পাকস্থলীর জটিল রোগগুলোর মধ্যে পাইলস অন্যতম। রোগটি বিভিন্ন পর্যায় ভেদ করে জটিল আকার ধারন করে। সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেওয়া গেলে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
পাইলসের লক্ষণ ও করণীয় নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বৃহদান্ত ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ কে এম ফজলুল হক।
যখন পায়ুপথে এসব শিরার সংক্রমণ এবং প্রদাহ হয়, চাপ পড়ে তখন হেমোরয়েডস বা পাইলসে প্রদাহ হয়। যাকে সাধারণ ভাষায় অর্শরোগ বলা হয়।
হেমোরয়েডস বা অর্শরোগের অবস্থান সাধারণত তিন ধরনের যথা-
পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগ
পায়ুপথের অন্ত বা ভেতরের অর্শরোগ
আবার কখনও দুই অবস্থা একসঙ্গেও থাকতে পারে।
পায়ুপথের ভেতরের অর্শরোগ বা পাইলস ফুলে মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসাকে ৪টি পর্যায় ভাগ করা হয়।
প্রথম পর্যায় (পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে না বা প্রলেপস হয় না)
দ্বিতীয় পর্যায় (পায়খানার পর পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে এবং তারপর আপনা-আপনি ঠিক হয়ে যায়)
তৃতীয় পর্যায় (পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে এবং নিজে ঠিক করতে হয়)
চতুর্থ পযার্য় (পাইলস ফুলে বাইরে বের হয়ে আসে বা প্রলেপস হয়ে এবং তা আর নিজে ঠিক করা যায় না)
পাইলসের প্রধান কারণগুলো হচ্ছে দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিণ্যে ভোগা, পুরনো ডায়রিয়া, মলত্যাগে দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা ও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা। এছাড়া পারিবারিক ইতিহাস, আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া, ভারি মালপত্র বহন করা, স্থুলতা, কায়িক শ্রম কম করা। গর্ভকালীন সময়ে, পায়ুপথে যৌনক্রিয়া, যকৃত রোগ বা লিভার সিরোসিস ইত্যাদি কারণে রোগের আশংকা বেড়ে যায়। সর্বোপরি পোর্টাল ভেনাস সিস্টেমে কোনো ভাল্ব না থাকায় উপরিউক্ত যে কোনো কারণে পায়ু অঞ্চলে শিরাগুলোতে চাপ ফলে পাইলস সৃষ্টি হয়।
অর্শরোগে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তা হচ্ছে- পায়ুপথের অন্ত্র বা ভেতরের অর্শরোগে সাধারণত তেমন কোনো ব্যথা বেদনা, অস্বস্তি থাকে না, অন্যদিকে পায়ুপথের বহিঃঅর্শরোগে পায়ুপথ চুলকায়, বসলে ব্যথা করে, পায়খানার সঙ্গে টকটকে লাল রক্ত দেখা যায় বা শৌচ করা টিস্যুতে তাজা রক্ত লেগে থাকে, মলত্যাগে ব্যথা লাগা, পায়ুর চারপাশে এক বা একের অধিক থোকা থোকা ফোলা থাকে।