবিলায় গবেষণা কম করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে এবং রোগীর চিকিৎসায় গবেষণার তথ্য কাজে লাগাতে পারেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণার তথ্য দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সহায়তা করতে পারেনি। দেশের প্রধান প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ও মহামারি নিয়ে গবেষণায় পিছিয়ে আছে। বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি সে তুলনায় এগিয়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্বের শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠনের বেশ কিছু গবেষণা ইতিমধ্যে বিদেশি চিকিৎসাবিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এসব গবেষণার ফলাফল সরকারের কাছে পৌঁছায় কি না, পৌঁছালেও নীতিনির্ধারকদের কাছে তা কতটা গুরুত্ব পায়, তা নিয়ে অনেকেরই সংশয় আছে। করোনা মহামারি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এর প্রভাব শুধু স্বাস্থ্য, চিকিৎসা বা হাসপাতালের ওপর পড়েনি; প্রভাব পড়েছে সমাজ ও ব্যক্তির ওপর, ব্যবসা-বাণিজ্য-অর্থনীতির ওপর, এমনকি বিদেশনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপরও এর প্রভাব পড়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সী মানুষ করোনা পরিস্থিতির শিকার। নারী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর এর প্রভাব ভিন্ন ধরনের। করোনা নিরাময়ে সুনির্দিষ্ট ওষুধ নেই। টিকা উদ্ভাবনের কাজ চলছে। মহামারি ও করোনাভাইরাস–সংশ্লিষ্ট এসব বিষয় নিয়ে বিশ্বজুড়ে গবেষণা চলছে। বলা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নতুন ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পরপরই গবেষকেরা কাজে নেমে পড়েন। নতুন তথ্য-উপাত্ত ও বিশ্লেষণ জানার জন্য সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, নীতিনির্ধারক ও রাজনীতিকদের উন্মুখ হতে দেখা গেছে। এসব তথ্য মহামারি নিয়ন্ত্রণ, রোগীর চিকিৎসা ও জনদুর্ভোগ কমাতে কাজে লাগিয়েছে বিভিন্ন দেশ। করোনা–পরবর্তী জীবন কেমন হতে পারে, তা নিয়েও বড় বড় প্রতিষ্ঠান গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষেরও করোনা বিষয়ে নতুন তথ্য জানার ব্যাপক আগ্রহ আছে। অনেকে মনে করেন, করোনা বিষয়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে যে পরিমাণ গবেষণা, জরিপ বা সমীক্ষা হয়েছে ও হচ্ছে, তার তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। জনস্বাস্থ্যবিদ ও ব্র্যাকের সাবেক ভাইস চেয়ার আহমেদ মোশতাক রাজা চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দেশের মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। কেন মানছে না, তা জানা সম্ভব গবেষণা থেকে। কত মানুষ সংক্রমিত, তা–ও জানা সম্ভব। কিন্তু এসব বিষয়ে গবেষণার তথ্য জানাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যর্থ হয়েছে। এখনো গবেষণাই করছে দেশে রোগের ওপর নজরদারি ও রোগ নিয়ে গবেষণা করার দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটি করোনা নিয়ে দিনের পর দিন প্রেস ব্রিফিং করেছে, করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বেশ আগে থেকে একাধিক গবেষণা শুরু করেছে। তবে কোনো গবেষণা এখনো শেষ করতে পারেনি। দেশে করোনার সংক্রমণের সপ্তম মাস চলছে। আইইডিসিআর থেকে সংগ্রহ করা করোনাবিষয়ক গবেষণার তালিকায় দেখা যায়, ৮টি গবেষণা চলমান আছে। এর বাইরে তিনটি গবেষণা প্রকল্প তারা জমা দিয়েছে, এখন অর্থায়নের জন্য অপেক্ষা করছে। এ ছাড়া দুটি গবেষণা প্রকল্প পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে। একটি প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। কাজ শুরু না হলেও একটি প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত হয়েছে। চলমান গবেষণাগুলোর একটি স্বাস্থ্যকর্মীদের (চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সহকারী) করোনার ঝুঁকির কারণ নির্ণয় করা। অন্য একটি গবেষণা চলছে শুধু চিকিৎসকদের ঝুঁকির কারণ নির্ণয় করা। এই গবেষণা ফলাফল কবে প্রকাশ করা হবে এবং সেই ফলাফল চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দিতে কী কাজে লাগবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে, ইতিমধ্যে করোনায় ৮৮ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। আইইডিসিআর দেশে করোনা সংক্রমণের বাস্তব পরিস্থিতি জানতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) সঙ্গে যুক্ত থেকে ঢাকা শহরে জরিপ করেছে। এতে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি। প্রায় এক মাস আগে তথ্যের প্রাথমিক বিশ্লেষণ চূড়ান্ত করা হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। এসব বিষয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে তিনটি গবেষণা ফলাফল চূড়ান্ত করেছি। দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে এগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।’ রোগ নিয়ে গবেষণা করে সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসম)। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক বায়জিদ খুরশিদ রিয়াজ জানিয়েছেন, করোনা বিষয়ে তিনটি গবেষণা চলছে। এর একটি চূড়ান্ত হয়েছে। ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তবে ফলাফল নিয়ে একটি প্রবন্ধ যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড ইনফেকশন–এ প্রকাশ করার জন্য জমা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট) জনসংখ্যা, মাতৃস্বাস্থ্য, শিশুস্বাস্থ্য, হাসপাতালে সেবা পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ জরিপ করে আসছে কয়েক দশক ধরে। এই প্রতিষ্ঠানও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো জরিপ বা গবেষণা করেনি। প্রতিষ্ঠানের একজন শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তা বলেছেন, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের ওপর করোনার প্রভাব নিয়ে একটি জাতীয় জরিপ করার পরিকল্পনা তাঁদের আছে। সরকারের এই তিনটি প্রতিষ্ঠান করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সহায়তা করতে পারেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর দুটি জরিপ করেছে। রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০৯টি মৃত্যুর ঘটনা পর্যালোচনা করেছে। এ নিয়ে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। সূত্রঃ প্রথমআলো

হাইপারগ্লাইসেমিয়া (ডায়াবেটিস) কথন!

ডায়াবেটিস খুবই পরিচিত অসুখ। এখন প্রায় প্রতি ঘরে ঘরে ডায়াবেটিসের রোগী । ডায়াবেটিস হলে রক্তে গ্লকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় । ডায়াবেটিস হলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। সারা শরীরেই সমস্যা হতে পারে ডায়াবেটিসে। যদি কোনো ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লকোজ অনেক বেশি থাকে তাহলে তাকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলা হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের গ্লকোজ বিভিন্ন কারণে কমেও যেতে পারে। এই অবস্থাকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলে। হাইপারগ্লাইসেমিয়া বেশি বিপদজনক। হাইপারগ্লাইসেমিয়া এর বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায় । তবে সবার আবার একই রকম লক্ষণ থাকেনা। তবে যেসব লক্ষণ সাধারণত দেখা যায় তার মধ্যে আছেঃ ১। ঘন ঘন মূত্রত্যাগ। রোগী বারবার প্রস্রাব করতে থাকে ২। বমিভাব, বমি ৩। পানির তৃষ্ণা বৃদ্ধি পায় ৪। ঝাপসা দৃষ্টি ৫। মাথাঘোরা ৬। মাথাব্যথা ৭। অবসাদ ৮। অস্বস্তি ইত্যাদি। হঠাৎ হাইপারগ্লাইসেমিয়া হলে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে। নাহলে জীবন নাশের সম্ভাবনা থাকে। আবার দীর্ঘদিন যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকে তবে নানারকম শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসা না করলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া রোগ থেকে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে তার মধ্যে আছে: ১। হৃদরোগের সমস্যা ২।নার্ভের বিভিন্ন জটিলতা ৩। কিডনি বিকল ৪। রেটিনার সমস্যা ৫। চোখের ছানি ৬। দাঁতের সমস্যা ৭। মাড়ির সমস্যা ৮। বিভিন্ন চর্মরোগ ৯। যৌন সমস্যা ইত্যাদি । ডায়াবেটিসের চিকিৎসা প্রতিদিন করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ কোনভাবেই বাদ দেয়া যাবেনা। অনেক সময় রোগী নিজে নিজে ওষুধ সমন্বয় করেন। এই কাজ করা কখনই ঠিক নয়। আবার অনেকে নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে যান না। এর ফলে এই ধরণের সমস্যা বেশি হয়। ডায়াবেটিসের ওষুধ (খাবার ওষুধ বা ইনসুলিন) গ্রহণ হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া কখনই ঠিক নয়। শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণে ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্ক হওয়া উচিত। কিছু কিছু ওষুধ যেমন- স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যায় । চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তাই এসব ওষুধ খাওয়া যাবেনা । ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল সূত্রঃ ইনকিলাব

হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় কলা

কলা বহুগুণে সমৃদ্ধ। বিদেশি দামি ফলের দিকে না ঝুঁকে কম দামে দেশি ফল খাওয়াই ভালো। তাই শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ছোট-বড় সকলেরই একটি করে কলা খাওয়া উচিৎ। উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম বিদ্যমান থাকায় এটি একটি পুষ্টিকর খাবার। এর নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। পাকাকলা পটাশিয়ামের আধার। প্রতিদিন একটি বা দুটি কলা খেলে আপনার হৃদযন্ত্র অনেক বেশি সচল থাকবে এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। কলার পটাশিয়াম এমনকি কিডনিও ভালো রাখে। ইউরিনে ক্যালসিয়াম জমা হতে বাধা দেয় বলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এরফলে হাঁড় মজবুত হওয়ার জন্যও আরো বেশি ক্যালসিয়াম বরাদ্দ থাকে। কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা ও সল্যুবল ফাইবার, যা ধীরে হলেও দৃঢ় শক্তির যোগান দেয় শরীরে। কলায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। কলা প্রোটেক্টিভ মিউকাস লেয়ার বৃদ্ধির মাধ্যমে পাকস্থলিতে পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে, যা আপনাকে বুক-জ্বালা ও পাকস্থলীর আলসার থেকে রক্ষা করবে। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত পাকাকলা শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নামক এক ধরনের যৌগ সরবরাহ করে, যা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়ায়। এতে করে ব্লাড ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। কলায় আছে ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড যা সেরোটোনিনে পরিবর্তিত হয়। সেরোটোনিনের সঠিক মাত্রা আপনার মুড ঠিক রাখবে এবং মানসিক চাপ কমাবে। এতে করে আপনার ভালো ঘুম হবে। কলার চামড়ায় কিছু পরিমাণে ফ্যাটি উপাদান আছে, যা ত্বকে ঘষলে ময়েশ্চারাইজারের মতো উপকার পেতে পারেন। আবার ব্রণ দূর করার জন্যও কলার চামড়া ব্যবহার করা হয়। তবে সবধরনের ত্বকের জন্য তা কাজ নাও করতে পারে। তবু একবার চেষ্টা করে দেখতে তো দোষ নেই! কলা ডোপামিন, ক্যাটেচিন্স এর মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এর দারুণ উৎস। এগুলো শরীরকে সার্বিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার কাজ করে। কলায় রয়েছে বিপুল পরিমাণে আয়রন যা শরীরে লহিত রক্তকণিকার মাত্রা বৃদ্ধি করার মধ্যে দিয়ে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন রোগে ভুগছেন, তারা আয়রন ট্যাবলেটের পাশাপাশি যদি নিয়ম করে কলা খেতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুণ উপকার মিলতে পারে। সূত্রঃ মানব কন্ঠ

মাস্ক পরার কারণে কানে ব্যথা হচ্ছে? কী করবেন

করোনা ভাইরাস মহামারি আমাদের জীবনযাত্রাকে অনেকখানি বদলে দিয়েছে। এখন বাড়ির বাইরে পা রাখার মানেই সঙ্গে মাস্ক, গ্লাভস এবং স্যানিটাইজার বহন করা। এছাড়াও, সংক্রমণ এড়াতে সামাজিক দুরত্ব ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার কথাও ভাবতে হচ্ছে। করোনা এড়াতে সর্বক্ষণ মাস্ক পরে থাকতে হচ্ছে, এর ফলে ত্বকের নানা সমস্যা এবং কানের পিছনে ব্যথা দেখা দিচ্ছে। এছাড়া কান লাল হওয়া, জ্বালা, ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। মাস্ক পরে কান ব্যথা এড়াতে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারে। যেমন- এলাস্টিক মাস্ক ব্যবহার না করা : কানের ব্যথা এড়াতে এলাস্টিক মাস্ক ব্যবহার বাদ দিন। সাধারণত এলাস্টিক দেওয়া মাস্ক পরলেই কানে ব্যথা হয়। তাই কানের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে নো এলাস্টিক মাস্ক ব্যবহার করুন। বরফ ব্যবহার : অফিস বা কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর কানে বরফ লাগান। বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করলে ব্যথা কমে। বরফ লাগানোর পরে কানে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগান। ক্লিপ মাস্ক ব্যবহার করুন : মেয়েরা সাধারণত চুলে ক্লিপ ব্যবহার করেন। কানের ব্যথা আটকাতেও এটি ব্যবহার করতে পারেন। মাস্ক পরার জন্য সবার আগে চুল বেঁধে নিন, তারপর মাস্ক পরুন। মাস্কের এলাস্টিক কানে আটকানোর বদলে তা ক্লিপের ভিতর ঢুকিয়ে কানের পিছনের চুলের সঙ্গে আটকে দিন। এতে কানের উপর এলাস্টিকের চাপ পড়বে না। ঘরে তৈরি মাস্ক ব্যবহার করুন : কেনা মাস্কের দড়ি সাধারণত এলাস্টিকের হয়, যার কারণে কানে ব্যথা এবং লালচেভাব দেখা দেয়। তাই কানের ব্যথা কমাতে আপনি ঘরে তৈরি কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। এতে আরাম পাবেন।  

এক নজরেঃ যেসব প্যারাসাইট হার্টের ক্ষতি করে

কিছু প্যারাসাইট বা পরজীবী এমন রোগ তৈরি করে যা হার্টের ক্ষতি করতে পারে ও স্বাভাবিক কার্ডিয়াক ফাংশনে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটাতে পারে। প্যারাসাইটিক ইনফেকশন বা পরজীবীয় সংক্রমণ মানুষের মধ্যে মায়োকার্ডাইটিস সৃষ্টি করতে পারে। সম্প্রতি অস্কারজয়ী মুভি ‘প্যারাসাইট’ দর্শকশ্রোতাদের হার্ট বা হৃদয় জয় করে নিয়েছে। এ মুভিটি সিনেমাপ্রেমীদের মনে দারুণ আলোড়ন তুলতে পেরেছে। এতো গেল রুপালি পর্দার কথা। কিন্তু বাস্তব-জগতের প্যারাসাইট হার্টের জন্য শুভকর নাও হতে পারে। কিছু প্যারাসাইট বা পরজীবী এমন রোগ তৈরি করে যা হার্টের ক্ষতি করতে পারে ও স্বাভাবিক কার্ডিয়াক ফাংশনে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটাতে পারে। প্যারাসাইটিক ইনফেকশন বা পরজীবীয় সংক্রমণ মানুষের মধ্যে মায়োকার্ডাইটিস সৃষ্টি করতে পারে। এ রোগটি হার্টের টিসু্যকে প্রদাহিত করে। প্যারাসাইটের আক্রমণ থেকে পেরিকার্ডাইটিস ও কার্ডিওমায়োপ্যাথিও হতে পারে। পেরিকার্ডাইটিস হচ্ছে হার্টের চারদিকের ঝিলিস্নর প্রদাহ। অন্যদিকে কার্ডিওমায়োপ্যাথি হলো এমন একটা ডিসঅর্ডার যা হার্টের পাম্পিংয়ে বাধা দেয়- এ প্রতিবন্ধকতা থেকে হার্ট ফেইলিউর পর্যন্ত হতে পারে, ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি রিভিউজে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে। এখানে পাঁচটি প্যারাসাইট সম্পর্কে আলোচনা করা হলো, যারা হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। টক্সোপস্নাসমা গন্ডিঃ অতিক্ষুদ্র পরজীবী টক্সোপস্নাসমা গন্ডি থেকে টক্সোপস্নাসমোসিস নামক রোগের উৎপত্তি হতে পারে। বিড়ালের সংস্পর্শে আসলে এ পরজীবী মানুষের শরীরে আসতে পারে। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) প্রতিবেদনে আছে, প্রতিবছর সারাবিশ্বে প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষের শরীরে এ পরজীবী প্রবেশ করে, যদিও অধিকাংশেরই উপসর্গ ডেভেলপ হয় না। টক্সোপস্নাসমা গন্ডি পরজীবীটি মানুষের শরীরে সারাজীবন থেকে যেতে পারে। জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল মেডিসিন রিসার্চে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টক্সোপস্নাসমা গন্ডির ক্রনিক সংক্রমণ থেকে ক্রনিক হৃদরোগ হতে পারে। অ্যান্টামিবা হিস্টোলাইটিকাঃ সিডিসির মতে, এ পরজীবীটি হলো অ্যামিবায়াসিস অথবা অ্যামিবিক ডিসেন্টেরির (অ্যামিবিক আমাশয়) প্রধান কারণ। এ পরজীবী কোলনে প্রদাহ ঘটিয়ে আমাশয় সৃষ্টি করে, যা পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া দ্বারা চিহ্নিত করা যায়। বিরলক্ষেত্রে এ প্যারাসাইটিক ইনফেকশন থেকে হার্টে জটিলতা তৈরি হতে পারে- যা অ্যামিবিক পেরিকার্ডাইটিস নামে পরিচিত। অ্যামিবিক পেরিকার্ডাইটিসে পেরিকার্ডিয়াম বা হার্টকে বেষ্টিত থলের মতো ঝিলিস্নতে ফোঁড়া হয়। প্রায় ক্ষেত্রে পেরিকার্ডাইটিস রোগীদের বুকে তীক্ষ্ন ব্যথা অথবা ছুরিকাঘাত প্রকৃতির ব্যথা অনুভূত হয়। উক্ত্যক্ত পেরিকার্ডিয়াম প্রাচীর পরস্পরে ঘর্ষিত হয়ে এ ব্যথার আবির্ভাব ঘটায়। ট্রাইশিনেলা স্পাইরালিসঃ ট্রাইশিনেলা স্পাইরালিস হচ্ছে এক প্রকার পরজীবীয় কেঁচোকৃমি- যা বিশ্বের মাংসাশী ও সর্বভুক প্রাণীদের টার্গেট করে। সংক্রমিত প্রাণীর মাংস ভালোভাবে রান্না না করে খেলে এতে সংক্রমিত হতে পারেন। সিডিসির মতে, সংক্রমিত প্রাণীর মাংস থেকে মানুষের শরীরে লার্ভা সিস্ট প্রবেশ করে ট্রাইকিনোসিস নামক রোগ হয়ে থাকে। পাকস্থলীর অ্যাসিড সিস্টটিকে গলিয়ে ফেলে ও লার্ভাগুলো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এগুলো রক্তে প্রবাহিত হয়ে মাংসপেশি ও মস্তিষ্ক কলায় আবাস গড়তে পারে। স্টেট পার্লসের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ট্রাইশিনেলা স্পাইরালিস হৃদকলাতে প্রদাহ ও জীবননাশক অ্যারিদমিয়া বা অনিয়মিত হার্টবিটের কারণ হতে পারে। ইকিনোকক্কাস গ্রানুলোসাসঃ ইকিনোকক্কাস গ্রানুলোসাস হচ্ছে একধরনের পরজীবীয় ফিতাকৃমি। ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি রিভিউজে বিজ্ঞানীরা জানান, কুকুর অথবা অন্যান্য কুকুর সদৃশ প্রাণীর মল থেকে এ ফিতাকৃমির ডিম মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে সংক্রমণ হয়ে থাকে। ডিম ফেটে ছয় হুকের ভ্রূণ অন্ত্রের প্রাচীর অতিক্রম করে অর্গানে গিয়ে সিস্ট তৈরি করে। কার্ডিয়াক সিস্ট বিরল হলেও এ পরজীবীর কারণে অনিয়মিত হার্টবিট হতে পারে, হার্টের চারপার্শ্বস্থ থলেতে পানি জমতে পারে, উচ্চ রক্তচাপে চেতনা হারাতে পারে, হার্ট অ্যাটাক হতে পারে এবং এমনকি হঠাৎ করে হার্টের কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

ট্রাইপানোসোমা ক্রুজিঃ

ট্রাইপানোসোমা ক্রুজি নামক পরজীবী দ্বারা ট্রাইপানোসোমিয়াসিস অথবা চাগাস ডিজিজ হয়ে থাকে। সিডিসির মতে, মশা এবং অন্যান্য সৃষ্টিকারী কীটপতঙ্গের কামড়ে মানুষের শরীরে এ পরজীবীর অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। মায়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাইপানোসোমা ক্রুজিতে আক্রান্ত ৩০% থেকে ৪০% লোকের ক্রনিক চাগাস ডিজিজ সম্পর্কিত হার্টের জটিলতা ডেভেলপ হয়, যেমন- অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হার্ট অতিরিক্ত প্রসারিত হয়ে কার্যকরভাবে রক্ত পাম্প না হওয়া ও কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিউর। ক্লিনিক্যাল মাইক্রোবায়োলজি রিভিউজে গবেষকরা জানান, অনেক ক্ষেত্রে এ পরজীবীতে সংক্রমিত হওয়ার ১০ থেকে ৩০ বছর পর উপসর্গ প্রকাশ পেতে পারে।

সূত্রঃ যায়যায়দিন

রাতে ৩ পানীয় পানে কমবে ওজন

শরীরে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে অনেকে প্রায় সময় বিব্রত অবস্থায় থাকেন। এই ওজন অনেকের মাথা ব্যাথার কারণ হয়েও দাঁড়ায়। কারণ অতিরিক্ত ওজন যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি শরীরের ফিটনেসের ভারসাম্যও নষ্ট করছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই শরীরচর্চা ও ডায়েট করে থাকেন। কিন্তু এই ডায়েটে কোন সুফল তো মিলছেই না, বরং বাড়ছে বিপদ। গবেষকরা বলছেন, রাতে কিছু নিয়মিত অভ্যাসই পারে ওজন কমাতে। এজন্য রাতের খাবারে আনতে হবে পরিবর্তন। রাতে কোনোভাবেই ভারী খাবার খাওয়া যাবে। রাতের খাবার যত হালকা হবে, ততই ভালো। রাত আটটার ভেতরে রাতের খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া ভালো থাকবে। এছাড়াও কয়েকটি পানীয় রয়েছে, যার মধ্য থেকে যেকোনো একটি পানীয় পান করে ঘুমাতে গেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে দ্রুতই। মেথি চা: মেথি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ফ্যাট বার্ন হয় দ্রুত। একগ্লাস মেথির পানি দিনের যেকোনো সময় খেলেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। প্রাকৃতিক উপায়ে ডিটক্স হবে আপনার শরীর। প্রতিদিন রাতে এটি খেলে ওজন কমবে দ্রুত। সিনেমন টি: ফ্যাট বার্ন করতে ভীষণ কার্যকরী এই চা। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যেকোনো বয়সীর জন্যই উপকারী। শুতে যাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে প্রতিদিন খেতে পারেন এই চা। শশা এবং পার্সলে স্মুদি: শরীরকে হাইড্রেট রাখতে শশা এবং পার্সলে দুটোই ভীষণ কার্যকরী। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ, বি এবং কে শরীরের জন্য উপকারী। সূত্রঃ সময় টিভি

আপনি কি হৃদরোগের ঝুঁকিতে, জানান দিবে যে পাঁচ পরীক্ষা

হৃদরোগের কথা শুনলে আমার, আপনার সকলেরই কম্পন শুরু হয়ে যায়। কিন্তু জানেন কি বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে যা আপনাকে জানিয়ে দেবে আপনার হৃদয় কী কথা বলছে। চিকিৎসকরা বছরের পর বছর ধরে দেখে এসেছেন যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, ধুমপান, কোলেস্টেরল জনিত সমস্যা আছে তাঁরাই হৃদরোগের শিকার হন। সম্প্রতি রিডার্স ডাইজেস্টে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আমরা যদি ৫ টি খুব সরল এবং ছোট পরীক্ষা করি তাহলেই বুঝতে পারবো আগামীদিনে আমাদের হৃৎপিণ্ড কোনো সমস্যার সম্মুখীন হবে কিনা। যাঁরা পরীক্ষায় ২০ বার খারাপ ফল করবে তাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা প্রবল। এবার দেখে নেওয়া যাক কী সেই ৫ পরীক্ষা ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম : এটি হৃৎপিন্ডের খুব সাধারণ পরীক্ষা, যার মাধ্যমে হৃদপিণ্ডের পেশীর বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ পরিমাপ করা হয় । ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে এই পরীক্ষা হয়ে যায়। পরীক্ষার সময়ে ব্যাথা বা যন্ত্রণার উদ্রেক হয় না। কোনও ইসিজি চলাকালীন, আপনার ডাক্তার আপনার হাতে এবং বুকে 10 টি ছোট ইলেকট্রোড রাখবেন যা আপনার হৃদয়ের বৈদ্যুতিক ক্রিয়াকলাপ পরিমাপ করতে সাহায্য করবে, যদি সেই ক্রিয়াকলাপে কোনো ছন্দপতন হয় তখনই আপনার ডাক্তার আপনাকে সাবধান করে দেবেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ খাবার পরামর্শ দেবেন। নতুন কোনো হৃদরোগের কোনো সমস্যা নিয়ে এলে সর্বপ্রথম তাকে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষা করা হয়। করোনারি ক্যালসিয়াম স্ক্যান : যদি আপনার চিকিৎসকের সন্দেহ হয় যে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি থাকতে পারে তবে তারা করোনারি ক্যালসিয়াম স্ক্যান করতে পারেন । এই লো-রেডিয়েশনের সিটি স্ক্যানটি আপনার করোনারি ধমনীতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করে। যখন করোনারিগুলিতে ক্যালসিয়াম দেখতে পাওয়া যায় , তার অর্থ এই যে রোগীর এথেরোস্ক্লেরোসিস রয়েছে। উচ্চ কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে আক্রান্তদের আরও ঘন ঘন স্ক্যানের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।পুরুষ, বিশেষত ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের , করোনারিতে ক্যালসিয়াম জমার সম্ভাবনা বেশি। সি-প্রতিক্রিয়াশীল প্রোটিনের জন্য রক্ত পরীক্ষা: হৃদরোগের ঝুঁকি নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত তিনটি রক্ত পরীক্ষার মধ্যে প্রথমটি আপনার রক্ত প্রবাহে সি-বিক্রিয়াশীল প্রোটিনের পরিমাণ বা সিআরপি পরিমাপ করে। দেহের ক্রমবর্ধমান প্রদাহের সঙ্গে সিআরপি বেড়ে ওঠে, যদিও প্রদাহের সঙ্গে হৃদরোগের সরাসরি সম্পর্ক আছে এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায় নি। একটি সিআরপি পরীক্ষা নির্দেশ করতে পারে যে হৃদরোগ শুরু হওয়ার আগে আপনাকে কী কী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসকরা উদ্ভিজ ডায়েট খাওয়ার, অনুশীলন করার, চাপ থেকে মুক্ত হওয়ার এবং হেসে খেলে জীবন কাটানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন । জীবন যদি সুখকর হয় তাহলে কী হৃদয় দুঃখী থাকতে পারে? এনটি-প্রোবিএনপি রক্ত পরীক্ষা: আপনার কার্ডিওলজিস্ট এনটি-প্রোবিএনপি নামে পরিচিত একটি রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন । কার্ডিওভাসকুলার স্ট্রেসের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ আপনার মস্তিক এবং হৃৎপিণ্ড একটি হরমোন নিঃসরণ করে। যার নাম নাট্রিউরেটিক পেপটিড।বিএনপির উচ্চ মাত্রার এলে বুঝতে হবে , আপনার হার্টের পেশী শক্ত হয়ে গেছে এবং একবারে তা শিথিল হতে পারে না। নিয়মিত ক্রিয়াকলাপের মধ্যে না থাকলে এই সমস্যা হতে পারে ।কিছু সাধারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি আপনার হৃদয়ে যে পরিমাণ চাপ তৈরি করেন তা হ্রাস করতে পারেন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে, নিয়মিত কাজ করা এবং ধূমপান ত্যাগ করার মাধ্যমে । ট্রোপোনিন টি – একটি উচ্চ সংবেদনশীল রক্ত পরীক্ষা : হৃদরোগের ঝুঁকির মূল্যায়ন করতে গবেষণায় উল্লিখিতসর্বশেষ পরীক্ষাটি হ’ল একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল রক্ত পরীক্ষা যা আপনার হার্টের ট্রোপোনিন টি নামে পরিচিত প্রোটিনের মাত্রা পরিমাপ করে।যখন আপনার হৃৎপিন্ডটি খুব বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তখন এই প্রোটিন নিঃসরণ হয়, যা দেখে চিকিৎসকরা বুঝে যান হৃদরোগের কোন স্টেজ চলছে। হটাৎ করে হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গেলে হার্টের ওপর সাংঘাতিক চাপ পড়ে , সেই সময় ট্রোপোনিনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করেন চিকিৎসকরা। ট্রোুপোনিনের মাত্রা পরীক্ষা করে অনেকসময় হার্টের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি সারিয়ে ফেলতে পারেন চিকিৎসকেরা, যার ফলে স্ট্রোকের মতো সমস্যা এড়ানো যায়। সবশেষে বলতে হয় হৃদয়ের কথা শুনুন, হৃদয়ও আপনার কথা শুনবে। -সূত্রঃ মানবজমিন

করোনায় ফুসফুসের ব্যায়াম করবেন যেভাবে

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। আবার যাদের ফুসফুস দুর্বল বা সমস্যা রয়েছে করোনায় তাদের মৃত্যুর ঝুঁকিও বেশি। তাই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে বাড়াতে হবে ফুসফুসের সক্ষমতা। আর এই জন্য ফুসফুসের ব্যায়াম করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বেশ কয়েকবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘ঘরে থেকেও যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন, যারা আক্রান্ত হয়েছেন বা শনাক্ত হয়েছেন, তারা বিশেষভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে নজর দেবেন। এ সময়ে আপনারা ফুসফুসের ব্যায়াম বা শ্বাসযন্ত্রের ব্যায়াম নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাবেন। কারণ, অনেক সময়ই কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। শ্বাসযন্ত্রের ব্যায়ামটা নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাবেন।’ বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. রওশন আরা খানম বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর যাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় বা আইসিইউতে যেতে হয়, তাদের ফুসফুসের ক্ষতিটা বেশি হয়। তাদের সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে, স্বাভাবিক জীবনযাপনে যেতে অনেক সময় লেগে যায় বলে আমরা দেখেছি। তাদের জন্য পরবর্তীতে ‘‘ফুসফুসের পুনর্বাসন প্রোগ্রাম’’ দরকার হয়ে পড়ে।’ ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ বুক ভরে শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব ধরে রাখা। এরপর আস্তে আস্তে শ্বাস ছাড়তে হবে। এর ফলে ফুসফুসের কোষগুলোর ব্যায়াম হয়, ফলে সেটির স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে না। এ জন্য চিকিৎসকরা বলছেন, পিঠ সোজা করে আরাম করে বসতে হবে। এরপর প্রথমে নাক দিয়ে নিঃশ্বাস ফেলে ফুসফুসের সব বাতাস বের করে দিতে হবে। এরপর আবার গভীর শ্বাস নিয়ে যতটা সম্ভব ফুসফুসে বাতাস ভরে নিতে হবে। যতক্ষণ সম্ভব হয়, শ্বাস আটকে রাখুন। এরপর আবার একসঙ্গে সব বাতাস বের করে দিন। এভাবে দিনে অন্তত দুইবার এইরকম ব্যায়াম করা যেতে পারে। এতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ ডা. আলতাফ হোসেন সরকার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘লম্বা শ্বাস নিয়ে বুক ফুলিয়ে কমপক্ষে ১০ সেকেন্ড ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। ১০ সেকেন্ড বোঝার জন্য এক হাজার এক, এক হাজার দুই, এক হাজার তিন- এভাবে দশ পর্যন্ত গোনা যেতে পারে। প্রথম দিনে হয়তো এতটা করা যাবে না। কিন্তু আস্তে আস্তে এক সেকেন্ড, দুই সেকেন্ড করে বাড়াতে হবে।’ ইনসেনটিভ স্প্যারোমেট্রি এক্সারসাইজ বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. রওশন আরা খানম বলেন, ‘হাসপাতালের রোগীদের পাশাপাশি আউটডোরের রোগীদের জন্যও এই ব্যায়ামের সুপারিশ করা হয়। এখানে ছোট্ট একটা ডিভাইসের মধ্যে তিনটা বল থাকে। শ্বাস দিয়ে রোগীদের সেই বলগুলো ডিভাইসের ভেতরে তুলতে হয়। প্রথম দিন হয়তো একটা, পরের দিন আরেকটা, এভাবে আস্তে আস্তে বল তোলার ক্ষমতা বাড়ে। তিনটা বল তুলে নিয়ে ধীরে ধীরে আবার ছেড়ে দিতে হয়। এভাবে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে।’ উপুড় হয়ে ঘুমানো ডা. রওশন আরা খানম বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে মানুষের শরীরে অনেক সময় অক্সিজেনের স্বল্পতা তৈরি হয়। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণেই এটা হয়। এ জন্য উপুড় হয়ে শুয়ে থাকলে বা পাশ ফিরে শুয়ে থাকলে শরীরের অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ে। এভাবে শুয়ে থাকার সময় মাথার নিচে কোনো বালিশ ব্যবহার না করাই ভালো। তবে বুক বেশি ভার ভার মনে হলে বা শ্বাস নিতে বেশি কষ্ট হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।’ শ্বাস নেওয়ার সময় হাত তোলা ডা. আলতাফ হোসেন সরকার বলেন, ‘আমরা অনেক সময় রোগীদের পরামর্শ দিই যে, যখন শ্বাস নেব, তখন হাত ওপরে তুলতে হবে। আবার যখন শ্বাস ছেড়ে দেবে, তখন হাত নিচে নামিয়ে আনা হবে। এর ফলে শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে শরীরের অঙ্গের একটি ব্যায়াম হবে। আবার লম্বা শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের পাঁজরের নিচে হাত রেখে অনুভব করতে হবে যে, বুকটা বেলুনের মতো ফুলে উঠছে। এরপর সেটা আবার চাপ দিয়ে বাতাস বের করে দিতে হবে। এভাবে দিনে অন্তত কয়েকবার করতে হবে।’ নাক বন্ধ করে শ্বাস নেওয়া এ ব্যায়ামটি করতে হাত দিয়ে প্রথমে নাকের বাম পাশ বন্ধ করে ডান পাশ দিয়ে লম্বা শ্বাস নিন। ৫/১০ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখুন। এরপর শ্বাস ছেড়ে দিন। এরপর নাকের ডান পাশ চেপে ধরে একই ভাবে শ্বাস নিন। একইভাবে ৫/১০ সেকেন্ড ধরে রেখে শ্বাস ছেড়ে দিন। এভাবে প্রতিদিন কয়েকবার করে অভ্যাস করুন। বাষ্প নেওয়া ডা. আলতাফ হোসেন সরকার বলেন, ‘অনেক সময় আমরা রোগীদের বাষ্প নেওয়ার পরামর্শ দিই। বাসায় থেকে যারা চিকিৎসা নিচ্ছেন, তারা গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। সেটাও ফুসফুসের জন্য ভালো।’ এদিকে, ব্রিটিশ লাং ফাউন্ডেশন ফুসফুস ভালো রাখার জন্য পরামর্শ দিচ্ছে, গভীর শ্বাসের ব্যায়াম ফুসফুস থেকে শ্লেষ্মা দূর করে অধিক বায়ু সঞ্চালনে সাহায্য করতে পারে। এ ব্যায়াম করতে ৫-১০ বার গভীর শ্বাস নিতে হবে। তারপর কয়েকবার জোরে কাশি দিয়ে রিপিট করতে হবে। এতে ফুসফুস আরও শক্তিশালী হবে। ফুসফুসের সক্ষমতা বাড়াতে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার পর খানিকটা সুস্থ হয়ে উঠলে হাঁটা শুরু করে শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। পরবর্তীতে হাঁটার গতি আরও বাড়াতে হবে। এসব ব্যায়াম স্বল্পমেয়াদি কোনো ব্যায়াম নয়। দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যায়ামের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে এসব ব্যায়াম করা যাবে না যদিও ফুসফুসের সক্ষমতা বাড়াতে চিকিৎসকরা ব্যায়ামের পরামর্শ দিচ্ছেন। কিন্তু কারও যদি শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা বা কাশি থাকে, তখন এই ধরনের ব্যায়াম না করাই ভালো। যাদের হৃদরোগ বা ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, তারা ব্যায়ামের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। ব্যায়াম করার সময় অসুস্থ বোধ হলে বা শ্বাসকষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম বন্ধ করে বিশ্রাম নিন। কষ্ট বেশি হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। সূত্রঃ আমাদের সময়

শীতের আগেই অধিকাংশ মানুষের অ্যান্টিবডি হবে- ড. বিজন কুমার শীল

বিশিষ্ট অণুজীব বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত কেউ জানুক আর না জানুক, বাংলাদেশে আগামী শীতের আগেই বেশির ভাগ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি চলে আসবে। ফলে কমে যাবে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার। তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের দেশে সেকেন্ড ওয়েব চলছে। নতুন করে ছড়ানোর শঙ্কা কম। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে এসব কথা বলেন ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, শীতের আগেই করোনা সংক্রমণের হার অনেকাংশে কমে যাবে। আমাদের দেশে লকডাউন তেমন কাজ করেনি। তাই করোনাভাইরাস সারা দেশে ছড়িয়ে গেছে। এখন ভাইরাসও দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ কারণে অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে দেশের বেশির ভাগ মানুষের শরীরের মধ্যে এন্টিবডি চলে আসবে। এই অণুজীব বিজ্ঞানী বলেন, এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বাসায় গিয়ে হাত, মুখ ও নাক ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে গারগলও করতে হবে। তবে বেশি গরম পানিতে নয়, হালকা কুসুম গরম পানিতে গারগল করলে ভালো হয়। সেখানে একটু চা দিলে আরও ভালো হয়। মুখে যতটুকু সহ্য হবে ততটুকুই গরম হলে ভালো হয়। কারণ, বেশি গরম পানি নাকের স্পর্শকাতর স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে। মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্যও বিনষ্ট করতে পারে। ড. বিজন কুমার শীল বলেন, আক্রান্তের যে হার তাতে আমার মনে হচ্ছে, বাংলাদেশে ৩৫ ভাগ মানুষের মধ্যে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে ইনফেকশন হওয়া ৫ ভাগ মানুষ তা জানতে পারছে। বাকিরা জানতেই পারছে না, নিজের মধ্যে কখন এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। এটা একটা ভালো দিক। নন কভিডরা জানতেই পারছে না, তাদের কখন করোনা হয়ে আবার এন্টিবডি তৈরি হয়েছে। তবে তারা ভাইরাস ছড়াচ্ছে। অন্য জটিল কোনো রোগে আক্রান্তদের এটা ছড়ালে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। দুটো দিকই আছে। তাই এ মুহূর্তে সবার বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা জরুরি। এর কোনো বিকল্প নেই। এর দামও কমেছে, সহজলভ্যও। রাস্তাঘাটে এগুলো ফেলা যাবে না। এতে নালায় পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. বিজন বলেন, সেকেন্ড ওয়েব আমাদের দেশে চলছে। সংক্রমণের হার এখন আর বাড়ছে না, তবে অবস্থান করছে। নতুন করে ছড়ানোর শঙ্কা কম। আশা করা যায়, ইউরোপের মতো ব্যাপকহারে আর ভাইরাস ছড়াবে না। শনাক্তের হার কমার আরেকটা কারণ হলো, মানুষ আগে ভীত ছিল। বুঝে উঠতে পারেনি কী করবে। মানুষ এখন অনেকটাই সাধারণ রোগের মতো নিয়ে বাসাবাড়িতে অবস্থান করেই চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে যারা অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত ও বয়োবৃদ্ধ তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন পরিস্থিতি। তিনি বলেন, ইউরোপ-আমেরিকায় ভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। নিউইয়র্কে মাত্র ২০ ভাগ ইমিউনিটি আসছে। তারা একটি গন্ডির মধ্যে সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। এতে ৮০ ভাগ মানুষ যে কোনো সময় আক্রান্ত হতে পারে। এটা শীতকালে হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। আমাদের দেশে কিন্তু ভিন্ন। শীতে আমাদের সংক্রমণ কমে যাবে। তবে এ নিয়ে সরকার একটি গবেষণা করতে পারে। তাহলে বাস্তবতাটা আরও বোঝা যাবে।