মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থায় “ফটোল্যাব” ব্যবহারকারীর তথ্য চলে যায় !

ইন্টারনেট দুনিয়ার নতুন ট্রেন্ড ‘ফটোল্যাব’। আপলোডের পর এখানে ছবি দিলেই সেটিকে চকচকে-ঝকঝকে করে দিচ্ছে অ্যাপটি। কিন্ত ব্যবহারকারীরা যে বিপদ ডেকে আনছেন, সেটা কি লক্ষ্য করেছেন কখনো?। এবিষয়ে সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ছবি পাওয়ার বিনিময়ে যে তথ্য অ্যাপটির সঙ্গে গ্রাহকরা শেয়ার করছেন, আশঙ্কা রয়েছে সেগুলো চলে যাচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লিনারক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের মালিকানাধীন ফটোল্যাবের সঙ্গে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। আর এটির কারণ হচ্ছে টেক জায়ান্ট আইবিএম এর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার চুক্তি বাতিল হওয়া। একারণে তৈরি করা হয় ফটোল্যাব । প্রযুক্তিভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ভার্জ বলছে, ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় লিনারক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এবং তাদের মালিকানায় ১৪টি অ্যাপ আছে বর্তমানে। এগুলোর বেশির ভাগই ছবি সংক্রান্ত এবং ফটোল্যাব অ্যাপটিও ২০১০ সালেই তৈরি হয়। এত বছর অ্যাপটি আলোচনায় না এলেও আইবিএম ফেস রিকগনিশন বন্ধ করার কিছুদিনের মধ্যেই দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় অ্যাপটি। সাইবার-৭১ এর পরিচালক আব্দুল্লাহ আল জাবের হৃদয় বলেন, প্রযুক্তি জগতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকা যদি দেখেন, তাহলে দেখা যাবে, আগে থেকেই অস্তিত্ব আছে এমন একটি প্ল্যাটফর্মকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করেছে তারা। প্রতিষ্ঠার পর তেমন পরিচিতি না পেলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অন্তর্ভুক্তিতে রাতারাতি আলোড়ন তৈরি করে প্ল্যাটফর্মগুলো। একই কাজ ফটোল্যাবের সঙ্গে করা হয়েছে। খেয়াল করলে দেখবেন অনেকদিন পর গেল ১৫ জুন অ্যাপটিকে হালনাগাদ করা হয়েছে। এটাকে ‘ট্রেন্ড’ হিসেবে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে যে বিপুল পরিমাণ তথ্য তাদের সার্ভারে জমা হচ্ছে, সেগুলো ওদের কাছে ‘গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ’। আরেক সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক তানভীর হাসান জোহা বলেন, একটা উদাহরণ দিই। অনেকেই আছেন যারা ব্যাংকের একাউন্ট নম্বর, এটিএম কার্ড নম্বর এমনকি পিন কোড সহজে মনে রাখার জন্য মোবাইলে সেভ করে রাখেন। এখন এসব তথ্য অন্য কারও হাতে গেলে কী হতে পারে একবার ভাবুন। বিভিন্ন সময়ে আমরা এ ধরনের স্ক্যামের খবর পাই। সেগুলো কীভাবে সম্ভব হয়? এগুলোও অন্যতম কারণ। বুধবার (১৭ জুন) বাংলাদেশের একটি শীর্ষ গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিতে হয়েছে। ফটোল্যাবে এ অ্যাপটি ছাড়াও সুন্দর ছবি তোলার জন্য অনলাইনে টিপস বা সহায়তা পেতে অনেকেই গুগল প্লে স্টোর থেকে নানা ধরনের বিউটি অ্যাপ ডাউনলোডের পর ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এমন সব অ্যাপ নিরাপদ নয়। অনেক অ্যাপ আপনার তথ্য হাতিয়ে নেয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাজে লিঙ্কে নিয়ে যায়। সম্প্রতি গুগলের নিরাপত্তা বিষয়টি স্ক্যানিংয়ে এসব অ্যাপ ধরা পড়ে। বট পরীক্ষা করা কোম্পানি হোয়াইট ওপসও এসব ক্ষতিকর অ‌্যাপ সম্পর্কে জানতে পেরেছে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ডিজিটাল ইনফরমেশন ওয়াল্র্ড তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এসব অ্যাপ একবার ডাউনলোড করার পর অনেক সময় আইকোন হাইড হয়ে যায়। ফলে চাইলেও সেটি সহজে আনইনস্টল করা যায় না। সম্প্রতি গুগল ৩৮টি অ্যাপ তাদের প্লে স্টোর থেকে সরিয়ে ফেলেছে। এর মধ্যে ৩৫টি বিউটি অ্যাপ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যদি কারো মোবাইল ফোনে এসব অ্যাপ থাকে তাহলে দ্রুত আনইনস্টল করে ফেলা উচিত। গুগলের ডিলিট করা ৩৫টি অ্যাপ হচ্ছে; ১.ইয়োরকো ক‌্যামেরা। ২.সলু ক‌্যামেরা। ৩.বিউটি কোলাজ লাইট। ৪.বিউটি অ‌্যান্ড ফিল্টার ক‌্যামেরা। ৫.ফটো কোলাজা অ‌্যান্ড বিউটি অ‌্যাপ। ৬.বিউটি ক‌্যামেরা সেলফি। ৭.গ‌্যাটি বিউটি ক‌্যামেরা। ৮.প‌্যান্ড সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ৯.কার্টুন ফটো এডিটর অ‌্যান্ড সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ১০.বেনবু সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ১১.পিনাট সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা অ‌্যান্ড ফটো এডিটর। ১২.মুড ফটো এডিটর অ‌্যান্ড সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ১৩.রোজ ফটো এডিটর অ‌্যান্ড সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ১৪.সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা অ‌্যান্ড ফটো এডিটর। ১৫.ফগ সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ১৬.ফার্স্ট সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা অ‌্যান্ড ফটো এডিটর। ১৭.ভানু সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ১৮.সান প্রো বিউটি ক‌্যামেরা। ১৯.ফানি সুইট বিউটি ক‌্যামেরা। ২০.লিটল বি বিউটি ক‌্যামেরা। ২১.বিউটি ক‌্যামেরা অ‌্যান্ড ফটো এডিটর প্রো। ২২.গ্রাস বিউটি ক‌্যামেরা। ২৩.এলি বিউটি ক‌্যামেরা। ২৪.ফ্লাওয়ার বিউটি ক‌্যামেরা। ২৫.বেস্ট সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ২৬.অরেঞ্জ ক‌্যামেরা। ২৭.সানি বিউটি ক‌্যামেরা। ২৮.ল‌্যান্ডি সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ২৯.নাট সেলফি ক‌্যামেরা। ৩০.রোজ ফটো এডিটর অ‌্যান্ড সেলফি বিউটি ক‌্যামেরা। ৩১.আর্ট বিউটি ক‌্যামেরা-২০১৯। ৩২.এলিগ্যান্ট বিউটি ক্যাম-২০১৯। ৩৩.সেলফি বিউটি ক্যামেরা অ্যান্ড ফানি ফিল্টারস। ৩৪.সেলফি বিউটি ক্যামেরা প্রো। ৩৫.প্রো সেলফি বিউটি ক্যামেরা।

আগামীতে করোনার মতো এমন আরো মহামারি আসবে

সার্স, মার্স, ইবোলাসহ গত ২০ বছরে আমরা ৬টি বড় মহামারির সম্মুখীন হয়েছি। এরমধ্যে আমরা পাঁচটি থেকে বাঁচতে পারলেও ছয় নম্বরটি (করোনাভাইরাস) থেকে বাঁচতে পারিনি। এটাই যে আমাদের সম্মুখীন হওয়া শেষ মহামারি, তা মোটেও নয়। আগামীতে করোনাভাইরাসের মতো এমন আরো মহামারি আসবে। – বলছিলেন লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাথিউ বেলিস। বুধবার (১০ জুন) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মানুষ যে সভ্যতা গড়ে তুলেছে তাতে বন্যপ্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে রোগ সংক্রমণ এবং তার পর তা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়া – এর ‌‘নিখুঁত ব্যবস্থা’ করে রাখা আছে। প্রাকৃতিক জগতে মানুষের অনুপ্রবেশ সেই প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করছে। তাই আমাদের বন্যপ্রাণী থেকে মানবদেহে আসা রোগগুলোর দিকে আরো গভীরভাবে নজর দিতে হবে। অধ্যাপক বেলিস বলছেন, ঠিক কোন রোগ মহামারির চেহারা নিতে পারে তার গবেষণা সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার – কিন্তু আমরা এই প্রথম পদক্ষেপটির ব্যাপারে অগ্রগতি ঘটাতে পেরেছি। কোথায় এবং কীভাবে নতুন রোগের বিস্তার ঘটবে তা নিয়ে গবেষণা করছেন সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের এই প্রয়াসের অংশ হিসেবে তারা একটি পদ্ধতি তৈরি করেছেন যাতে এসব রোগ বিস্তারে প্রক্রিয়ায় কী কী সাদৃশ্য দেখা যায় –তা চিহ্নিত করা সম্ভব, যাকে বলে প্যাটার্ন রিকগনিশন। এ পদ্ধতির ফলে পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব যে কোন কোন বন্যপ্রাণী মানুষের জন্য সবচেযে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে এটি ভবিষ্যতের কোন রোগবিস্তারের জন্য প্রস্তুত থাকার যে বৈশ্বিক প্রয়াস, তার অংশ। এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে তিনি এবং তার সহযোগীরা এমন একটি প্যাটার্ন-রিকগনিশন পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যার সাহায্যে আমরা বন্যপ্রাণী থেকে আসা যত রোগের কথা জানি তার সবগুলোর উপাত্ত অনুসন্ধান করে দেখা যাবে। এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইট বা পরজীবী এবং ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। অধ্যাপক বেলিসের পদ্ধতি দিয়ে এই অণুজীবগুলো যেসব প্রজাতির প্রাণীকে সংক্রমিত করতে পারে – তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সূত্রগুলো চিহ্নিত করা যাবে। এই সূত্রগুলো দিয়ে আবার এটাও বোঝা যাবে যে কোন কোন অণুজীব মানুষের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। যদি এভাবে কোন প্যাথোজেন, অর্থাৎ রোগ-সৃষ্টিকারী অণুজীব চিহ্নিত হয় – তাহলে বিজ্ঞানীরা কোন রোগের প্রাদুর্ভাব হবার আগেই তা ঠেকানোর উপায় উদ্ভাবনের গবেষণা চালাতে পারবেন। বিজ্ঞানীরা একমত যে বন ধ্বংস এবং বন্যপ্রাণীর আবাসসভূমিতে মানুষের ঢুকে পড়ার ফলে এখন ঘন ঘন এবং সহজেই প্রাণী থেকে মানুষে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক কেট জোনস বলছেন, মানুষ যেভাবে ইকোসিস্টেমকে বদলে দিয়ে কৃষি বা বৃক্ষরোপণ করছে, তাতে জীববৈচিত্র কমে যাচ্ছে এবং মানুষের নানা সংক্রমণে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়ছে বলেই তারা তথ্যপ্রমাণ পাচ্ছেন। তিনি বলছেন, অবশ্য সব রোগের ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে তা নয়। কিন্তু কিছু বন্যপ্রাণী যারা মানুষের উৎপাতের ব্যাপারে সবচেয়ে সহিষ্ণু – যেমন কিছু প্রজাতির ইঁদুর – তারা অনেক সময় রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব ছড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখছে। ফলে জীববৈচিত্র হারানোর ফলে এমন পরিবেশ তৈরি হচ্ছে যাতে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর ঝুঁকিপূর্ণ সংস্পর্শ বেড়ে যাচ্ছে। তাতে কিছু কিছু ভাইরাস, ব্যকটেরিয়া বা প্যারাসাইটের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কিছু রোগ বিস্তারের কথা বলা যায় – যেখানে মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর ‘মধ্যবর্তী পর্ব’ বা ইন্টারফেসের এই যে ঝুঁকি – তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মালয়েশিয়ায় ১৯৯৯ সালে নিপাহ ভাইরাসের এক প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ যা এক ধরণের বাদুড়ের মধ্যে দিয়ে বাহিত হয়। এই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বনভূমির প্রান্তে থাকার একটি শূকরের খামারে। ফলের গাছে এসে জঙ্গলের বাদুড় ফল খেতো। তাদের আধা-খাওয়া ফল মাটিতে পড়লে তা খেতো শূকর। ওই ফলে লেগে থাকতো বাদুড়ের মুখের লালা – যা থেকে শূকরের দেহে সংক্রমণ হয়। এই সংক্রমিত শূকরের দেখাশোনা করতো খামারের ২৫০ জনেরও বেশি কর্মী। ফলে তাদের দেহেও দেখা দিল ভাইরাস সংক্রমণ। তাদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। কোভিড-১৯ ভাইরাসে মৃত্যুর হার সম্পর্কে এখনো গবেষণা চলছে। তবে অনুমান করা হয়, যত লোক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয় তার প্রায় ১ শতাংশ মারা যায়। আর নিপাহ ভাইরাসের ক্ষেত্রে মারা যায় সংক্রমিতদের ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ। লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় ও কেনিয়ার আন্তর্জাতিক গবাদিপশু গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক এরিক ফেভরে বলছেন, যে সব এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাবের উচ্চ ঝুঁকি সেসব জায়গায় গবেষকদের সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল এবং ফার্মের মতো মানুষের কর্মকান্ড – এ দুয়ের মধ্যে যদি এরকম কোন ইন্টারফেসের অস্তিত্ব থাকে, তাহলে সেটা হয়ে উঠতে পারে নতুন রোগ ছড়ানোর হটস্পট। যেমন বনভূমির কাছে একটি পশুপালনের ফার্ম, বা যেসব বাজারে প্রাণী বেচাকেনা হয় – এগেুলোই হচ্ছে এমন জায়গা, যেখানে মানুষ আর বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলের পার্থক্য ঝাপসা হয়ে যায়। এগুলো থেকেই রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। অধ্যাপক ফেভরে বলছেন, আমাদের এরকম ইন্টারফেস কোথাও তৈরি হচ্ছে কিনা তার ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে, এবং অস্বাভাবিক কোন কিছু দেখলেই তার বাপারে পদক্ষেপ নেবার ব্যবস্থা থাকতে হবে। মানব বসতি আছে এমন জায়গায় প্রতি বছর তিন থেকে চার বার নতুন রোগের উদ্ভব হয়। শুধু এশিয়া বা আফ্রিকা নয়, ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এটা হচ্ছে। নতুন রোগের ব্যাপারে নজরদারির গুরুত্ব এখন আরো বেড়ে যাচ্ছে। আমরা এখন পৃথিবীতে মহামারি ছড়ানোর জন্য প্রায় আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করে ফেলেছি – বলছেন অধ্যাপক বেলিস। অধ্যাপক ফেভরেও এ ব্যাপারে একমত। তার কথা – করোনাভাইরাসের মতো ঘটনা আগামীতে বার বার ঘটতে পারে। তিনি বলছেন, এ থেকে আমাদের শিক্ষা নেবার আছে যে কীভাবে মানুয়ের কর্মকান্ড প্রাকৃতিক জগতের ওপর প্রভাব ফেলছে ।

মাসল ক্র্যাম্প বা মাংসপেশিতে হঠাৎ টানের সমাধান ও চিকিৎসা

ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ পায়ের মাংসপেশির টানের ব্যথায় কুঁকিয়ে উঠলেন আপনি। রাতে হঠাৎ পায়ের মাসল ক্র্যাম্প বা মাংসপেশিতে টানের এই অভিজ্ঞতা অনেকেরই রয়েছে। এমন অসহনীয় ব্যথায় কী করবো তা অনেকেই বুঝতে পারি না। এমন ঘটনা ঘুমের মধ্যে বা জেগে থাকা অবস্থাতেও হতে পারে। তবে ঘুমন্ত অবস্থায় এটি বেশি হয়ে থাকে। এ ধরনের টান কয়েক সেকেন্ড থেকে ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তবে ব্যথাটা কয়েক ঘন্টা থেকে এক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে। সাধারনত কাফ মাসলে এই ধরনের ক্র্যাম্প বেশি হয়। এ ছাড়াও হাতে, পেটে, ঘাড়ে, কোমরে, পায়ের তালুতে মাসল ক্র্যাম্প হতে পারে। মাসল ক্র্যাম্প বা মাংসপেশিতে টানের প্রধান কয়েকটি কারণ হলো- – পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন – ইলেক্ট্রোলাইটিক ইমব্যালেন্স (দেহে খনিজ অসমতা); অর্থাৎ শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরিন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ এর ঘাটতিতে মাসল ক্র্যাম্প বা মাংসপেশিতে টান লাগে – শরীরের যেকোনো একটি মাংসপেশি অনেকক্ষণ ধরে ব্যবহৃত হলে – ব্যায়াম, খেলাধুলা বা যেকোনো শারীরিক কসরতের আগে ওয়ার্মআপ না করলে এবং অতিরিক্ত ব্যয়াম করলে – হঠাৎ অতিরিক্ত ভারী কিছু উঠালে/ বহন করলে – মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা করলে – যাঁরা দীর্ঘসময় ধরে কম্পিউটারের সামনে কিংবা চেয়ারে বসে কাজ করেন কিংবা লম্বা সময় যানবাহন চালান, তাঁদের কাঁধ, ঘাড় অথবা পিঠের মাংসপেশিতে টান পড়ার আশঙ্কা বেশি থাকে – গর্ভকালীন সময়ে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে প্রয়োজনীয় খনিজের অভাবে পেশিতে টান পড়ে – হাইপোথাইরয়েডিজম, কিডনি ফেইলিওর, মিন্সট্রুয়েশন, গর্ভসঞ্চার ইত্যাদির কারনেও পেশীতে টান লাগতে পারে কখন বুঝবেন মাসল ক্র্যাম্প হয়েছে? – যদি পেশীতে অনেক ব্যথা হয় এবং পেশী অনেক দুর্বল হয়ে যায় – আঘাতপ্রাপ্ত জায়গাটি যদি ফুলে ওঠে বা লালচে দাগ পড়ে যায় – যদি আঘাতপ্রাপ্ত স্থান ব্যবহার করে স্বাভাবিক ওজন নিতে কষ্ট হয় – মাংসপেশি আপনা-আপনি অনেক শক্ত হয়ে পড়লে মাসল ক্র্যাম্প এড়াতে কি করবেন? – প্রচুর পানি পান করতে হবে – যেকোনো শারীরিক কসরতের আগে বা ভারী কিছু তোলার আগে অবশ্যই ওয়ার্মআপ করে মাংসপেশিগুলোকে সচল করে নিতে হবে – নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে – দীর্ঘক্ষণ না বসে, ৪০ মিনিট বা এক ঘণ্টা পর পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করতে হবে – পেশীর টানমুক্ত অবস্থায় ভালো থাকতে খনিজ উপাদানযুক্ত খাবার গ্রহন করতে হবে। শাকসবজি, ফল, খেজুর, দুধ ও মাংসতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। তাই এই খাবারগুলো বেশি বেশি খাবেন মাসল ক্র্যাম্প বা মাংসপেশিতে যদি টান লাগে তাহলে আমাদের করনীয় কি? – বিশ্রাম নিতে হবে – পর্যাপ্ত পানি বা তরল গ্রহণ করুন। যেমন- ফলের রস, ডাবের পানি, তরমুজ, স্যালাইন ইত্যাদি। – কাফ মাসলের ক্ষেত্রে, নিচের নিয়মানুসারে সেলফ কাফ মাসল থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করা যেতে পারে • সোজা হয়ে পায়ের আঙুলের ওপর ভর করে দাঁড়ালে কাফ মাসলের স্ট্রেন্থ বাড়ে। দশ সেকেন্ড ধরে রেখে পা নামিয়ে ফেলুন। তিন বা চারবার করুন। প্রতিদিন অন্তত একবার। • বসে দুই পা সোজা করে, তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা সামনের দিকে টেনে আনার চেষ্টা করুন। দশ সেকেন্ড ধরে রেখে ছেড়ে দিন। পাঁচ থেকে ছয়বার করুন। • মাসল ক্র্যাম্প এর গুরুত্বপূর্ণ একটি চিকিৎসা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা।ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে খুব দ্রত মাসল ক্র্যাম্প থেকে রিলিফ পাওয়া সম্ভব। একজন ফিজিওথেরাপিস্ট চিকিৎসক বিভিন্ন রকম টেকনিক এপ্লাই করে মাংসপেশিকে আগের অবস্থায় ফিরে আনে।যেমন- ০ রিলাকজেশন টেকনিক ০ RICE principle থেরাপির মাধ্যমে। RICE principle এর ৪টি ধাপ হলো- রেস্ট, আইস, কমপ্রেশন ও এলিভেট ০ স্ট্রেচিং প্রয়োজনে আরও জানতে এবং আমাদের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

Urinary Incontinence/প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতার কারন ও প্রতিকার

মূত্রথলী বা প্রস্রাবের উপর নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ার ফলে অনিচ্ছাকৃত প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার সমস্যাকে ইউরিনারি ইনকনটিনেন্স/ প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা বলা হয়। এটি সব বয়সীদেরই হতে পারে, তবে মূলত বয়স্কদের এবং প্রসব পরবর্তীকালে মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। তবে বয়স, অন্যান্য রোগ ও কখনও কখন বড় কোন সার্জারির পর এটি বেশি দেখতে পাওয়া যায়৷ Urinary Incontinence (প্রস্রাবে অসংযমতা) বা প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা লক্ষণঃ এই সমস্যাটি প্রধান কয়েকটি লক্ষণ হলো- ★ ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া ★ বিছানায় প্রস্রাব হয়ে যাওয়া ★ তলপেটে চাপের অনুভূতি ★ জোরে হাসি বা কাশির সময় প্রস্রাব বেরিয়ে আসা ★ ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব হওয়া ★ সম্পূর্ণভাবে প্রস্রাব না হওয়ার অনুভূতি ★ প্রস্রাবের সময় ব্যথা ★ প্রস্রাব গোলাপী, লাল বা অস্বাভাবিক ★ প্রস্রাবে দুর্গন্ধ ★ পেটেব্যথা বা কোমরে ব্যথা ★ নামাজরত অবস্থায় ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব পড়া ★ কোন চাপের মধ্যে থাকলে হঠাৎ করে প্রস্রাব বের হয়ে যাওয়া। এটা ঘটে সাধারণত- * কোন কিছু নিচু থেকে তুলতে গেলে, * শারিরীক ব্যায়াম করার সময়ে * হাসলে * হাঁচি দিলে * কাশি দিলে Urinary Incontinence বা প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা কারণগুলি কী কীঃ ★ মূত্রথলির আস্তরণের প্রদাহ ★ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন, হরমোনের পরিবর্তন, ইউরিনারী ট্র‍্যাক্ট ইনফেকশন(UTI) ★ অধিক বয়সে গর্ভধারণ করলে ★ সময়ের পূর্বে যোনি প্রসব হলে ★ স্ট্রোক করার ফলে ★ প্রস্টেট জড়িত থাকলে বা বিবর্ধিত প্রোস্টেট থাকলে ★ কিডনি বা মূত্রথলিতে পাথর হলে ★ কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে ★ টিউমার থাকলে যেটি মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টি করে ★ নিয়মিত মদ্যপান করলে ★ মূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন হলে ★ দীর্ঘদিন উত্তেজনা প্রশমনের ওষুধ নিলে ★ দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ গ্রহণ করলে ★ পেশী শিথিল করার ওষুধ নিলে ★ ভারী বস্তু বহন করলে ★ মাল্টিপল সক্লেরোসিস জাতীয় স্নায়ুরোগের ক্ষেত্রে ★ অস্ত্রোপচার বা আঘাতের ফলে মূত্রথলি নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুগুলির ক্ষতি হলে ★ ডিপ্রেশন বা উদ্বেগ (এংজাইটি) থাকলে ★ দুর্বল ব্লাডারের কারনে ★ মূত্রাশয় ক্যান্সার / পাথর হলে ★ স্নায়বিক রোগ থাকলে ★ ডায়াবেটিস থাকলে ★ তীব্র মূত্রনালীর সংক্রমন হলে ★ মাত্রাতিরিক্ত ওজন থাকলে ★ পারিবারিক ইতিহাস থাকলে চিকিৎসা না করলে প্রস্রাব ধারন না রাখতে পারার এই রোগটির ফলে যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে তা হলোঃ ★ মানসিক সমস্যা বা বিষণ্নতা ★ উদ্বেগ ★ ঘুম ব্যাঘাত ★ যৌন সমস্যা ★ লাল লাল ফুসকুড়ি ★ ঘা ★ মূত্রনালীর সংক্রমণ ত্বকের সমস্যা ★ দৈনন্দিন কাজকর্মে পরিবর্তন ★ কর্ম জীবনে পরিবর্তন ★ ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব প্রস্রাবে ধারনে অক্ষমতা রোগের চিকিৎসাঃ ১. আপনার লক্ষণ যদি উপরে উল্লিখিতগুলোর মত হয় তাহলে একজন ইউরোলজিস্ট, এর পরামর্শ ও চিকিৎসা গ্রহন করুন ২. ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাঃ একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে বিভিন্ন থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করুন। যেমনঃ – পেলেভিক ফ্লোর পেশী এবং প্রস্রাব স্ফটিক শক্তিশালী করা – ইলেকট্রিক্যাল স্টিমুলেটরের মাধ্যমে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশি শক্তিশালী করে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে এ সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। – কেগেল এক্সারসাইজ যা এই সমস্যায় সাহায্য করতে পারে। – গর্ভাবস্থায় সময় পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করা। সেল্ফ/ নিজস্ব কিছু ব্যায়ামঃ পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজঃ — প্রথমে একটি চেয়ারে বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রেখে একটু সামনের দিকে ঝুঁকুন। এবার প্রস্রাব ধরে রাখার জন্য দরকারি মাংসপেশিগুলো সংকুচিত করুন। এই অবস্থায় ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকুন। এবার সংকুচিত মাংসপেশি ছেড়ে দিন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৩ বার করুন। — একটি শক্ত বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার দুই হাঁটুর ফাঁকে একটি ফুটবল বা বালিশ রেখে এতে চাপ দিন এবং ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন আর ছাড়ুন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৪ বার করুন। ব্রিজিং: সোজা চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার কোমর ওপরের দিকে ওঠান, ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছাড়ুন। এটিও দিনে ৪ বেলা এবং প্রতিবার ১০ থেকে ১৫ বার করুন। — ব্লাডার ট্রেনিংঃ প্রস্রাবের বেগ শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর প্রস্রাব করার অভ্যাস করা। — ডাবল ভোয়েডিংঃ প্রস্রাব করার পরও কিছু সময় বসে থেকে অপেক্ষা করে আবার প্রস্রাবের চেষ্টা করা। এ ছাড়া প্রস্রাবের বেগ না এলেও ২ থেকে ৪ ঘণ্টা পরপর প্রস্রাবের চেষ্টা করা। প্রতিরোধঃ ★ স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন ★ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন ★ ধূমপান ত্যাগ করুন ★ সুস্থ খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন ★ আঁশযুক্ত খাবার বেশি খান ★ সমস্যা কমাতে নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন ★ নিয়মিত ব্যায়াম করুন

পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

পায়ের গোড়ালি ব্যথা হওয়ার বেশ কয়েকটি কারন রয়েছে। শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে, গোড়ালির বায়োম্যাকানিক্স পরিবর্তন হলে কিংবা পায়ের কাফ মাসেল অস্বাভাবিক হলে গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। সাধারণত পায়ের গোড়ালির হাড়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে হিল স্পার সমস্যাটি হয়। এটি পায়ের গোড়ালির নিচে সফট টিস্যু/মাংসপেশিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে। ফলে হিল স্পার অর্থাৎ পায়ের গোড়ালির হাড় বৃদ্ধির রোগীদের তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এটিকে ক্লিনিক্যালি ক্যালকেনিয়াল স্পারও বলা হয়। এই সমস্যায় পায়ের ক্যালকেনিয়াস (Calcaneus) নামক হাড়ে খানিকটা বাড়তি হাড় তৈরি হয়, যার ফলে গোড়ালিতে ব্যথা করে। এ ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। মহিলাদের মধ্যে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়, তবে যে কেউই যেকোন বয়সে হিল স্পার তথা ক্যালকেনিয়াল স্পারের কারনে গোড়ালির ব্যথায় ভুগতে পারেন। আরেকটি সমস্যার কারনে গোড়ালিতে ব্যথা হতে পারে। এটিকে আমরা প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস বলি। প্ল্যানটার ফ্যাসা হচ্ছে মাংসপেশির নিচে অবস্থিত একটি ঝিল্লি। এটিতে প্রদাহজনিত কারনে ব্যথা হতে পারে। ঘুম থেকে ওঠার পর পা ফেললে পুরো পায়ের পাতা কিংবা গোড়ালিতে ব্যথা অনুভূত হয়। হিল স্পার/ গোড়ালি ব্যথার কারনসমূহঃ -অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ করলে -শক্ত জুতার পরিধান করা – দীর্ঘদিন পায়ের মাংসপেশিতে টান লেগে থাকলে – গোড়ালির মাংসপেশি ছিড়ে গেলে – উচ্চতার তুলনায় ওজন বেশি হলে -পায়ের জন্মগত/ গঠনগত কিছু সমস্যার কারনে -উঁচু হিল পরলে। গোড়ালি ব্যথার লক্ষণঃ – পায়ের গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা হবে – গোড়ালি ফুলে যায় – গোড়ালি লাল এবং গরম অনুভব হয় – হাঁটা বা দৌঁড়ানোর সময় ব্যথা বেড়ে যায় – ঘুম থেকে উঠার পর পায়ের গোড়ালিতে সুঁচ ফোটার মত তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় গোড়ালির ব্যথা এড়াতে করনীয়ঃ – স্বাভাবিকভাবে হাঁটা – শক্ত জায়গায় হাঁটা যাবেনা – শক্ত জুতা পায়ে দেয়া এড়াতে হবে – শরীরের ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে – ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে – এক পায়ে ভর দিয়ে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যাবেনা গোড়ালির ব্যথার চিকিৎসাঃ – নরম জুতা পরিধান করতে হবে। এমন জুতো ব্যবহার করতে হবে, যা গোড়ালিকে পায়ের আঙুলের থেকে কিছুটা উঁচুতে রাখবে। -ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। – গোড়ালির নিচে দিনে তিন/চারবার আইস প্যাক ব্যবহার করবেন অথবা কুসুম গরম পানি বালতিতে নিয়ে পা ভিজিয়ে রাখতে হবে – শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে – নরম ও আরামদায়ক ফ্ল্যাট স্যান্ডেল/ জুতো পরতে হবে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাঃ Calcaneal Spur বা পায়ের গোড়ালি ব্যাথায় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। গৎবাঁধা ফিজিওথেরাপি নয়, সিরিয়্যাক্স/ মালিগান ট্রিটমেন্ট কনসেপ্ট অনুযায়ী আধুনিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা খুব দ্রুত ও কার্যকরভাবে গোড়ালির ব্যথা উপশম করে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মধ্যে MWM(Mulligan Technique), MFR technique (Calf Muscle), Strengthening, Stretching ইত্যাদি খুবই কার্যকরী চিকিৎসা-পদ্ধতি। নিজস্ব (সেল্ফ) থেরাপিউটিক এক্সারসাইজঃ – একটি দেয়ালে দুই হাত দিয়ে দাঁড়াতে হবে, যেন একটি পা সামনে সামান্য ভাঁজ হয়ে থাকে এবং আর একটি পা পেছনে সোজা করে থাকে। পিঠ সোজা রাখতে হবে এক্ষেত্রে। এরপর পেছনের পা টানটান করে ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখতে হবে। এভাবে ৮ থেকে ১০ বার, দৈনিক ৩ বেলা। – সিঁড়িতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গোড়ালি সিড়ির বাইরের অংশে রাখতে হবে। এরপর শরীরের ভর পায়ের গোড়ালিতে রাখতে হবে। এভাবে ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রেখে দৈনিক ৮-১০ বার, দৈনিক ৩ বেলা। – দিনে অন্তত দুই বার ২০/৩০ বার মিনিট করে ‘টিপ টো’ ব্যায়াম করতে হবে। অর্থাৎ পায়ের আঙুলের উপর ভর দিয়ে গোড়ালি উঁচু করে দাঁড়িয়ে আবার ফ্লোরের সাথে ফ্ল্যাট করে দাঁড়াতে হবে। গোড়ালির ওপর চাপ কমাতে কিছু নিয়মকানুনঃ – ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পায়ের যেকোনো ব্যথা কমাতে এটি বেশ কার্যকর – উঁচু হিলের ও শক্ত সোলের জুতা পরিহার করতে হবে – নিচু বা মাঝারি হিলের জুতা ব্যবহার করতে হবে – উপরে উল্লেখিত পায়ের সেল্ফ স্ট্রেচিং ব্যায়াম নিয়মিতভাবে করতে হবে Built-in demo account helps users test strategies without real capital Trade Vector Ai App – এক পায়ে বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকার অভ্যাস পরিহার করুন