প্রথমে হালকা কাশি, সামান্য শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ অনুভব—এসব লক্ষণকে অনেকেই সাধারণ সর্দি-কাশি বা অ্যালার্জি ভেবে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এ ধরনের উপসর্গ ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা সিওপিডির লক্ষণও হতে পারে, যা ‘আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন’–এর ভাষায় এক ধরনের ‘স্মোকিং ডিজিজ’। সাম্প্রতিক সময়ে এই রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, আর এর জন্য ধূমপানের পাশাপাশি বড় ভূমিকা রাখছে পরিবেশ দূষণ।
আইসিএমআর-এর সমীক্ষা বলছে, বাতাসে দূষণবাহী কণার মাত্রা এখন আগের তুলনায় বহুগুণ বেশি।
এই কণা শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে সুস্থ কোষ নষ্ট করছে, ফলে প্রদাহ, শুকনো কাশি, অ্যালার্জি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে। সিওপিডি এমন একটি অবস্থা যেখানে ফুসফুসে অক্সিজেন ঢোকার পথ সংকুচিত হয়ে যায় এবং শরীরে কার্বন–ডাই-অক্সাইড জমতে থাকে। তাই রোগীরা তীব্র শ্বাসকষ্টে ভোগেন এবং ইনহেলার বা অক্সিজেন সাপোর্ট ব্যবহার করতে হয় নিয়মিত।
বর্তমান দূষিত পরিবেশে রাস্তায় বেরোলেই ধুলো, যানবাহনের ধোঁয়া, কলকারখানার ধোঁয়া—সব মিলিয়ে রোগীদের অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে।
তাই রোগীদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্ত রাখা ও পরিবেশগত ঝুঁকি এড়িয়ে চলাই সবচেয়ে জরুরি।
যে লক্ষণগুলো দেখলে সতর্ক হবেন
১) ক্রমাগত কাশি, বিশেষ করে রাতে কাশির জন্য ঘুম ভেঙে যাওয়া।
২) সিঁড়ি ওঠা–নামার সময় বুকে চাপ বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
৩) মাঝেমধ্যে তীব্র শ্বাসকষ্ট, বুকে ঘন ঘন কফ জমা।
৪) সর্দি–কাশি ও জ্বর বারবার হওয়া, রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়া।
৫) শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যাওয়া, ঝিমুনি লাগা।
যা যা নিয়ম মেনে চলবেন
১। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও হালকা ব্যায়াম করুন – ব্রিদিং এক্সারসাইজ বিশেষভাবে উপকারী।
২। পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট খান – ভাত, রুটি, আলু, শস্যদানা রাখুন খাদ্যতালিকায়।
৩। সকালের নাশতায় ওটস বা ডালিয়া খেতে পারেন।
৪। আমলকি প্রতিদিন খাওয়া উপকারী – ভিটামিন সি ফুসফুস পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
৫। প্রোটিন ও ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন – রঙিন সবজি, ফল, শুকনো ফল, বাদাম।
৬। ধুলা–ধোঁয়া এড়িয়ে চলুন ও মাস্ক ব্যবহার করুন।
৭। ধূমপান সম্পূর্ণ বন্ধ করুন – আশপাশে কেউ ধূমপান করলে সেখান থেকেও দূরে সরে যান।

Leave a Reply